
এক সময় ব্রিটিশরা বিশ্ব শাসন করেছে । বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম শাসনের অবসান ঘটিয়ে সেখানে তাদের শাসন কায়েম করা ছিলো অনেক চ্যালেঞ্জের ব্যাপার । এ ক্ষেত্রে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ ছিলো মুসলিম শাসক নয় ফরাসীরা । সেই কাজটাই অত্যন্ত নিপুণ দক্ষতার সঙ্গে করেছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হর্তাকর্তারা । আর এ কাজে তাদের সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে , ভারতীয় উপমহাদেশে বসবাস করা হিন্দু পূজারী ও বণিক শ্রেণী । মুসলিমরা যখন, নিজেদের অস্তীরের জন্য ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়ছিল হিন্দুরা তখন ইংরেজদের সান্নিধ্য লাভে সচেষ্ট ছিল । সাধারণ হিন্দুরা কিন্তু এসব চক্রান্ত থেকে দূরে ছিলো । বিনিময়ে তাদের প্রত্যাশা ছিলো, ইংরেজ প্রভুদের করুণা, দয়া,দাক্ষিণ্য ও সুদৃষ্টি । এখানে, কথা প্রসঙ্গে বলি, "দুর্গা পূজার সূচনা কিন্তু তখন থেকেই শুরু । " নিজেদের পাপ কাজে সাধারণ হিন্দুদে'র সম্পৃক্ত করাই ছিলো দুর্গা পূজা আয়োজন করার মূল উদ্দেশ্য । ধর্মের নামে সব চলে । এটা পূজারী ও ইংরেজ প্রভুরা খুব ভাল করে জানতেন ।
ভারতীয় উপমহাদেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এতোটা সাফল্য তৎকালীন ইংল্যান্ডের ক্ষমতায় থাকা রাজা,রাণী বা শাসন ক্ষমতায় থাকা কর্তারা আশা করেনি । কিন্তু ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে লুটতরাজের ফলে সম্পদে পাহাড় দেখে তাদের লোভ বেড়ে যায় । ধীরে ধীরে ইংল্যান্ডের রাজনীতিতে ভারতীয় উপমহাদেশে শাসন টিকিয়ে রাখা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে । এর ফলে ইংল্যান্ডের জৌলুস বেড়ে যায় । ভারতীয় উপমহাদেশে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে বাণিজ্য করার অনুমতি দেওয়ার কারণে, ইংল্যান্ডের শাসন ব্যবস্থায় রাণীর গুরুত্ব বৃদ্ধি পায় । রাণীর প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরূপ রানীর মুকুটে উঠে আসে, ভারত থেকে লুট করে নিয়ে যাওয়া মুসলিমদের সর্ম্পদ মহামূল্যবান হিরা কহিনুর ।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কিন্তু কোন রাজনৈতিক দল ছিলো না । সেটি ছিলো, ব্রিটিশ ব্যবসায়ী কর্তৃক পরিচালিত একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মাত্র । ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতীয় উপমহাদেশে বাণিজ্য করার জন্য ষোড়শ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত একটি জয়েন্ট-স্টক কোম্পানির নাম । যার সরকারি নাম "ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি"।
ইংল্যান্ডের তৎকালীন রাণী প্রথম এলিজাবেথ এই কোম্পানিকে ভারতীয় উপমহাদেশে বাণিজ্য করার রাজকীয় সনদ বা অনুমতি প্রদান করেছিলেন ১৬০০ সালের ৩১ ডিসেম্বর। যারা আন্ত:জাতিক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলো । যাদের মূল কাজ ছিলো, অন্যান্য দেশ থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য এনে ইংল্যান্ডে বিক্রি করা । অর্থাৎ এক কথায় সাপলাইয়ার ।

কিন্তু ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যবসা করার অনুমতি পেয়ে, মুসলিম শাসকদের উদারতা,দুর্বলতা, মুসলিম ও হিন্দুদের কর্মচারীদের বিশ্বাস ঘাতকতার ফলে , ভারতীয় উপমহাদেশকে তারা দু'শো বছর গোলাম বানিয়ে ফেলতে স্বক্ষম হয় ।
এতো কিছুর পর কিন্তু ইংল্যান্ড এই উপমহাদেশকে তারা নিজেদের সাথে অন্ত:ভুক্ত করেনি । তার কারণ ছিলো , গোলাম'দের কখনো তারা নিজেদের জাতে উঠতে দিতে চায়'নি । তাই যতো দিন পেড়েছে, শাসন করে শুষে খেয়ে । এক প্রকার বিনা রক্ত পাতে ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে ।
দিনে দিনে পানি অনেক, গড়িয়েছে । গোলামেরা ইংল্যান্ডে পাড়ি দিয়েছে। ফুট,ফরমাশ খেটে, খুটে অড জব করে । নিজেদের কমিউনিটিতে ছেলে, মেয়ে জন্ম দিয়ে সে দেশে স্থায়ী হয়েছে ।
জেনারেশনের পর জেনারেশনে ইংরেজদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন এসেছে । ধীরে ধীরে সেই গোলামেরা নিজেদের যোগ্যতা , মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে ইংল্যান্ডের মূল রাজনীতিতে ঢুকে পরেছে । বৈষম্য কিন্তু মরে যায়নি এখনো আছে ।
এই গোলাম বলতে কিন্তু শুধু ভারতীয় উপমহাদেশ নয় এশিয়া, আফ্রিকা , মধ্যপ্রাচ্য অর্থাৎ যেখানে যেখানে ইংরেজদের শাসন ব্যবস্থা কায়েম ছিলো সেখানকার নেটিভদেরকেই বুঝানো হতো ।
এবার সেই গোলামেরা বসেছে ইংল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীর পদে । যার পিতা শুনেছি, জন্মেছেন কেনিয়ায়, মা ছিলেন নাকি পাকিস্তানী । কিন্তু উনি আবার নামে ঋষি । দেখা যাক গোলামদের শাসন ইংল্যান্ডে কতদিন টিকে । কিংবা গোলামদের শাসনে প্রভুদের প্রতিক্রিয়া ক্যামন হয় ।
সাখাওয়াত বাবনে'র ব্লগাংশ
২৫।১০।২২
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:১২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




