এই রহস্যঘেরা পৃথিবীতে আমাদের সাথে অনেক ঘটনা ঘটে যার কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না, হন্যে হয়ে ঘটনার পিছনে ছুটেও এর কোন কূল-কিনারা করা যায় না। রহস্যগুলো আজীবন রহস্যই থেকে যায়। আমার সাথেও প্রতিনিয়ত এরকম কিছু ঘটনা ঘটে যাচ্ছে যার কোনো ব্যাখ্যা আমার জানা নেই। আজ সেই ব্যাখ্যাহীন ঘটনার কিছু বিষয় শেয়ার করতে যাচ্ছি। এর আগে আমার অদ্ভুত সব গন্ধ পাওয়া নিয়ে একটা পোস্ট করেছিলাম ব্লগে। জানিনা সেই পোস্টের বিষয়গুলোর সাথে আমার এই বিষয়গুলোর কোনো যোগসূত্র আছে কি না।
আমার জীবনে, আচানক ভবিষ্যৎ নিয়ে মাথায় আসা অনেক ভাবনাই হুবুহু সত্য হয়ে গেছে! যার অধিকাংশের জন্যই আমাকে চরম মূল্য দিতে হয়েছে। একটা সময় এমন হয়েছে— কোনো কিছু আমার মাথায় আসলেই আমি ভয় পেতে থাকতাম, এই বুঝি সত্য হয়ে গেল! আমি কিছু ভাবতে চাইতাম না কিন্তু কোথায় থেকে যেন ভয়ানক ভাবনারা এসে আমাকে জাপটে ধরত।
আমি তখন খুব ছোট। ক্লাস থ্রী কি ফোরে পড়ি। একদিন আমার এক ফুপু ব্লেট দিয়ে আমার নখ কেটে দিচ্ছিলেন। আমি তাকিয়ে তাকিয়ে নখ কাটা দেখছিলাম আর ভাবছিলাম আমার আঙুল কেটে যাবে, হলোও তাই— ব্লেটে আমার আঙুল কেটে রক্ত বের হতে শুরু করল, ফুপু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন!
আমার আব্বার মৃত্যুর কয়েকদিন আগ থেকে কেনো যেন আমার মনে হচ্ছিল আব্বা মারা যাবেন। যদিও এমন মনে হবার কোনো কারণ ছিল না কারণ আমার আব্বা আপাদমস্ত সুস্থ মানুষ ছিলেন। আব্বা আমাদের রাতের বেলা বাইরে যাতে দিতেন না, তার এটা পছন্দ ছিল না। একদিন রাতে বিদ্যুৎ চলে যাবার পর, আমি আর আমার ছোট ভাই বাড়ির কাছেই হাঁটতে বের হয়েছি, এমন সময় আব্বা ছোট ভাইয়ের মোবাইলে কল দিলেন। আমরা জানতাম আমাদের ডাকার জন্যই কল দিয়েছেন। আমরা যেহেতু বাড়ির কাছেই ছিলাম তাই আমার ছোটভাই কল রিসিভ না করে কেটে দিল। কল কেটে দেওয়া মাত্রই আমি ওকে বললাম তুই আব্বার কল কেটে দিলি? একটা সময় আসবে তুই খুব করে চাইবি এই নাম্বার থেকে কল আসুক কিন্তু আর কল আসবেনা! মনের অজান্তেই এই কথাগুলো বলে আমি ভয় পেয়ে গেলাম। এর কয়েকদিন পরে একদিন খুব ভোরে আব্বা মারা গেলেন!
কোরবানির ঈদ! কোরবানির মাঠে গরু কাটা হচ্ছে। আমি গরুর এক পা ধরে দাঁড়িয়ে আছি, আমার কাকা চাকু দিয়ে গরুর চামড়া ছাড়াচ্ছেন— আচানাক মাথায় এল কাকার চাকু লেগে আমার হাত কেটে যাবে, ভাবনা শেষ হতে না হতেই কাকার চাকু এসে আমার হাতে লেগে হাত কেটে গেল। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে কাকা আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন!
আমার মা মাঝেমধ্যেই খুব অসুস্থ হতেন আবার সুস্থও হয়ে যেতেন। মা অসুস্থ হলে আমরা জানতাম মা সুস্থও হয়ে যাবেন। কিন্তু শেষ যেবার মা অসুস্থ হলেন আমার মনে হচ্ছিল এবার আর মা সুস্থ হবেন না। আমার বুকের ভেতর কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগত। আমি রাতে বাজে স্বপ্ন দেখে দৌড়ে মা’র রুমে গিয়ে শ্বাস পরীক্ষা করে দেখতাম মা বেঁচে আছেন কিনা। এর কিছুদিন পরে মা ঠিক আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন!
ভার্চুয়ালি আমার এক বন্ধুর, বন্ধুর সাথে ইদানিং ভালোই যোগাযোগ হচ্ছে, আমার আবৃত্তি সে খুব পছন্দ করে। সেখান থেকেই টুকটাক কথা বলতে বলতে চেনা জানা। লাস্ট কয়েকদিন ধরে মনে হচ্ছিল এই লোক বাবা হবে। যদিও এমন অদ্ভুত চিন্তা হবার কোনো মানে নেই কারণ আমি তার ব্যাক্তিগত জীবন সম্পর্কে কিছুই জানিনা তেমন। আজ তার সাথে চ্যাটিং হচ্ছিল, সে বলল তার আজকে খুশির দিন। আমি এক মুহূর্ত চিন্তা না করে তাকে জিজ্ঞেস করলাম, বাবা হতে যাচ্ছেন? সে আমাকে অবাক করে দিয়ে জানাল, আজকেই টেস্টের রিপোর্ট এসেছে সে বাবা হতে যাচ্ছে!
এই ঘটনাগুলো ছাড়াও আরও অনেক ঘটনা আছে যা আমার চিন্তার সাথে হুবুহু মিলে গিয়েছে। আমি জানিনা এর বৈজ্ঞানিক কোনো ব্যাখ্যা আছে কিনা। তবে এই বিষয়গুলো আমাকে খুব জ্বালাচ্ছে, অদ্ভুত কোনো চিন্তা মাথায় আসলে বিপরীত ওয়েতে গিয়ে কাজ করতে হচ্ছে, সবসয় একটা ভয় তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে এই বুঝি বাজে কিছু হয়ে যাচ্ছে অথচ আমি কিছুই করতে পারছিনা! আমি এসব থেকে বের হয়ে আসতে চাই। আমার এসব ভালো লাগেনা।
ছবিঃ গুগল
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৫:১৫