এদিক সেদিক অনেক পোলাপাইনের ভার্সিটি লাইফের স্মৃতি কাহিনী পৈড়া আমারো লেখতে মন্চাইলো....
যার যার কাছে তার তার ক্লাসই মনে হয় সবচেয়ে উইটি আর আজীব বৈলা মনে হয়...হা হা হা...আমারো তাই মনে হৈতো...
ক্লাসে একজন ছিলো, আগাগোড়া বুরকা, মানে পুরাই নিনজা...কিন্তু যখন কোনো বদমাইশি কথা কৈতাম, এই আম্মাজনই সবার আগে হাসতে হাসতে গড়াইতো...আর ছিলো তার "আমি দেখবো আমি দেখবো" স্বভাব...
মানে হৈলো, ল্যাবে কোনো নতুন কাজ স্যাররা দেখাইয়া দিতে নিলে, গোল ভিড়ের সবাইরে ঠেইলা ঠুইলা, "আমি দেখবো, আমি দেখবো" করতে করতে মাঝখানে হাযির হৈতো...বড় হাসিখুশি ছিলো আম্মাজান...আর দয়ালু ছিলো, শখ ছিলো তার পায়ে হাতের সালাম নেয়ার...তা, আমাদের টাকার দরকার হৈলে আমরা একবার কৈরা গিয়া তারে সালাম কৈরা, টাকা নিয়া আসতাম...(সালাম করার আগে জিগাইয়া নিতাম, ব্যাগে টাকা আছে কিনা..)
তা, আমার আর হিমেলের একবার খিদা লাগলে, ভাবলাম নিজেদের টাকা খরচ না কৈরা, কারো কাছ থেইকা ডোনেশন পাইলে ভালো হয়...হিমেল মিশনে গিয়া ফেল খাইছে, তাপ্পর? আমরা পরামর্শ কৈরা বাইর কর্লাম, রোল নং ৪১ রে কৈলে টাকা পাওয়া যাইবো, পাইলাম ১০ টাকা, তারপর সেই আম্মাজানের কাছ থেইকা নিলাম ১০......
(আম্মাজান বলছিলো, তার জন্য সিঙ্গারা নিয়া আসতে একটা ২ টাকা দিয়া....আমি আর হিমলু করুন মুখে জানাইলাম, দুইটা রোল খাইতে ১২ টাকা, দুইটা চা ৪ টাকা, আর একটা বেনসন ৪ টাকা, সিঙ্গারা নেয়াতো সম্ভব না... )
এই হিমেলের যে কি পরিমান বদমাইশি ছিলো, সেডা কৈয়াও শেষ করা সম্ভব না....
তার থীসিস সুপার তারে সময় দেয়না মোটেও, অথচ সুপার তেমন বিজিও না...হে ফোন দেয়, বার বার রুমে যায়, সুপারের টাইম পায়না...
একদিন ডিপার্টমেন্টের সাম্নেই সুপার রে দেইখা দোউড়াইয়া গিয়া কথা কৈয়া আসলো....
তার অবস্থা জানি বৈলাই জিগাইলাম, স্যার কি কৈলো?
স্যার তখনও আমাদের কথা শুনার দুরত্বে দাড়াইয়া আছে..
হিম্লু কয়, " স্যার বলেছেন, "তোমরা পাঁচটা মিনিট দাড়াও, আমি এক ঘন্টার মৈধ্যে আসতাছি" .."...এডা কৈয়াই উল্টা দিকে হাটা ধরলো হিমলু...তার আরো অনেক কাহিনী আছে, সেডি খুবই এনচ্যান্টিং....তয় সবার সাম্নে কওয়া যাইবো না... সেগুলান প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য....(পরীক্ষা খারাপ হৈলেই তার নাকি বাঙ্গী ফাইটা যাইতো..) ...
পরীক্ষার দিন হিমলুর আর ইমরানের কাজ ছিলো, হলে ঢুকার আগে যখন সবাই শেষ টাইম রিভিশনে ব্যাস্ত, তারা ঘুইরা ঘুইরা সবার পড়ালেখার অবস্থা দেখতো, আর হাসাহাসি করতো....একটা আবজাব টপিকের নাম জিগাইয়া কৈতো.."ঐডা পরছোস?"...বেশির ভাগেরই কোনো ধারনা থাকতো না টপিক সম্পর্কে....আর এদের ভাব ছিলো, ঐডাতো পরীক্ষাতে আসছেই...এতেই অনেকের পালপিটিশন শুরু হবার জন্য যথেষ্ট...এর মাঝে ইমরান আবার চরম ভালো ছাত্র, আমি আর হিমেল পরীক্ষার আগের রাইতে ইমরানের কাছে গিয়া পড়তাম...আর তখন থেইকাই ইমরানরে স্যার ডাকতাম...(ইমরান এখন সত্যই ডিপার্টমেন্টের স্যার..)...
তো, ইমরান কৈলে কথাটার গুরুত্ব থাকতৈ...
আমাদের রাকু ছিলো, শখ একটাই, ডিপার্টমেন্টের ছোটো বোনদের কে বন্ধু বানানো...(এর বড় হৈলে কবি হবার কথা ছিলো, কিন্তু হয়নাই..)..
আরমানকে কেনো আরমান্ডু ডাকা হৈতো, সেডা আমরা নাহয় না'ই জানতে চাই...
কিন্তু সে ক্ষেপলে অবস্থা খারাপ, সেইটা সবাই জানে...
আমাদের এক আন্দোলনের সময় যখন ভিসি পোলাপাইনের অনশন ভাঙ্গাইতে যায়, আরমান্ডো ইমোশন সামলাইতে না পাইরা বৈলা উঠে..
"এখন যদি আমরা রগের ভেইন কাইটা সুইসাইড করি, সেইটার জন্য কি আপনি দায় নিবেন"??????
ক্লাসের জুটিটা লাইব্রেরীর পিছনে এত বেশি ডেটিং করতো, যে আমাদের ক্লাসের চান্স মোহাম্মদের(আরেকজন জানি দোস্ত) ধারনা..ঐ যায়গায় মশার বংশ পারমানেন্টলি ধ্বংস হৈয়া গেছে...এত সময় নিশ্চৈ আর কোনো কাজ না পাইয়া অন্তত থাবড়াইয়া থাবড়াইয়া মশা মারতো...
আমাদের ক্লাসে মধু ছিলো.......
ক্লাসের যাদুর কথা বলিনাই...বলছি তার কথা...
তার আসল নাম নাই বল্লাম..কিন্তু সব ক্লাসে একজন থাকেনা, ঐযে, যার জন্য সবাই মজা পায়? ..
প্রতিনিয়ত অত্যাচারে অতিস্ঠ পোলাটা, হঠাৎ একদিন আইসা কয়, "জানোস, আমি প্রতিদিন সকালে মধু খাই"
আমরা জিগাইলাম, মধু খাইলে কি হয়?
সে কৈলো, বুদ্ধি-শক্তি সব বাড়ে, আর স্পেশাল কাজের জন্য ভালো..
তো তার নাম হৈলো মধু..
মধুরে একদিন ট্রেনের জার্নিতে--------এইটা আমার ভার্সিটি জীবনের অন্যতম মজার ঘটনা..
থাক, ঐ ঘটনা অন্য কোনো দিন বলি..
(আমার ধারনা মধু আমাদের অনেক বুলিইংয়ের স্বীকার হৈছে...আমাদের কারনে, ক্লাসের সব মেয়েরাও তারে মধুই ডাকতো..ক্ষমা করিস দোস্ত)..
এইসব ফাঁপোড় খাইতে খাইতে সে সম্ভবত শেষের দিকে চরম স্মার্ট হৈয়া গেছিলো, তাই একদিন ৪/১ এ মধু ডাক শুইনা অসহ্য হৈয়া কৈলো,"আমি এখন আর মধু খাইনা"...
তা জিগাইলাম, কি খাস? সে কৈলো আমি সকালে এখন দুধ খাই...
(লেখাটা অনেক বড় হৈয়া গেলো, কিন্তু ভার্সিটির লাইফ কিছু লিখতে গেলেও কি এরচেয়ে ছোটো লিখতে পারি?
শুধু তাইনা, কেউ বকুক আর কাটুক..এই লাইফটা নিয়া আরো লিখুম আমি..)
আমাদের ফার্স্ট বয় দেখা হৈলেই স্বরচিত ছন্দে কৈতো..
"হাই, হ্যালো
আছো কি তুমি ভালো?"
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১২ দুপুর ১২:২৫