তীর্যক চাহনিতে নিজেকে আয়নায় ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখি। অবশেষে সিদ্ধান্তে আসি, বদলে গেছি। আগের চেয়ে মুখমন্ডল একটু ফোলা ফোলা ।আগের চেয়ে একটুখানি ফর্সা । চশমাটার প্রয়োজনীয়তাও বেড়েছে। নিজেকে আগের চেয়ে বেশি আপন হয়। বন্ধুরা বলতো, " বুঝলি ! একদিন অনেক ব্যস্ত হয়ে পড়বি । সেদিন আমাদের চেয়ে, নিজের খোঁজ নেওয়াটা বেশি জরুরী হবে।" আমি শুনে অনেক হেসেছিলাম। কি যে বলিস ! সারাদিন আবোল-তাবোল। আজ ওরা পাশে নেই। থাকার কথাও না। সময় আস্তে আস্তে সবাইকে দূরে নিয়ে যাচ্ছে । বন্ধু , বাবা-মা সবাইকে।
অহংবোধে আঘাত দিলো। না। এইভাবে চলবেনা। এখনো অনেক কাজ বাকি আছে। নিজেকে জবাব দেবার এখনো অনেক কিছু আছে। এতোটা বছর কি করেছি ?
আজ আমার বড় বেশি তাড়াহুড়ো!
জীবনের কোন একটা হিসাবে আজ বেশ গড়মিল। তাই হয়ত জীবনটা বেশ এলোমেলো। শূন্যতা, উদাসীনতা জীবনটাকে আজ দারুণ ভাবে আঁকড়ে ধরেছে। পরিস্থিতি মানুষের কাছে আমাকে বিপরীত রুপ দিয়েছে। তবে একটা কথা মাথায় রাখতে হবে, আমি হারিয়ে যাই নাই, আমি নিজেকে নিঃশেষ করে দেই নাই। আমি এখনও আছি, নিজেকে বিলুপ্ত করা থেকে অনেক দূরে।
আমি আবারও ফিরব ।
দুনিয়ার এই নির্মম আচরণ আর ভাল লাগে না।
তবে মনে হয় দুনিয়ার উপরে এইভাবে একচেটিয়ে দোষ দেওয়া ঠিক হবে না। কারণ একটা সময়ে দুনিয়ার নিয়ম নীতির উপর চরম অবহেলা করেছি। তাই বলে এখন যে আমি খুবই দায়িত্ববান তা সম্পূর্ন ভুল। নিজেই নিজের জীবনটারে বিরস বানাইয়া দিছি। এইসব নিয়ে এখন আর ভাবি না, চলছে চলুক দেখি কোথায় গিয়ে থামে।
কিছু সংশয় আজ ঘিরে রেখেছে আমার পৃথিবীকে। একটা কিছুর অভাব বোধ হয়, কিন্তু এর অনেক কল্পকাহিনী আমাকে শুধো আবেগপ্লোতই করে যাচ্ছে। আদৌ কিছু দিতে পারবে কিনা তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। আমি আজ স্পষ্ট আন্দাজ করতে পারছি যে, আমি একটা ঘোরের মধ্যে আটকে গেছি। কিন্তু বুঝা স্বত্তেও আমি নিজেকে বেড় করতে অক্ষম।
শেষটা কোথায় হবে জানি না । পথ চলছি আমি আজ নিজের মত করে.... আর কত দূর এগুলে এই পথ আমার শেষ হবে তা আমি জানি না । হয়তো এই পথের শেষ না ও থাকতে পারে ! আমি পথিক পথ চলাই আমার কাজ তাই এত কিছু ভাবতে ইচ্ছা করে না । টেনশন নিয়ে কি লাভ ? আমার ধারনা, আমি একদিন ফুরিয়ে যাব কিন্তু আমার এই পথ ফুরাবে না ।
আমি প্রস্তুত এই নিয়তি মেনে নিতে । তবুও আমি দেখতে চাই কতদূর আমি হাটতে পারি ।