বানান আসরে আপনাদের জানাই সাদর সম্ভাষণ।
বানানের দুশ্চিন্তায় নাকি অনেকেই বাংলা ছেড়ে দিতে চাচ্ছেন, সত্যি কি তাই? আসলে বানান কি অত কঠিন? নাকি বসে বসে বানান মুখস্ত করতে হয়?
নাহ, ব্যাপারটা তত মারাত্মক নয়। যদিও বানান এক সময় অসংখ্য নিয়ম কানুনের বেড়াজালে বাঁধা ছিল। তখন হয়তো কঠিন বলা যেত। এখন অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছে। বাংলা একাডেমীর প্রমিত বানানরীতি সহজীকরণের একটা অংশ। তবে একদল লোক আছেন যারা এর চেয়েও বেশি সহজীকরণ চান, আমরা আপাতত তাদের পক্ষে নই। আমরা আমাদের এ আসরে বাংলা একাডেমীকে অনুসরণ করবো।
আসলে বানান নিয়ে এত ভয়ের কোন কারণ নেই। বিশিষ্ট লেখক, শিক্ষাবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর কথাই ধরা যাক। তিনি বলেছেন, বানান নিয়ে বিশৃঙ্খলার মূলে রয়েছে আমাদের অনুশীলনের অভাব। চর্চার মাধ্যমেই শুদ্ধ বানান আয়ত্ত করা সম্ভব।
প্রকৃতপক্ষে আমাদের এ আসরের মূল লক্ষ্যই হলো বানান চর্চা করা। অর্থাৎ আমরা প্রতিটি আসরে কিছু নিয়ম আলোচনা করবো, তারপর সেগুলোর অনুশীলন করবো। এতে আমাদের বানানের দুর্বলতা দূর হবে, শুদ্ধ বানানে লিখতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠবো।
বাংলা বানান এখনও বহুলাংশে ব্যাকরণ-অনুসারী। আর আমরা রোগাক্রান্ত ব্যক্তির ন্যায় ব্যাকরণাতঙ্কিত। আসুন এ আতঙ্ক দূর করতে আমরা প্রতি আসরে বাংলা বানানের এক-একটি নিয়ম উদ্ঘাটন করি।
বাংলায় বানান ভুলের যে শংকা নিয়ত আমাদের তাড়া করে তা একটু সংখ্যামানে ধরে দেখা যাক। ই/ঈ, /ি ী জনিত বানানে ভুলের আশংকা ৮.১% শতাংশ, তেমনি উ/ঊ, ু / ূ ভুল= ২.৩%, ণ/ন ভুল=৫.৪%, জ/ঝ/য ভুল=২.২, শ/ষ/স ভুল=৪% শতাংশ।
প্রথমে কোন্ নিয়ম বেছে নিবো? ব্যবহারের আধিক্যের কারণে প্রথমেই ই-কারের হ্রস্ব ও দীর্ঘকরণ- কখন কোথায় কী হবে তা জেনে নেই।
প্রথমেই বলে নেই, একদল আছেন যাঁরা বাংলা বানান সহজীকরণের বিপক্ষে। এক্ষেত্রে তাঁরা কোনো নিয়ম বা সূত্র আরোপের বিরোধী। আরেকদল আছেন যাঁরা সহজীকরণের নামে সর্বত্র ই-কার প্রবর্তনের পক্ষে। আর আমরা (বাংলা একাডেমীর প্রমিত বানানরীতি) উভয়ের মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছি।
এবার দেখা যাক বাংলা একাডেমীর প্রমিত বানানরীতি এ ব্যাপারে কী বলছে?
বাংলা ভাষার তৎসম ও অ-তৎসম শব্দের বানানরীতিতে পার্থক্য রয়েছে। তৎসম শব্দের বানান সংস্কৃত ব্যাকরণের অনুসারী, যৎসামান্য পরিবর্তন ছাড়া এখানে হস্তক্ষেপ করা হয় নি। এই তৎসম শব্দের বানান নিয়েই যত সমস্যা তৈরি হয় এবং বাংলা বানান অনেকের কাছেই জটিল ও দুরূহ ঠেকে। তাই কিছু নিয়ম মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে। ফলে বানান সহজ হবে, অথচ ব্যাকরণও আহত হবে না।
নিয়ম ১. ই-কার/ঈ-কার (ি / ী)
ই-কার ব্যবহৃত হবে
ক. যেসব তৎসম (বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত অবিকৃত সংস্কৃত) শব্দে ই-কার বা ঈ-কার দুটোই শুদ্ধ এবং প্রচলিত, বানানের সমতাবিধানের লক্ষ্যে সেইসব শব্দে কেবল ই এবং তার কার চিহ্ন ( ি ) ব্যবহৃত হবে।
যেমন : কিংবদন্তি, খঞ্জনি, চিৎকার, ধমনি, পঞ্জি, ধূলি, পদবি, ভঙ্গি, মঞ্জরি, মসি, লহরি, সরণি, সূচিপত্র ইত্যাদি।
খ. সকল অ-তৎসম অর্থাৎ তদ্ভব, দেশি, বিদেশি, মিশ্র শব্দে কেবল ই এবং এদের-কার চিহ্ন ই-কার ব্যবহৃত হবে। যেমন : গাড়ি, চুরি, দাড়ি, বাড়ি, ভারি (অত্যন্ত অর্থে), শাড়ি, তরকারি, ছুরি, টুপি, সরকারি, মাস্টারি, মালি, পাগলামি, পাগলি, দিঘি, বোমাবাজি, দাবি, হাতি, বেশি, খুশি, সিঙ্গি, কেরামতি, রেশমি, পশমি, পাখি, ফরিয়াদি, আসামি, বে-আইনি, ছড়ি, কুমির, নিচ, নিচু ইত্যাদি।
এমনকি স্ত্রীবাচক, ভাষা ও জাতিবাচক ইত্যাদি শব্দের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে । অর্থাৎই ও এর কার-চিহ্ন ই-কার ব্যবহৃত হবে। যেমন— হিজরি, আরবি, ফারসি, ফরাসি, বাঙালি/বাঙ্গালি, ইংরেজি, জাপানি, জার্মানি, ইরানি, হিন্দি, সিন্ধি, ফিরিঙ্গি, নানি, দাদি, বিবি, মামি, চাচি, মাসি, পিসি, দিদি, ইত্যাদি।
ব্যতিক্রম : বহুল ব্যবহারের কারণে আরবি শব্দ ঈদ, ঈমান ঠিক থাকবে।
গ. অনুরূপভাবে- আলি বা আবলি প্রত্যয়যুক্ত শব্দে ই-কার হবে। যেমন : খেয়ালি, বর্ণালি, মিতালি, হেঁয়ালি, রূপালি, সোনালি, দৃশ্যাবলি, গ্রন্থাবলি, সূত্রাবলি ইত্যাদি।
ঘ. পদাশ্রিত নির্দেশক টি-তে ই-কার হবে। যেমন : ছেলেটি, লোকটি, বইটি।
ঈ-কার (ী) ব্যবহৃত হবে
অনেক তৎসম শব্দেই শুধুমাত্র ঈ-কার (ী) শুদ্ধ। এসব শব্দের বানান ও ব্যাকরণগত প্রকরণ ও পদ্ধতি নির্দিষ্ট রয়েছে, তাই এইসব শব্দের বানান যথাযথ ও অপরিবর্তিত থাকবে। কখন ঈ-কার ব্যবহৃত হবে তার কিছু নিয়ম নিচে বর্ণনা করছি।
ক. তৎসম শব্দ যদি বিশেষণ হয় তাহলে বানানের অন্তে ঈ-কার হবে। যেমন- উপকারী, জয়ী, আগামী, আইনজীবী, কর্মচারী, যুদ্ধাপরাধী, প্রবাসী, বিদ্যোৎসাহী, বিধর্মী, তপস্বী, প্রতিবাদী, আত্মীয়, অর্ধাঙ্গিনী ইত্যাদি।
মনে রাখতে হবে যে ঈ-কারান্ত বিশেষণবাচক পদের শেষে তা ও ত্ব প্রত্যয় যুক্ত হয়ে বিশেষ্য-এ পরিণত হয়। তখন পদ পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে ঈ-কার ই-কার-এ রূপ নিবে। যেমন-
উপকারী+তা = উপকারিতা
সহযোগী+তা = সহযোগিতা
প্রতিযোগী+তা = প্রতিযোগিতা
কৃতী+ত্ব = কৃতিত্ব
দায়ী+ত্ব = দায়িত্ব
মন্ত্রী+ত্ব = মন্ত্রিত্ব
খ. বাংলা ভাষায় যে কোনো ধরনের শব্দ অর্থাৎ তৎসম, তদ্ভব, দেশি, বিদেশি, মিশ্র শব্দের শেষে ঈয় প্রত্যয় যুক্ত হয়ে বিশেষণ-এ রূপ নিলে তখনও ঈ-কার হবে। যেমন-
নাটক+ঈয়= নাটকীয়, মানব+ঈয়= মানবীয়,
ধর্ম+ঈয়= ধর্মীয়, রোবট+ঈয়= রোবটীয়,
আচরণ+ঈয়= আচরণীয়, নিন্দন+ঈয়= নিন্দনীয়।
গ. ব্যক্তির '-কারী'-তে (আরী) ঈ-কার হবে। যেমন— সহকারী, আবেদনকারী, ছিনতাইকারী, পথচারী, কর্মচারী ইত্যাদি। ব্যক্তির '-কারী' নয়, এমন শব্দে ই-কার হবে। যেমন— সরকারি, দরকারি ইত্যাদি।
২. ঈ-কার যেভাবে ই-কারে পরিণত হয়
সংস্কৃত ব্যাকরণ অনুযায়ী এই পরিবর্তন হতে পারে।
সমাসবদ্ধ হওয়ার কারণে শব্দ শেষের ঈ-কার পরিবর্তিত হয়ে ই-কার হবে। যেমন : প্রাণীদের নিয়ে যে জগৎ = প্রাণিজগৎ। সমাসবদ্ধ হওয়ার সময় প্রাণী শব্দের ঈ-কার পরিবর্তিত হয়ে ই-কারে পরিণত হয়েছে। তেমনি প্রাণিবিদ্যা, প্রাণিসম্পদ, মন্ত্রিসভা, মন্ত্রিপরিষদ ইত্যাদি।
শব্দের শেষে ঈ-কার থাকলে সংস্কৃত –গণ বিভক্তি যুক্ত হলে ই-কার হয়। যেমন : মন্ত্রী+গণ= মন্ত্রিগণ। মন্ত্রী শব্দের সাথে সংস্কৃত গণ বিভক্তি যুক্ত হওয়ায় মন্ত্রী শব্দের ঈ-কার ই-কারে পরিণত হয়েছে। তেমনি সহকারী>সহকারিগণ, কর্মচারী>কর্মচারিগণ, কর্মী>কর্মিগণ, আবেদনকারী>আবেদনকারিগণ ইত্যাদি।
কিন্তু বাংলা -রা বিভক্তি যুক্ত হলে ঈ-কার ঠিক থাকবে। যেমন : মন্ত্রী+রা= মন্ত্রীরা। মন্ত্রী শব্দের সাথে বাংলা -রা বিভক্তি যুক্ত হওয়ায় মন্ত্রীরা বানানে কারের পরিবর্তন হয় নি। তেমনি কর্মীরা, কর্মচারীরা, সহকারীরা ইত্যাদি।
৩. কী/কি
‘তুমি কি জানো সে আমার কত প্রিয়’ আর ‘তুমি কী জানো সে আমার কত প্রিয়’, এই দুই বাক্যের একটাতে জানা সম্বন্ধে প্রশ্ন করা হচ্ছে আর একটাতে সন্দেহ প্রকাশ করা হচ্ছে জানার প্রকৃতি বা পরিমাণ সম্বন্ধে, এখানে বানানের তফাত না থাকলে ভাবের তফাত নিশ্চিতরূপে আন্দাজ করা যায় না।-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
সত্যিই তাই। কোথায় কি লিখব আর কোথায় কী লিখব তা নিয়ে কমবেশি অনেকেই সন্দেহে ভোগেন। তাহলে আসুন জেনে নেই কী/কি-এর ব্যবহার-
সর্বনাম, বিশেষণ ও ক্রিয়া-বিশেষণ রূপে স্বতন্ত্র পদ হিসেবে ব্যবহৃত হলে ঈ-কার বসবে। যেমন
কী পড়? (বইটি পড়)-সর্বনাম
কী খাবে? (কোন খাবারটি খাবে)-সর্বনাম
কী জানি? ("কোন বিষয়টি জানি)-সর্বনাম
এটা কী বই? (এটা কোন রকমের বা কোন বিষয়ের বই)-সর্বনাম
পরীক্ষায় সাফল্যের উপায় কী? (পরীক্ষায় সাফল্যের কোন কোন উপায় আছে)-সর্বনাম
কী আর বলব? (আর কোন কথাটি বলব)-সর্বনাম
কী আনন্দ! (কত আনন্দ)-বিশেষণ
কী বুদ্ধি নিয়ে এসেছিলে? (কেমন বুদ্ধি নিয়ে এসেছিলে)-বিশেষণ
ছবিটা কী রকম লাগল? (ছবিটা কেমন লাগল)-ক্রিয়া-বিশেষণ
কী করে এ কথা বললে! (কেমন করে এ কথা বললে)-ক্রিয়া-বিশেষণ
অব্যয় পদরূপে ব্যবহৃত হলে কি শব্দটি ই-কার দিয়ে লেখা হবে। যেমন
তুমিও কি যাবে? (প্রশ্নবোধক, উত্তর হবে হ্যাঁ/না বোধক)
সে কি আসলেই আসবে? (সংশয়সূচক, উত্তর হবে হ্যাঁ/না বোধক)
কি বাংলা কি ইংরেজি উভয় ভাষায় তিনি পারদর্শী। (বাংলা অথবা ইংরেজি উভয় ভাষায় তিনি পারদর্শী)
কি শীত কি গ্রীষ্ম তার সর্দি লেগেই থাকে। (শীত কিংবা গ্রীষ্ম তার সর্দি লেগেই থাকে)
বেটা নবাব আর কি! (প্রায় তদ্রূপ অর্থে)
বল কি! তার এ কাজ? (বিস্ময় প্রকাশক উক্তি)
বলতে কি, ভুত আমিও ভয় পাই। (সত্য বলতে হলে)
কত কি দেখব কালে কালে! (বহু কিছু বা নানা কিছু অর্থে)
লক্ষ্য করুন ওপরের প্রতিটি বাক্যে কি অব্যয় পদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। প্রথম দুটো লাইনে
কি-এর উত্তর হবে হ্যাঁ অথবা না বোধক। হ্যাঁ এবং না অব্যয় পদ। পরের দুটি বাক্যে
কি অথবা/কিংবা বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে। অথবা/কিংবা অব্যয় পদ। বল কি, আর কি, বলতে কি, কত কি-এগুলো সবই অব্যয় পদ।
৪. কি না/ কিনা/কি-না
কি-না : অশুদ্ধ। ব্যবহার করা যাবে না।
কি না : ক. সন্দেহসূচক অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন : টাকা দেবে কি না জানি না।
খ. বিতর্কসূচক অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন- আমার লেখায় কোনো ভুল আছে কি না বলো?
গ. প্রশ্নবোধক অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন : তুমি যাবে কি না?
কিনা : ক. এই কারণে বা যেহেতু অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন : অসুস্থ কিনা তাই আসে নি।
খ. অর্থাৎ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। যেমন : হ্রী কিনা লজ্জা।
গ. বাক্যালঙ্কার (বাক্যে যা না থাকলেও অর্থ পরিবর্তন হয় না) হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যেমন : আর তুমি কিনা ঘরের ভেতর গিয়ে বসে আছো (এখানে কিনা শব্দটি ছাড়াও বাক্যের অর্থ একই থাকে)।
৫. এমনকি/এমন কী
এমনকি-অধিকন্তু বা আরও অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন- এমনকি তার বইও চুরি হয়েছে।
এমন কী-সর্বনাম, বিশেষণ ও ক্রিয়া-বিশেষণ রূপে স্বতন্ত্র পদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যেমন : এমন কী ক্ষতি হয়েছে তোমার! (তোমার কতখানি ক্ষতি হয়েছে)-এখানে এমন কী একটিই পদ, ব্যবহৃত হয়েছে বিশেষণ হিসেবে।
লক্ষ্যণীয় যে, লেখার সময় তৎসম শব্দগুলোর ব্যাপারে একটু বাড়তি দৃষ্টি দিলেই হয়ে যাচ্ছে। আর সংস্কৃত ভাষার তো মৃত্যু হয়েছে, নতুন আর কোনো তৎসম শব্দ যোগ হবে না বাংলা ভাষায়! যেগুলো আছে সেগুলো আয়ত্ত করার জন্য খুব অল্প স্মরণশক্তিই যথেষ্ট।
অনুশীলনী
১. রাস্তা অর্থে কোন্ শব্দটি শুদ্ধ : ক. সরণী, খ. স্বরণি, গ. সরণি, ঘ. স্বরণী।
২. গাড়ি, চুরি, দাড়ি, বাড়ি, শাড়ি, তরকারি, বোমাবাজি, দাবি, হাতি, বেশি, নানি, দাদি, মামি, চাচি, বাঙালি, ইংরেজি ইত্যাদি শব্দগুলোতে ই-কার ব্যবহৃত হয়েছে, কেন?
ক. তৎসম শব্দ বলে, খ. স্ত্রীবাচক শব্দ বলে, গ. বিদেশি শব্দ বলে, ঘ. অ-তৎসম (তদ্ভব, দেশি, বিদেশি, মিশ্র শব্দ) এবং স্ত্রীবাচক ও জাতিবাচক শব্দ বলে।
৩. খেয়ালি, বর্ণালি, মিতালি, হেঁয়ালি, রূপালি, সোনালি শব্দগুলোতে ই-কার হয়েছে, কারণ-
ক. আলী প্রত্যয়যুক্ত হয়েছে, খ. আলি প্রত্যয়যুক্ত হয়েছে, গ. আবলি প্রত্যয়যুক্ত হয়েছে, ঘ. আবলী প্রত্যয়যুক্ত হয়েছে।
৪. কোন্ শব্দগুলো শুদ্ধ? শুদ্ধ শব্দগুলো একদিকে এবং অশুদ্ধ শব্দগুলোকে শুদ্ধ করে অপরদিকে লিখুন-
উপকারী, দায়ীত্ব, সহযোগিতা, জয়ি, আগামি, আইনজীবি, কর্মচারী, উপকারীতা, যুদ্ধাপরাধী, প্রবাসি, প্রতিযোগিতা, বিদ্যোৎসাহি, বিধর্মী, তপস্বী, প্রতিবাদি, আত্মীয়, কৃতিত্ব, অর্ধাঙ্গিনি।
৫. বিদেশি শব্দটির সঠিক বানান কোনটি এবং কেন -
ক. রোবটীয় : কারণ শব্দের শেষে ঈয় প্রত্যয় যুক্ত হয়ে বিশেষণ-এ রূপ নিয়েছে।
খ. রোবটিয় : কারণ শব্দের শেষে ইয় প্রত্যয় যুক্ত হয়ে বিশেষণ-এ রূপ নিয়েছে।
৬. কখন 'কী' হবে?
ক. অব্যয় পদরূপে ব্যবহৃত হলে।
খ. যখন উত্তর হবে হ্যাঁ অথবা না বোধক।
গ. যখন অথবা/কিংবা অর্থ প্রকাশ করবে।
ঘ. সর্বনাম, বিশেষণ ও ক্রিয়া-বিশেষণ রূপে স্বতন্ত্র পদ হিসেবে ব্যবহৃত হলে।
৭. অশুদ্ধ হলে শুদ্ধ করে লিখুন-
কী আনন্দ!
বল কী! তার এ কাজ?
কি করে এ কথা বললে!
বেটা নবাব আর কী!
তুমিও কি যাবে?
কী আর বলব?
পরীক্ষায় সাফল্যের উপায় কি?
কি শীত কী গ্রীষ্ম তার সর্দি লেগেই থাকে।
৮. বাক্যগুলোতে কোন ভুল থাকলে শুদ্ধ করে লিখুন-
আমার লেখায় কোনো ভুল আছে কি না বলো? তুমি যাবে কিনা? টাকা দেবে কিনা জানি না। জ্বর হয়েছে কি না তাই আসে নি। আর মা কি না ঘরের ভেতর গিয়ে বসে আছে।
৯. নিচের বাক্যগুলোতে সঠিকভাবে এমনকি অথবা এমন কী বসান-
........ তার বইও চুরি হয়েছে। তুমি ক্লাসে গেলে ...... সমস্যা হতো তোমার! ...... ক্ষতি হয়েছে তোমার! ....... আমি বাড়িতেও গিয়েছিলাম।
১০. কোন্ বানানগুলো সঠিক- প্রাণীজগৎ, প্রাণিজগৎ, প্রাণিজগত, মন্ত্রিগণ, মন্ত্রীগণ, মন্ত্রিগন, মন্ত্রীরা, মন্ত্রিরা?
বিশেষ অনুরোধ :
অবশেষে বানান আসরের যাত্রা শুরু হলো। চেষ্টা করেছি সহজভাবে বানানের একেকটি নিয়ম তুলে ধরতে। সাথে অনুশীলনীও দিয়েছি। অনুশীলনী আপনারা নিজে নিজে চর্চা করতে পারেন। ইচ্ছা করলে মন্তব্যেও উত্তরগুলো দিতে পারেন।
আশা করবো সামু কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব বিবেচনা করে এ পোস্টগুলো স্টিকি করবেন এবং শুদ্ধ বাংলা বানান লেখায় সবাইকে উৎসাহিত করতে এগিয়ে আসবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




