চীন থেকে কানাডায় সার্স ভাইরাস নিয়ে আসে দুই হাজার তিনে, কোয়ান সুই-চু নামের প্রবীণ মহিলা। হংকং থেকে পরিবারের একটা অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য আসেন কানাডা। আসার আগে চীন থেকে তিনি ভাইরাসটি পেয়ে ছিলেন। সাধারন জ্বর সর্দি, কাশি হলে অনেকেই পাত্তা না দিয়ে নিয়মিত কাজ করেন। কিন্তু সেটা যে অনেক সময় ভয়ানক হয়ে উঠে । তা অনেকেই জানেন না। মহিলা এক মাসের মধ্যে মারা যান। ভাইরাসটি ততক্ষণে তার ছেলেকে আক্রান্ত করে এবং চিকিৎসার জন্য তিনি ভর্তি হন, স্কারবরো গ্রেস হাসপাতালে। রোগী, ডাক্তার, নার্সসহ ২৫৭ জন তার মাধ্যমে আক্রান্ত হন । ডাক্তারাও প্রথমে সাধারন ভাবে এর চিকিৎসা শুরু করেছিলেন কিন্তু হঠাৎ অদ্ভুত ভাবে অনেকেই আক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে সাবধানতা অবলম্বন করা হয়। সার্স আক্রান্ত রোগীদের আলাদা কক্ষে শুধু রাখা হয় না, যারা রোগীর কাছে যাচ্ছিলেন চিকিৎসার জন্য পরিচ্ছনতার জন্য, সেবার জন্য নিচ্ছিদ্র আভরণে নিজেদের ঢেকে তাদের কাছে যাচ্ছিলেন। কোন আত্মিয় স্বজনকে কাছে আসতে দেওয়া হচ্ছিল না।
সারা শহর জুড়ে একটা আতংক ছড়িয়ে পরেছিলো সে সময়।
চীনাদের গ্রোসারী খাবার দোকানগুলো সাধারনত খুব ব্যাস্ত থাকে এবং অসম্ভব রকম নোংরা থাকে। ভিতরে ঢুকলেই একটা গন্ধে গা গুলিয়ে উঠত। তবু জনসাধারন সস্তায় নানারকম মাছ সবজী, তরকারী ফলমূল কেনার জন্য এবং চাইনিজ খাদ্যের আকর্ষণে দোকানগুলোতে ঢুকত। সার্সের পরে চাইনিজদের দোকানগুলো সবাই যাওয়া কমিয়ে দিল। এবং চাইনিজরা জীবনে মনে হয় এতো পরিস্কার করে নাই, যা সে সময়টা তাদের ব্যবসার খাতিরে করেছিল। ঝকঝকে তকতকে হয়ে উঠেছিল তাদের প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তারপরও মানুষের আনাগোনা না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নিজে চাইনিজ দোকানে যেয়ে, খেয়ে প্রচার করেছিলেন এখানে কোন ভয় নাই।
চলার পথে চাইনিজের পাশে কেউ দাঁড়াতে বসতে রাজী ছিল না। সাধারন ভাবে কেউ একটু কাশি দিয়ে উঠলে মানুষ অন্য দিকে সরে যাওয়ার চেষ্টা করত।
অনেকেই মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাবস পরা শুরু করে। আগে দেখা হলে হাই হ্যালোর সাথে হেণ্ডসেক এবং গলাগলি খুব আন্তরিক একটা বিষয় ছিল। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সেগুলো থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হলো এবং বাইরে থেকে এসে হাত ধোয়ার জন্য জোড় দেওয়া হলো। জনসমাগমের জায়গা বিশেষ করে স্কুল, অফিস, ক্লিনিক, হাসপাতালে হাত পরিচ্ছন্ন করার সলিউশন দরজার কাছে স্থাপন করা হলো।
দক্ষিণ চীনের গুয়াংডং প্রদেশে থেকে উদ্ভূত হয়েছিল সার্স এবং দুই হাজার তিন এর শুরুর দিকে প্রায় দুই ডজন দেশে ছড়িয়ে পড়ে রহস্যময় নিউমোনিয়ার মতন নতুন এই রোগের প্রাদুর্ভাব SARS।
সার্সকে সারসংক্ষেপ. গুরুতর তীব্র শ্বাসতন্ত্র সিন্ড্রোম এবং এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারী সংক্রমণ বলা যায়।
গত কাল জানলাম, করোনা ভাইরাস নামে আবার এক নতুন ধরনের রোগ চীন থেকে ছড়িয়ে পরছে। উহান প্রদেশে যারা মাছ মোরগের বাজারে কাজ করে তাদের মধ্যে এই রোগ দেখা দিয়েছে। জাপানে যাওয়ার পর একজনকে এই নতুন ধরনের রোগে আক্রান্ত হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বর্তমান সময়ে গ্লোবাল যোগাযোগ এত বেশি। সাধারন সর্দি, কাশি ভেবে কি রকমের রোগ নিয়ে কে কোথায় পৌঁছে যাচ্ছে তার প্রভাব কি ভাবে অন্যান্য দেশের মানুষের উপর পরছে সেটা নির্ভর করে সে দেশের সাবধনতা নেওয়ার ক্ষমতার উপর।
উন্নত দেশগুলি এয়ারপোর্টে চেক করে ঢুকাতে শুরু করেছে মানুষ। বাংলাদেশের সাথে চীনের যোগাযোগ এখন অনেক বেশি। তাদেরও সতর্ক হওয়া উচিৎ মনে করি। দেশের মানুষের মধ্যে এই করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পরার আগে। এমনিতেই চিকনগুলিয়া আর ডিঙ্গুতে মানুষ কষ্ট পায় মশার উপদ্রব বেড়ে গেলে । সেটা নিধন করা সম্ভব হয় না।যথাযথ ব্যবস্থা নিতে না পারার জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০২০ ভোর ৬:৩৩