বাংলা লেখার কঠিন বিষয় হলো যুক্তঅক্ষর সেগুলো লেখা এখন আরো কঠিন। জানতে হবে যুক্তক্ষর কিভাবে লিখতে হয়।
ণ হবে না ন হবে। স হবে না ষ হবে এমন অরো সব কিছু। এছাড়া আছে তিন অক্ষরের যুক্তক্ষর যেমন ক্ষ।
এছাড়া কত রকমের চিহ্ন ব্যবহার করতে হয়। দীর্ঘ হ্রস র পাল্লা বেশ ভাড়ি। ও কার ই কার এগুলো নানা রকমের বাংলা লেখার টাইপে ভিন্ন রকম ভাবে ব্যবহার করতে হয়। যা তৈরি হয় ওয়েব নির্মাতার পছন্দ মতন। এবং অবশ্যই সাথে জানতে হবে নানা লেখার নানা নিয়ম। যার জন্য লেখা ভুল হবে। অনেক যুক্ত অক্ষর আপনি সঠিক লেখার পরে দেখবেন ভুল দেখাচ্ছে পোষ্টে । আবার অনেক সময় ওয়েব নিজের পছন্দে একটা শব্দ আপডেট করে ফেলে।
যখন বিদেশে প্রথম এলাম দেশের জন্য প্রাণ কাঁদে বেশি। তখন এত বাংলা ব্যবহারের সুযোগ ছিল না অন লাইনে।
বেশ ক বছর পর অন লাইনে পত্রিকা পাওয়া গেলো। পিডিএফ করা পত্রিকার নাম পড়তে পারি কিন্তু ভিতরের লেখা পড়তে পারি না। ছেলে বেশ পারদর্শি কম্পিউটারে। তাকে বলি লেখা গুলো পড়ার ব্যবস্থা করে দিতে। ও চেষ্টা করে জানায়। হবে না। এক একজনের এক এক নিয়ম। নানান নামের বাংলালিপি সবটা ডাউনলড করার সুযোগ নেই তাই পত্রিকা পড়াও সম্ভব হতো না। এখনের মতন পিডিএফ ছাড়া ইউনিকোড ব্যবহারের সুযোগ ছিল না। আমি অত কিছু না বুঝে বরং ছেলের উপর রাগ হতাম আমার কাজ করার জন্য সময় দিচ্ছে না ভেবে। অথচ ও যে সঠিক বলছে সেটা বুঝতে পারতাম না তখন। অজ্ঞতায় রাগ বেশি হয়।
বর্তমান সময়ে অনেক উন্নত হয়েছে বাংলা অনলাইনে।
নতুন করে গুগলে ভয়েস টাইপিং শুরু হয়েছে। ভালো লিখে, দ্রুত লেখা হয়। তবে অনেক কথা বুঝতে পারে না ভয়েস। আর দাড়ি কমা দিতে পারে না। সাথে ভাবনা মুখে বলে প্রকাশ করাতে হাতে লেখার মতন অনেক সময় হয় না। ভয়েস রেকর্ডিং শুধু ভয়েসেই করতে হয়। সেখানে হাতে লেখার কোন সুযোগ নাই। তাই অন্য কোন ওয়েবে গিয়ে আবার এডিট করতে হয়।
হয়তো বা আছে এক সাথে এডিটিং সুবিধাসহ আমি পাইনি। এখন এত বেশি ওয়েব তৈরি হয়েছে সবই ভালো নয়। সঠিক নিজের পছন্দ মতন পাওয়া কঠিন। অনেক ওয়েবের সাথে আবার স্পাম ওয়েব পাওয়া যায়। তাই সব লিঙ্কে স্পর্শ করতে ভয় হয়।
অভ্যস্ততার শুধুই পরিবর্তন দরকার। সাথে অভ্যস্থ হয়ে উঠারও। এ যেন বর্তমান সময়ে অফিসে কাজ করার মতন; প্রতিনিয়ত আপগ্রেড করাতে হয় নয় তো যে কেউ জায়গা দখল করে নিবে। কাজ হারানোর ভয়ও থাকে।
সনাতন পদ্ধতির টাইপ রাইটারের মতন এক ঘেয়ে খটাখট টাইপ করে যাওয়ার সুযোগ আর নাই।
গুগলে বাংলা যাওয়া মানে আর্ন্তজাতিক অবস্থানে বাংলা আছে। আগে গুগল ট্রেন্সলেশনে বাংলা পাওয়া যেত না। এখন সেটা যুক্ত হয়েছে। সাথে আবার প্রচুর ভুল বানান এবং বাক্যেরও ছড়াছড়ি আছে। এখন সঠিক খুঁজতে হয় এবং জানতে হয়।
ইংলিশের মতন বাংলা ডিকশনারি দরকার অনলাইনে। ব্লগে অনেকে বানান ভুল ধরেন, তাদের ওয়েব বাংলা ডিকশনারী যোগ করার দিকে মনোযোগী হওয়া দরকার। ইংলিশ লিখতে গিয়ে লাল দাগে ভুল ধরিয়ে দেয়। বানান জানার দরকার পরে না। লাল দাগ দেখে সচেতন হয়ে ঠিক করে নেয়া যায়, সাজেসন অনুযায়ী। সঠিক মনে না হলে সমার্থক শব্দ দেখে চট করে বের করা যায়।
বাংলা লেখা তেমন ভুল ধরলে সাথে সাথে ঠিক করে ফেলা যায়। কিন্তু আমাদের এক ভাষা, লেখার পদ্ধতি আবার নানা বৈচিত্রের।
তাই সরকার অনুমদিত সঠিক ভাষা চর্চার জায়গা থেকে,সঠিক বানানের অভিধান যোগ হলে ভালো হয়। প্রতিটি সফটওয়ারের সাথে অভিধানের শব্দ থাকবে। তা আমাদের লেখা সঠিক করতে সাহায্য করবে।
বর্তমান সময়ের বাচ্চারা ক্যালকুটের দিয়ে অংক করে। তাদের নামতা বা টেবিল শিখার জন্য বা বানান শিখার জন্য বেশি সময় ব্যয় করতে হয় না। তারা সময়টা অন্য ভাবনায় লাগিয়ে ভিন্নধর্মী কাজ করতে পারে। বিদেশে এই মুখস্ত করার জন্য খুব চাপ দিতে দেখি নাই বাচ্চাদের। আবার কিছু বাচ্চা আছে বিরাট লম্বা সংখ্যার অংকের গুন ভাগ বিয়োগ বা যোগের ফল মুখে মুখে বলে দেয়। বানান প্রতিযোগীতা করে পুরস্কার পায়। তবে যারা শিখতে চায় না তাদের জন্য জোড় করার কোন ব্যবস্থা নেই। সফ্টওয়ার আছে বানান ঠিক করে নেয়ার, অংক করার।
তবে দেশের ভিতর ভাষার মান বদলে যাচ্ছে। এক সময় করছস খাইছস, গেছস এমন শব্দ রেডিও, টিভিতে শুনে কেমন জানি লাগত। সাথে ছিল ইংলিশ মিক্স কথা, এই আমি যেমন লিখলাম। এখন সেগুলো লেখায় যুক্ত হয়ে গেছে। আবার এই কথা গুলোও বদলে যাচ্ছে আরো নতুন প্রজন্মের মুখে। ভাষা বদল হবেই নয় তো ভাষা মরে যাবে। তবে এত বদল মানা অনেক সময় সহজ হয় না অভ্যস্থতার জন্য। কিন্তু উপায় নাই, মেনে নিতেই হবে।
আমার সবচেয়ে বড় অসুবিধা আমি বিজয়ে লিখি। আর ল্যাপটপ বদল করলে প্রতিবার জব্বর সাহেবের থেকে সিডি কিনতে হয়। পুরানোটা আর ব্যবহার করতে পারি না। সিডি ভালো থাকলেও তিনি অনুমতি দেন না।
আমি বাংলা লেখা শিখেছি আশির দশকে এবং বিজয়ে। বিজয়ে লিখতেই আমার সাচ্ছন্দ। কিন্তু এখন বেশ ঝামেলায় থাকি প্রতিবার নানা রকম নিয়ম বদল হওয়ার জন্য। অভ্র যখন আসল তার আগে দুহাজার সালের দিকে অভ্রর নিয়মে বাংলা লেখার একটা প্রোগরাম পেয়েছিলাম আমি ইণ্ডিয়ান ওয়েবে। বেশ ভালো লেখা হতো। কিন্তু যেহেতু আমার লেখা আবার বই আকারে প্রকাশ পায় তাই প্রকাশনার সুবিধায় আমি বিজয়ের সাথেই থাকি। অন্য ভাবে লিখলে প্রকাশকরা সেটা আবার বিজয়ে করে দিতে বলেন।
কিন্তু দিন দিন বিষয়টা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
মোবাইলে রিদিমিক ব্যবহার করি। বেশ ভালো। অনেক যুক্ত অক্ষর আমাকে লিখতে হয় না শব্দ এসে যায়, বসিয়ে দেই তবে টাইপ করতে অনেক সময় লাগে আমার। রিদিমিকের টাইপের সিস্টেম আবার ল্যাপটপের মতন নয়। ভয়েস টাইপও ভালো এদের। তবে বড় লেখা রাখার মতন জায়গা মোবাইলে নাই। তাই সমস্যা হয় ।
একটা না একটা নানা রকম সমস্যা চলেই বাংলা লেখায়।
এবং এই বিভিন্ন ধরনের টাইপে লেখা গুলো প্রকাশনার জন্য সহযোগী হবে কিনা সেটা নিয়ে ভাবনা থেকে যায় সাথে।
উন্নত হচ্ছে, আরো কিছুদিন পর হয় তো স্থির একটা ব্যবস্থা পাব অনলাইনে সঠিক বাংলা লেখার, ইংরেজি লেখার মতন। বারে বারে বদলের চেয়ে স্বস্থি হবে তখন এই আশা করি।
এই লেখাটাও হলো শেরজা তপনের লেখার উত্তর দিতে গিয়ে।
লেখার নানা অবস্থা নিয়ে আগে একটা লেখা দিয়েছিলাম। অর্ন্তজালে বা!লা লেখায় কত বর্ণ কত রঙ অনেকে পড়েন নাই এখানে লিঙ্ক যোগ করে দিলাম।
অর্ন্তজালে বাংলা লেখায় কত বর্ণ কত রঙ