somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কসম! কসম!! কসম!! আমি আমার সেনাবাহিনীকে ভাড়া খাটা বেশ্যায় পরিণত করতে পারি না

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ১১:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

.

কসম!!

সত্যিই বিজয়ের মাসে
আবার শপথ নিতে চাই।

জ্বলে উঠতে চাই দেশ প্রেমে।





.
মনযোগ দিয়ে কবিতাটি দেখুন এবং শুনুন
কসম! কসম!! কসম!!!




কসম

আমি সিরাতুল মুসতাকিমের ভাষায বলছি
আমি কোরআন, বেদ, বাইবেল , ত্রিপিটকের উপর হাত রেখে বলছি,
আমি আমাদের শস্যক্ষেত্র, নিসর্গ নিলাকাশের নামে বলছি,
আমি উত্তরের একলা নদী দুধকুমারকে স্পর্শ করে, বলছি,
আমি আমাদের মহান পূর্বপূরুষদের ত্যাগ ও সংগ্রামের শপথ করে বলছি
আমি আমার সকল সামর্থকে একত্র করে বলছি,


আমার পরম শ্রদ্ধেয় পিতার নাম আমি বদলাতে পারবো না।
আমার মমতাময়ী মায়ের নাম আমি বদলাতে পারবো না।
আমার শৈশবের গ্রামের নাম আমি বদলাতে পারব না।
আমার প্রিয়তম নারীর নাম আমি বদলাতে পারব না।
আমার শীশুর তুলতুলে গাল আমি বদলাতে পারবো না।


যারা আমার মার্তৃভূমিকে ব্যর্থ ও অকার্যকর করার জন্য বিছিয়েছে মাকড়সার জাল,
যারা পিটিয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করেছে,
যারা ক্ষত-বিক্ষত লাশের উপর হিংস্র উল্লাসে বর্বর নৃত্য করেছে,
যারা ড্রাকুলার মত পান করেছে মানুষের রক্ত,
বিশ্বময় পাঠিয়েছে ভুল ও বিভতস বার্তা,
তাদের কথায় আমি বদলাতে পারি না।

আমি উত্তরের ভাওয়াইয়ার গানকে বদলাতে পারবো না।
জালালের ভাটিয়ালি গানকে বদলাতে পারবো না।
লালনের একতারা বদলাতে পারবো না।
হাছন রাজার নেশার ঘোর আমি বদলাতে পারবো না।
আমি আব্বাস উদ্দিনের বদলে আদভানিকে ভালোবাসতে পারবো না।
আমি পাগলা কানাইয়ের বদলে পবন দাশকে নিতে পারবো না।



আমি মায়ের বদলে মাসি কিনতে পারবো না।
আমি হীরার বদলে কাঁচ কুড়াতে পারবো না।
আমি দাদীকে দিদা বলতে পারবো না।
আমি পানির বদলে জলপান করতে পারবো না।
আমি কপোতাক্ষের বদলে ময়ূরাক্ষীকে আপন করতে পারবো না
আমি লালবাগের দূর্গের বদলে ফোর্ট ইউলিয়ামকে নিতে পারবো না।
আমি ষাটগুম্বুজের বদলে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল নিতে পারবো না।
আমি পল্টনের বদলে গড়ের মাঠ নিতে পারবো না।
আমি প্রবীর মিত্রের বদলে প্রসেনজিতকে নিতে পারবো না।
আমি ভাই গিরিশ সেনের বদলে গয়াকাশি নিতে পারবো না।
আমি নজরুরের বদলে নরেন্দ্র মোদীকে নিতে পারবো না।


আমি শেরে বাংলার বদলে মহাত্মা গান্ধিকে নিতে পারবো না।
আমি ভাসানীর বদলে ভক্ত প্রহল্লাদ সাজতে পারবো না।
আমি হোসেনী দালানের বদলে হাওড়া ব্রিজ দেখতে পারবো না।
আমি সোনারগাঁয়ের বদলে সোনাগাছি যেতে পারবো না।


শরীয়ুতুল্লাহর বদলে শিয়ালদা, কিছুতেই নয়।
শমশের গাজীর বদলে শরীর, কিছুতেই নয়।
শাহজালালের বদলে শবরমতী কিছুতেই নয়।
রমনার বদলে রাজঘাট কিছুতেই নয়।
কুমিল্লার বদলে কলকাতা নিতে পারবো না।
আমি ঢাকার বদলে দিল্লিকে প্রণাম করতে পারবো না।


আমি ”পদ্মা, মেঘনা, যমুনার” বদলে ”সেই সময়” নিতে পারবো না।
আমি আবু জাফর শামশুদ্দিনের বদলে সুনীলকে নিতে পারবো না।
আমি বিষাদ সিন্ধুর বদলে সুধা সিন্ধু নিতে পারবো না।
আমি মৈমনসিংহ গীতিকার বদলে গাদ্দার নিতে পারবো না।
আমি দীনেশ সেনের বদলে মূর্তিমান প্রলোভন নিতে পারবো না।


আমি শালগাছের বদলে শালা বানচোতদের নিতে পারবো না।
আমি সুন্দরবনের বদলে সুমুন্ধির পুতকে বুকে নিতে পারবো না।
আমি “ দাবায়ে রাখতে পারবা না”র বদলে “ দাবিয়ে রাখতে পারবেনা” বলতে পারবো না।
আমি স্বাধীনতার ঘোষকের বদলে আদালত পাড়ার দৈ বড়া খেতে পারবো না।


আমি পরিস্কারভাবে বলছি,
আমি সকল পবিত্রতার অঙ্গ হয়ে বলছি,
আমি কাজলরেখার বদলে রেখাকে নিযে ঘর বাঁধতে পারবো না।
আমাদের ঐতিহ্যকে ফেলে ঐশ্বরিয়া রায়ের পাশে দাঁড়াতে পারবো না।



যারা আমার পদ্মাকে শুষ্কো বালুতে পরিনত করেছে,
যারা টিপায়মুখ দিয়ে আমার কল্লোলিনী মেঘনাকে হত্যা করতে চাচ্ছে,
যারা আমার তারুণ্যকে মাদকাসক্ত করেছে,
যারা আমার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে নৃশংস শান্তিবাহিনী,
যারা আমার হৃদয়কে করেছে বিভেদ ও হানাহানিতে নিক্ষেপ,
যারা আমার ভাইকে করেছে আমার ভাইয়ের ঘাতক,
যারা আমার ডান হাতকে লাগিয়েছে বাম হাতের বিরুদ্ধে,
-তাদের কথায় আমি বদলে যেতে পারি না।


আমি আমার লক্ষ লক্ষ শহীদের রক্তে ভেজা নিশানকে ধুলোয় গড়াতে দিতে পারি না।
আমি আমার শহীদ ভাইদের রক্ত চিহ্ন ফেলে শ্বাপদ সন্কুল পথে যেতে পারি না।
আমি আমার স্বাধীনতার বদলে সোনার শিকল গলায় পরতে পারি না।



আমি আমার সেনাবাহিনীকে ভাড়া খাটা বেশ্যায় পরিণত করতে পারি না।
আমি অভিশপ্ত ইসরাইলকেকে স্বীকৃতি দিতে পারি না।
আমি ওয়াশিংটনের মাস্তানির নিচে মাথা পেতে দিতে পারি না।
আমি তেলআবিবের টাকায় মানবাধিকার পাচার করতে পারি না।
আমি আমেরিকাকে আল্লাহর উপর স্থান দিতে পারি না।


যারা আমার বি.ডি.আরকে ধ্বংস করেছে,
যারা আমার সেনাবাহিনীকে হত্যা করেছে পিলখানায়,
যারা আমার ভাইদের হত্যা করছে প্রতিদিন সীমান্তে,
যারা আমার মাথার ভিতরে তৈরী করেছে কালচারাল কলোনি,
যারা আমার স্বাধীন মানচিত্রকে করেছে অরক্ষিত,
যারা ন্যায় ও সত্যকে হত্যা করছে প্রতিদিন,
যারা আমার রাত্রির আকাশকে করেছে চাঁদশূন্য,
যারা সূর্যের মুখে ছিটিয়েছে নোংরা বর্জ্য,
যারা আমার জীবন থেকে উধাও করেছে নিরাপত্তা,
যারা আমাদের নিক্ষেপ করেছে অশ্রদ্ধা ও অসহিহুতায়,
যারা আমাদের প্রতিটি সূযোদয়কে করেছে অস্থির ও টালমাটাল-



কসম পলাশীর আম্রকাননের,
কসম ঈশা খাঁর সমরজয়ী অমর তরবারীর,
-কসম আল্লাহর, তাদের কথায় আমরা বদলে যেতে পারি না।

আমি মঙ্গাপিড়িত ধরলার ক্ষুধার্ত রোদন ধ্বনীর শপথ করে বলছি,
আমি দক্ষিনে আছড়ে পড়া ক্ষুব্ধ সমুদ্রের গর্জনের কসম খেয়ে বলছি,
আমি মেঘনা প্রতিটি ঢেউয়ের দোলকে বক্ষে ধারণ করে বলছি,
যারা আমাদের বদলাতে চায়, আমরা তাদের বদলে দিব।
মীরজাফর বিভীষণকে বানাবো মীর মর্দন কিম্বা মেঘনাদ।
শয়তানের কাছে আত্মা বিক্রয়কারিদের দেনা শোধ করে,
এই মৃত্তিকায় ফিরিয়ে আনবো,- এই মায়ের পায়ের কাছে।



তারপর বলবো, কেন তুমি আধিপত্যবাদের কাছে হৃদয় বন্ধক দিয়েছিলে?
তারপর বলবো, কেন তুমি খ্যাতি ও প্রতিপত্তির লোভী?
তারপর বলবো, কেন তুমি সিংহাসন ও সিংহাসন?

দ্যাখো এই মাটি আমার মায়ের পবিত্র জায়নামায।
দ্যাখো এই মাটি আমাদেও প্রপিতামহদের ত্যাগের কথা বলে।
দ্যাখো এই মাটি তীতুমীরের মত টকটকে লাল।


এবার বলো কেন তুমি তোমার ভাইকে সাম্প্রদায়িক বলেছো?
এবার বলো কেন তুমি সমঝোতা ও সম্প্রীতির বদলে
ঘৃনা এবং হানাহানিকে মোক্ষ জ্ঞান করছো?
এবার বলো কেন তুমি তোমার মাকে কালিমা মলিন করেছো?

তারপর আমারা আমাদের সম্মিলিত পাপ যমুনা জলে বিসর্জন দেব।
ঘৃনায় ক্ষোভে যমুনা প্রত্যাখ্যান করলে,
এই পাপকে আমরা পাঠাব মৃত্তিকার গহ্ববরে,
লাঞ্চিত মৃত্তিকা বমির মত উগরে দিলে,
নক্ষত্রলোক থেকে এই পাপ নামিয়ে আনবো ধুলিতে।
তারপর এই পাপ ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বাইরে পাঠাবো।
তারপর এই পাপ বস্তাবন্দি করো পাঠিয়ে দেব আধিপত্যবাদের উঠানে।


তারপর বলবো এই পাপ ধারন করার জন্য আমার মাতৃভূমি প্রস্তুত নয়।


কসম সালাম বরকত রফিক জব্বারের,
কসম ১৯৭১ সালের,
কসম কর্ণফুলীর তীরে অপেক্ষামান আমাদের ভবিষ্যতের,
কসম শাহজালালের আজান ধ্বনীর,
কসম আমার মন্দির মসজিদ গির্জা প্যাগোডার,
কসম লক্ষ লক্ষ শহীদের প্রতি ফোঠা রক্তের,
কসম কসম কসম আমরা এইসব করবো।

তারপর পানিতে ধুয়ে নেব মাতৃভূমির শ্রান্ত ক্লান্ত ব্যথিত শরীর।
কবি আবদুল হাই শিকদার

কবিতাটি শুনুন
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ২:২০
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×