গতকাল ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে যৌন হয়রানীর শিকার হয়েছে এক রাশিয়ান শিশু। অভিযোগ পাওয়ার পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত গ্রেফতার করেছে নির্যাতনকারীকে । বলতে পারেন, শিশুরা কোথায় নিরাপদ ?
রাজধানীতে শিশু হত্যা ও নির্যাতন একটি নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে । প্রায়:শই দৈনিকগুলোতে গৃহকর্মী হত্যা ও নির্যাতনে বীভৎস বর্ণনা পড়ে চমকে উঠতে হয়। আধুনিক জীবনের গড্ডালিকায় শরীর ভাসিয়ে দেওয়া কিছু মানুষের কাছে মধ্যযুগীয় কায়কায় শিশু নির্যাতন যেন কোন ব্যাপার ই না ।
অভাবের তাড়নায় পেটের টানে আলোকোজ্জ্বল শহরে কাজের সন্ধানে আসা এসব শিশুদের উপর পান থেকে চুন খসলে শরীরে গরম খুন্তি দিয়ে ছেঁকা দেওয়া, লাঠি দিয়ে পেটানো , কথায় কথায় চড় থাপ্পড় মারা। অভুক্ত রেখে বাথরুমে আটকে রাখা । সেই সাথে আছে যৌন নির্যাতন ।
শরীর হিম করা এসব ঘটনার বর্ণনা প্রায়ই সংবাদপত্রগুলোতে দেখতে পাওয়া যায় । অবাক করার বিষয় হচ্ছে যারা এসব নির্যাতনের সাথে জড়িত তারা সবাই উচ্চ শিক্ষিত, সমাজে প্রতিষ্ঠিত । মানুষরূপী এসব পিশাচদের তালিকায় কারা নেই ? ক্রিকেটার থেকে শুরু করে সমাজসেবী, সাংবাদিক, চাকরিজীবী,ব্যবসায়ী আছে নানা পেশার মানুষ । হঠাৎ করে ধনী হওয়া এসব এলিটদের স্ত্রী'রা একদিকে যেমন গৃহকর্মী, শিশুদের নির্যাতন করে অন্যদিকে তেমনি মুখে স্নো পাউডার মেখে সমাজ সেবার নামে টো টো করে ঘুরে বাড়ায়, রাতে ব্যস্ত সময় কাটায় ফেসবুক, স্যোশাল মিডিয়াসহ নানা ডিজে পার্টিতে । এদের নামের পাশে জ্বলজ্বল করে সমাজ কর্মী কিংবা রাজনৈতিক ব্যানার ।
দেশে শিশু শ্রম নিষিদ্ধ হলেও খোদ রাজধানীতেই শিশুরা নিরাপদ নয় ।
সম্প্রতি ঢাকার মোহাম্মদপুরে "প্রীতি" নামের এক গৃহকর্মী শিশু নির্যাতন থেকে বাচার জন্য ছাদ থেকে লাফিয়ে পরে মারা গিয়েছে । এ সময় তার নিম্ন অংশে (পড়নে) কোন কাপড় ছিলো না । সহজেই অনুমেয় হয় যে, "মেয়েটি কোন অবস্থায় কি পরিস্থিতিতে লাফিয়ে পরে বাচতে চেয়েছিলো । "
শুনে আশ্চর্য হবেন , যে মানুষরূপী পিশাচের বাসায় মেয়েটি কাজ করতো , সে আর কেউ না , ডেইলি স্টার এর নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক। শুধু কি তাই? তার বাসা থেকে আরো দু'জন গৃহকর্মী একই ভাবে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে । সৈয়দ আশফাকুল হক যার নামের অর্থ শ্রেষ্ঠ । তিনি সত্যিই শ্রেষ্ঠ হয়ে উঠেছেন, শিশু ও নারী নির্যাতন । পরপর দুটো ঘটনা ঘটলেও ক্ষমতা ও অর্থের জোরে সে বারবার বের হয়ে এসেছে । এসে আবার সেই একই কাজ করছে ।
কথা হচ্ছে, প্রমাণিত হওয়ার আগে (ধর্ষক) না হয়, নাই বললাম । আমি ভেবে পাই না, একজন নারী ও শিশু নির্যাতনকারী কি করে, ডেইলি স্টার এর মতো দৈনিকে কাজ করে ? যারা মানুষকে আলোকিত করার ছোবক দিয়ে বেড়ায় তারাই কি করে এমন একজন শিশু ও নারী নির্যাতনকারীদের আশ্রয়, প্রশ্রয় দিচ্ছে ? তা না হলে, অনেক আগেই তো তাকে বরখাস্ত করার কথা ছিলো ।
আশার কথা হচ্ছে, মানুষ রুপি জানোয়ার সৈয়দ আশফাকুল হক প্রীতি হত্যার দায়ে গ্রেফতার হয়ে এখন সস্ত্রীক জেলে আছে । আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও আদালতের কাছে , অনুরোধ এসব খুনিরা যেন আর সমাজে ফিরতে না পারে । এদের প্রকাশ্য ঝুলিয়ে মৃত্যু দণ্ড কার্যকরের ব্যবস্থা করুণ ।
নগরীর বুকে প্রতিনিয়ত ঘটে চলা শত শত এমন ঘটনার মাঝে দু একটি ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যখন এসব অমানুষদের গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় তখন এরা আইনের মার প্যাচ আর টাকার জোরে জেল থেকে বের হয়ে আসে। দৃষ্টান্তমূলক কোন শাস্তি না হওয়ায় কিছুতেই থামছে না শিশু নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড । শিশু নির্যাতনকারীদের প্রকাশ্য বিচারের ব্যবস্থা করা উচিত । দু চারটাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিয়ে যদি এসব বীভৎস ঘটনা বন্ধ হয় ।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৯