!!!! গণ জাগরণ মঞ্চ !!!!
প্রশ্নঃ এদের কাজ কি ?
উত্তরঃ জাগরণ সৃষ্টি করে হতাশ করা ।
প্রশ্নের আলোকে ব্যাখ্যাঃ
৫ ফেব্রয়ারি কসাই কাদের
রাজাকারকে ফাঁসি না দেওয়ায় , কিবোর্ড ছেড়ে রাস্তায় নামে তরুণরা । তারুণ্যের উদ্দীপনায়
কনায় কানায় ভরা তারা ।
ফাঁসি না দিয়ে রাস্তা তারা ছাড়বে না । একে একে সব কয়টা রাজাকারকে ফাঁসি দেওয়া হবে তবে রাস্তা ছেড়ে দেওয়ায়
। তারুণ্যের শক্তি কত ! সেটা এদের না দেখলে হয়তো বিশ্ববাসী বিশ্বাস করত না ।
জানি , এদের তারুণ্যের জয় হবে । কারণ , যুগে যুগে জয়ী হয়েছে তরুণ সমাজ । জয়ই তরুণদেরই
প্রাপ্য । জয় হোক তারুণ্যের ।
আমি শাহবাগের কথা বলতে চাইছি না । কারণ শাহবাগকে আমি ২১" পর্দায় ছাড়া দেখি নাই । শাহবাগকে আমি মোবাইলের স্ক্রিনে ছাড়া পড়ি নাই । তাই হয়তো শাহবাগকে সঠিকভাবে চিনি না ।
কিন্তু যশোরে জাগরণ মঞ্চ । এটা তো তৈরী হয়েছে আমার চোখের সামনে । আমাদের মতো কতগুলো তরুণের প্রচেষ্টায় তৈরী হয়েছিল এই জাগরণ মঞ্চ । কত উত্তেজনা সে , কত স্বপ্ন বুকে নিয়ে চিত্রার
মোড়ে গলা ফাটিয়ে বলা জয় বাংলা । কত উত্তেজনা নিয়ে ব্যানার লেখা , পোষ্টার লেখা ।
হাতের লেখা খারাপ , তাতে কি ?
আমাকে লিখতে হবে । দেশের সব জেলায় নেমে পড়েছে রাজাকারের ফাঁসির দাবিতে আন্দোলনে ।
আর আমার যশোর পিছিয়ে থাকবে ? কখনই না ।রাজাকারকে তাড়িয়ে তবে ঘরে ফিরব ।
বাসায় না বলে চিত্রার মোড়ে চলে যাওয়া । যে ছেলে ঘরে ফিরতো সন্ধ্যার আগে সেই ছেলেকে তখন রাত ৮টার আগে বাসায় পাওয়া যেতো না ।
কি পেয়েছে এই ছেলেদের দলটি ? না পেয়েছে গন জাগরণ মঞ্চের ইমারানের মতো স্বীকৃতি !
না পেয়েছে তাদের পোষ্টার ব্যানার কেনার জন্য টাকা ! কিছুই পাইনি তারা । শুধুই নিজের তাগিদে দেশের প্রয়োজনে তারা এটা করেছে ।
একসময় তাদের ঠাই হলো জাগরণ মঞ্চ থেকে কিছুটা দূরে । তবুও তারা থেমে নেই , তাদের সাধ্যের
ভিতর এগিয়ে চলে কাজ । রাস্তায় তারা ফুল , পাতকাঠি , পাতা , তুলা দিয়ে আঁকায় শহীদ মিনার ,
বাংলার পতাকা , স্মৃতিসৌধ , সংসদ ভবন । আর চারপাশে থাকে রাজাকারদের ফাঁসির দাবিতে পোষ্টার ।
তবুও তারা যা চেয়েছিল সেটা কি পেয়েছে ?
*সারা দেশে যখন দিগন্ত টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে , যশোরের জাগরণ মঞ্চ সেটা করতে পারেনি ।
*সারাদেশে আহবান করা হলো ইসলামী ব্যাংক থেকে একাউন্ট ক্লোজ করতে । কত জন করেছিল এই যশোরে । যশোর জাগরণ মঞ্চে যারা ছিল তারা করেছিল তো ?
*সারাদেশে যখন "আমারদেশ পত্রিকা"য় আগুন দেওয়া হচ্ছে । তখন যশোরে "আমারদেশ পত্রিকা" তুলনামুলক বেশী বিক্রি হচ্ছে ।
*সারাদেশে যখন হরতালে জামাত শিবির কে প্রতিহত করা হচ্ছে তখন যশোরের জাগরণ মঞ্চের
লোকেরা বাড়ি বসে সরষে ইলিশ খাচ্ছে । তারপর হরতাল শেষে মঞ্চে এসে গান ধরছে ..."তীর হারা এই ঢেউ এর সাগর পাড়ি দেবোরে...."
তবে সারাদেশের এবং শাহবাগের জাগরণ মঞ্চ সহ যশোর গণ জাগরণ মঞ্চের কিছু মিল আছে....
*জাগরণ মঞ্চে আন্দোলন শুরু হওয়ার ২ কি ৩ দিনের ভিতরেই খুজে পাওয়া গেছে ক্ষমতাসীন দলের লোকদের ।
*একই সাথে এরা মোমবাতি জ্বালিয়েছে , বেলুন উড়িয়েছে , গণস্বাক্ষর নিয়েছে ।
*একই সাথে এরা নিরবতা পালন করেছে । এবং কোন কনো মঞ্চে মা জাহানারা বেগমের পাশে নিহত
রাজিবের ছবি বসিয়েছে ।
*এবং ব্যার্থ আল্টিমেটাম দিয়ে সকল জাগরণ মঞ্চ হাস্যকর অহিংস আন্দোলন করেছে ।
যেদিন যশোরে আন্দোলন শুরু করেছিলাম , সেদিন একটা ব্যাংকের নিচে দাড়িয়ে একটা কাপড়ে রাজাকারের ফাঁসির
দাবিতে মানুষের স্বাক্ষর নিচ্ছিলাম । আমার থেকে বয়সে বড়রা এসে আমাদের উত্সাহ দিয়েছিল ।
আমাদের কোট টাই পরা এক ব্যাংকার আঙ্কেল বলে গেলো সেও আসবে সন্ধ্যার পর । কত ছোট
ছোট বাচ্চা এলো , কত বৃদ্ধ এলো ।
কি হলো শেষমেশ ! এক সময় মঞ্চ
চলে গেলো একটা নির্দিষ্ট দলের দখলে । এখন আর চিত্রার মোড় আটকানো থাকে না ।
মাঝে মাঝে সন্ধ্যার পর শোনা যায় জয় বাংলা । কিন্তু দাবি আদায় হলো কি !