প্রতিদিনই ব্লগে আসি, কিছু লিখতেও ইচ্ছে করে কিন্তু কেন যেন হয়ে ওঠে না। বড্ড বদলে যাচ্ছি আজকাল। আসলেই বদলে গেছি বড় ভয়নকভাবে। ভাবতেই আজব লাগে এই আমি একসময় ঐ আমার মত ছিলাম। তখনো জাকির ছিলাম এখনো আছি মাঝে আপেক্ষিক সময়টাই যা সব করল। বলে লাভ নেই, তাই পুরানো দিনের গান শুনি। আবদুল হাদির "কেউ কোন দিন আমারে ত কথা দিল না।" এক সময় ভোর হত শত ব্যস্ততা আর কলেজ, কোচিং আর র্নিমম শত কাজ নিয়ে আর এখন ভোর একরাশ হতাশা নিয়ে। আরো একটা র্দীঘ অলস দিনের কিভাবে সমাপ্তি করা যায় তার পরিকল্পনা নিয়ে। সত্যি বিরক্তিকর।
দিন কাঠানোর ইতিকথায় কিছু বইয়ের নাম জড়িয়ে ছিল। বইমেলায় কিনেছিলাম, জাফর ইকবালের। কিন্তু দিন শেষ হওয়ার আগেই এগুলো শেষ হয়ে গেছে। এখনো আবার সেই বিরক্তিকর অগোছালো ব্যস্ততা। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছিলাম। উপরে র্ভতি হওয়ার টিকেট মিলল না। আর ৪র্থ শ্রেণীর র্কমচারী বাবার টাকায় প্রাইভেটে পড়ার কথা চিন্তা করাটাও বড্ড বেকাপ্পা লাগে। এখন কাজ শুধু পান্তা লঙ্কা দিয়া দিন যাপন আর প্রতীক্ষা করা।
দিন মেপে ঘুমানোটাও যেন অভ্যাসে চলে যাচ্ছে। হাড়গুড় বিছানায় লেপ্টে যাওয়ার অবস্থা। একসময়ের সুস্বাস্থ্য যেন অসুস্থ হওয়ার পায়তারা করছে। এটা না হলেও মনে হয় ভাল হবে। বেকার টাকার ওপর চাপ বাড়ানো, গায়ের ওপর চাপ বাড়ানো, আর বাপের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলা। আর ভাল্লাগে না। কী উদ্ভট জীবন রে বাবা। বাঁচতে ইচ্ছে হয় !
না, এখনো মরি নাই। তবে আকাঙ্খাটা যেন দিন দিন তীব্র হচ্ছে। মরতে কেমন লাগে? খুব কষ্টের হবে হয়ত। কষ্ট শব্দটা শুনতে আর ভালো লাগে না। বেচারা শব্দ হয়ত একদিন বলে বসবে ভালো লাগার সারর্মম বুজাতেই আমি আসি। ঢাকায় থাকার সময় ভালো না লাগলে হাঁটতাম। একা একা। ফুটপাত হয়ে সরু গলি ধরে অচেনা পথ ঘাটে। বারিধারা র্পাক, আফতাব নগর, হাতির ঝিল প্রিয় জায়গা ছিল আর সেন্টার ফ্রুট নিত্য সঙ্গী। ঢাকা ছেড়েছি বহুদিন হল। এবার তিতুমীরে র্ভতির ইচ্ছা থাকলেও হই নি। অর্থ বাঁচানোর নিমিত্তে এখনো টিনের চালের নিচে। এখন অবসরে শুধুই ঘুমাই। সেন্টার ফ্রুটকেও যেন ভুলে গেছি। না, এখানেও অর্থ বাচানো নয়। দাঁতের প্রতি ভালবাসাটা বেড়েছে। কী জানি একদিন হয়ত, এখনকার চেয়ে কঠিন খাবার গলাঃধরণ করতে হবে। হা হা হা....
একদিন মধ্যরাতে এক স্বপ্ন পেয়ে বসল। হ্যাঁ, লেখক হব। অনেক বড় লেখব। তখন থেকে শুরু আরেক পাগলামির। যখন যা মনে হয় লিখে ফেলি ফলাফলে পাই শূন্য। ব্লগে অ্যাকাউন্ট খুললাম। কী যে লেখি নিজেই বুঝি না। মাঝে মাঝে নিজের লিখা নিজে পড়েই খুব হাসি আর যারা বলে ভালো হয়েছে তাদের ধ্যান ধারণা নিয়েই নিজেকে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে। তবু ভাবি যা হোক, অবসর ত কাটছে। চলুক না...
কিন্তু কেন যেন, আজকাল অবসরটাও তিক্ততায় ভরে যাচ্ছে। কাল আকাশে তাকিয়ে জ্যোস্না দেখেছি। কই, আগের মত ত লাগে নি। কেমন যেন আধাঁর আঁধার লাগে। আর জোনাকিগুলোও কেমন যেন ক্ষীণ আলো দেয় এখন। সবাই কী বদলে গেছে? আমার মত ! কেন যে আগের মত জোনাকি আকাশে ছুড়িয়া মারিয়াও মজা পাই না।
কী সব যে বলছি.....
বলে লাভ নেই। মানুষ আপেক্ষিক সময়ের সাথেই বদলে যায় আর প্রকৃতি হয়ত তাল মিলায়। একদিন হয়ত মিলিয়ে যাব আঁধারের দেয়ালে। পৃথিবী ভুলে যাবে। নিঃশেষ হয়ে যাবে জাকির ! কিন্তু জাকির স্বপ্ন দেখে, বেঁচে থাকতে চায় অনন্তকাল। কী আজব....