somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চট্রগ্রামে মার্কিন নৌঘাটিঃ বাঁধা দেওয়া কি একবারেই অসম্ভব? বিকল্প কি একেবারেই নেই?

০৩ রা জুন, ২০১২ দুপুর ২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমেরিকানরা সসৈন্য আসছে আমাদের দেশে ঘাটি গাঁড়ার জন্য,এটা এখন টক অব দা কান্ট্রি। এই অবস্থায় একটা জিনিস আমাকে খুব অবাক করছে,সেটা হল,আমাদের জনগণ অন্ততপক্ষে শিক্ষিত সচেতন গোষ্ঠির পক্ষ থেকে যতটুকু প্রতিবাদ বা বিরোধীতা আশা করেছিলাম তার খুব অল্পই বাস্তবায়িত হতে দেখলাম। উল্টা প্রায় অধিকাংশের ই মনোভাব এমনঃ "ধর্ষনটা নিশ্চিত হলে উপভোগ করাটাই শ্রেয়"! কিন্তু আমরা ধর্ষিত হওয়ার ফলাফল বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াটা বেমালুম ভুলে থাকছি!!! যত বিশেষজ্ঞ যত যাই বলুন না কেন আমি ভালোভাবেই অনুভব করতে পারছি যে, জাতি হিসেবে আমাদের যা অবস্থা তাতে আমেরিকানদের দেশে ঘাটি গাড়তে দিলে পাকিস্তানের ভাগ্য বরণ ছাড়া আর কিছু হবে না! যদিও জানি মার্কিনিরা আজ হোক আর দুদিন পর হোক আমাদের দেশে আসতে চাইলে আসবেই,নিজস্ব শক্তিতে বাঁধা দিয়ে পারবো না আমরা। কিন্তু বাধা দেওয়াটা কি একেবারেই অসম্ভব? বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে অন্তত এশিয়ার পারস্পেকটিভে এটা অসম্ভব নয়,বরং আমাদের পক্ষে খুব করেই সম্ভব। উদীয়মান পরাশক্তি,স্বাধীনতার পর হতেই আমাদের সহযোগী চীনের সহযোগীতায় সেটা সম্ভব,আর এটা শুধু আমাদের স্বার্থরক্ষার জন্য নয়,চীন নিজের স্বার্থেই পরিপূর্ণভাবে আমাদের সহযোগীতা করবে। কিন্তু আমরা কি এই কাজটা মানে চীনের সহযোগীতা কাজে লাগাতে পারবো? এটাই দেশপ্রেমিক সচেতন মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ ভারত বা আমেরিকানদের যে পরিমাণ দালাল আমাদের দেশে আছে তাতে চীন মোটেও পাত্তা পাওয়ার কথা না আমাদের দেশে,পাত্তা পেতে দেবে না আমাদের দেশের মার্কিন মাসোহরা খাওয়া বুদ্ধীজীবিসমাজ আর নোংরা স্বার্থবাজ রাজনীতিকের দল! আমাদের এই সুশীলের দল সময়ে অসময়ে সবসময় ই আমেরকানদের কাছে ধর্ণা দিয়ে অভ্যস্ত,আমেরিকানদের উচ্ছিষ্টের স্বাদ তাদের কাছে অমৃতের সমান! তাই তারা মার্কিন নেমকের গুন গাইতে গিয়ে মার্কিন ঘাটি গাঁড়ার পক্ষে জানপ্রাণ দিয়ে খাটবে এটাই ভবিতব্য। অথচ চীনের দ্বারা আমাদের স্বার্থ সংরক্ষিত হওয়াটাই সবচেয়ে নিরাপদ,কারণ চীনের সাথে আমাদের ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক বিরোধ বা সংঘাতের সম্ভাবনা একেবারে শুন্যের কোঠায়,চীনের সাথে যদি আমরা সম্পর্ক জোরদার করি সেই সম্পর্ক হবে শুধুই সামরিক আর অর্থনৈতিক। আর বিপরীতে আমেরিকা বা ভারত যাদের সাথেই আমরা সম্পর্ক করতে যাই ধর্মীয় পরিচয়টা আমাদের সমস্যা করবেই,আমরা অনেকে আমাদের ধর্মীয় পরিচয়টা ভুলে যেতে পারলেও আমাদের মধ্যকারই সবাই যেমন সেটা পারবেনা,তেমনি আমেরিকানরাও আমাদের মুসলিম পরিচয় ভুলবেনা,গ্যারান্টি দিচ্ছি! ফলাফল? সহজেই অনুমেয়। আরেকটা কথা আমরা ভালোভাবেই জানি আমেরিকানরা যাদের বন্ধু তাদের শত্রুর কোন দরকার নেই,এটা মুসলমানদের জন্য আরো বেশি সত্য। অনেকেই জাপান কোরিয়ার উদাহরণ দিচ্ছেন,যদিও আমি মনে করি না তাদের উন্নতির পেছনে আমেরিকানদের সামরিক উপস্থিতির কোন প্রভাব আছে। তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নিই আমেরিকান সৈন্যরাই তাদের উন্নতির শিখরে তুলে দিয়েছে,কিন্তু তারপরও তাদের সাথে আমাদের তুলনা চলে না,কারণ ঐযে বললাম,ভুলি বা মনে রাখি আমাদের দেশটা মুসলিম প্রধান দেশ! আমেরিকা চীনকে শায়েস্তা করার জন্য আমাদের দেশে ঢুকলেও,সেটাই তাদের একমাত্র কাজ হয়ে থাকবেনা! আমাদের দেশটা জাপান না যে অভ্যন্তরীন বিষয়ে আমেরিকানরা নাক গলানোর প্রয়োজন বোধ করবে না,মুসলিমপ্রধান হওয়ায় সবসময়ে একটা চোখ তারা অভ্যন্তরীন পরিস্থিতির উপর রাখবেই। আর আমাদের দেশের উগ্রপন্থীদের কথা ভুলে গেলেও চলবে না,এরা কোনক্রমেই মার্কিন উপস্থীতি মেনে নেবে না,বরং প্রোটেস্ট করবেই! সেই প্রোটেস্টটাই যদি মার্কিন সৈন্যদের উপর বোমা হামলার পর্যায়ে যায় তাহলে কি হতে পারে চিন্তা করে দেখেছেন? সেই পাকিস্তান!!! এরপরও মার্কিন ঘাঁটির পক্ষে সাফাই গাইবেন???

বিপরীত দিকে চীনের সাথে সম্পর্কটাকে ঐ পর্যায়ে নিয়ে গেলে এই সমস্ত অন্তর্ঘাতি সমস্যা তো হওয়ার প্রশ্ন আসেই না,বরং আমরা আমেরিকাকে এড়িয়েও যেতে পারবো প্লাস ভারতকে ভালোভাবে ট্যাকল দিতে পারবো।
এখন আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে,আমরা আমেরিকানদের হাতে ধর্ষিত হবো না কি ধর্ষন থেকে বাঁচার জন্য চীনকে বড়ভাই হিসেবে পাশে চাইবো। যেখানে এই ধর্ষিত হওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা বাদ দিলেও কিছু দেশীয় কুলাংগারের জন্য ধর্ষণটাকে উপভোগ করার ক্ষমতাটাও আমাদের নেই,সেখানে ধর্ষন থেকে বাঁচার জন্য সাহায্যকারী বড় ভাই চীনকে না ডাকাটা বিশাল ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে এত কোন সন্দেহ থাকতে পারে না।
বর্তমানে নানা কারণে বেকায়দায় থাকা আওয়ামি সরকার না পারুক,পরবর্তি সরকার দেশের স্বার্থে এই এবং নিজস্ব দলীয় ও দেশীয় বলয় দাঁড় করাতে এই সাহসি পদক্ষেপটা যদি নিতে পারে তো সেট হবে একটা যুগান্তকারী দিক নির্দেশক সিদ্ধান্ত।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০১২ বিকাল ৫:৫০
১৮টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×