গার্হস্হ্য ক্রিয়াকর্মের ভেতর বাজার একটা অতি প্রয়োজনীয় বিষয়। বাজারে যে কখনও নিজে দামদর করেনি তাকে জিনিসপত্রাদির মূল্য বা মূল্যায়ন প্রসঙ্গে কিছু বোঝানো খুবই দুরূহ বিষয়।
সমস্যার কথা হলো, একটা পরিবারের (বা প্রতিষ্ঠানেরও) যারা বাজার-সংক্রান্ত কাজে জড়িত থাকে তারা সংখ্যায় লঘিষ্ঠ লোকজন। অর্থনৈতিক শ্রেণীবিন্যাস ভেদে এই চিত্রটাও কেমন এলেবেলে রকমের। চিত্রটা কেমন তার এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা যাক।
প্রথমতঃ দেখা যাক এই বাজারকর্মটির কারক'দের অবস্হা। অর্থনৈতিক শ্রেণীবিন্যাসে চিত্রটির ভিন্নতা লক্ষনীয়।
উচ্চবিত্তঃ
অর্থনৈতিকভাবে অতিসচ্ছল এই অংশটি বাজার প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত থাকেনা বললেই চলে। এখানে দায়িত্বটা বর্তায় সংসারের কর্মপ্রক্রিয়ার সাথে জড়িত অপেক্ষাকৃত নিম্নশ্রেণীর কোন কেউ যার হিসাব সবসময়ই একটু অস্বচ্ছ। প্রকৃত অর্থে উচ্চবিত্তের মধ্যে বাজারের পণ্যের মূল্যায়ন সম্পর্কে ধারণা তৈরী হয় ব্যবসানির্ভর উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে। জিনিষপত্রের দরদাম বাড়লে প্রকারান্তরে এদের ক্ষতিবিশেষ নেই। আর তাই দেশের বাণিজ্যন্ত্রী যখন বলেন গত ১৮ মাসে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়নি তখন এই উচ্চবিত্তরা কিঞ্চিত হাস্য করেন প্রকৃত ধারণা ছাড়াই।
মধ্যবিত্ত
পরিবারের কর্তাব্যক্তির উপরই বাজারের দায়িত্বটি ন্যস্ত থাকে। দ্রব্যমূল্যের পরিবর্তনে অহরহ টনক নড়ে যায়। বাণিজ্যমন্ত্রীর ওই কথা তার ভেতরে দীর্ঘশ্বাস তৈরি করে। কিন্তু কোন সমাধানের সুষ্ঠু পথ সামনে না পাওয়ায় শোষিত হবার চিত্রটিও এই শ্রেণীর জন্য স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়।
নিম্নবিত্তঃ
পরিবারের যথাসম্ভব ছোট বড় প্রায় সবার উপরই দায়িত্বটা অর্পিত হয় দ্রব্যমূল্যের পরিবর্তনে বেশী প্রভাবিত হয় এরা। কমদামী চালের দাম একটু বাড়ানো মানে হলো এদের উদরে সরাসরি আঘাত করা। অবশ্য বাণিজ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্য এদের কানে পৌছানোর ব্যবস্হাই নেই।
অথচ বাজারদাম বৃদ্ধি নিয়ে যারা সিদ্ধান্ত গ্রহণে দায়িত্বপ্রাপ্ত তারা প্রায় সকলেই ওই উচ্চবিত্তের ভিতরেই অবস্হান করে। আর এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে এদের হয় কড়কড়ে নোটের ব্যবসা মুনাফা। অত্যল্প আয়ের লোকগুলো এই সিদ্ধান্তের আর গালভর্তি মন্ত্রী মিনিস্টার সিন্ডিকেটের নিষ্পেষণে হয় জর্জরিত। পুঁজিবাজারের এ নিষ্পেষণ বন্ধ হোক। নতুন সূর্যের শক্তি নিয়ে ফিরে আসুক সর্বসাধারণের স্বস্তি।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০১০ বিকাল ৫:২৮