কবির চেয়ে শক্তিধর
কবির চেয়ে শক্তিধর পৃথিবীতে কে আছে আর ?
রাজাবাদশার কথা বলো—ওঁদের ক্ষমতা আপেক্ষিক।
বসন্তের কোকিলের মতোন বৈশাখীর ঝড়ো-হাওয়ায় নিরুদ্দেশ
কিংবা দিনের আলোয় যেমন রাত্রি পালায়,
কিংবা রাত্রির আঁধার জেঁকে বসলে দিন ডুবে যায়
যেমন অথই অন্ধকারে;
কিন্তু কবির কবিতা জেগে থাকে কালান্তরে—চেতনায়—ফল্গুধারায়।
কবির কবিতা জেগে থাকে রক্তকণিকায়, প্রজনন আর ভ্রুণে
কথার স্বরে—ব্যঞ্জনায়—পঙক্তির প্লাবনে।
দেখো না এখনো মুখে মুখে,
‘আপণা মাংসে হরিণা বৈরী’,
‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে,
‘পিঁপড়ার পাখা ওড়ে মরিবার তরে’,
‘স্বাধীনতাহীনতায় কে বাঁচিতে কে বাঁচিতে চায় হে, কে বাঁচিতে চায়’,
‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে’,
কিংবা ‘বল বীর, বল চির উন্নত মম শীর’
‘ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি’
‘অদ্ভুত আঁধার এক পৃথিবীতে এসেছে নামি’,
অথবা
এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম।
কবির কবিতার চেয়ে ক্ষেপনাস্ত্র আর একটিও নেই।
কবির চেয়ে শক্তিধর আর কেউ নেই।
কবির কবিতা জেগে থাকে, মেঘের জলকণায়, মৃত্তিকার ধূলোয়
ভস্ম করতে পারো কি ? যে আগুন জ্বালাও তুমি চুলোয় ?
কবির চেয়ে শক্তিধর আর কেউ নেই,
কবিতার চেয়ে মারণাস্ত্র তুমি আর কোথাও পাবে না!