somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কুরবানীকে কেন্দ্র করে দেশকে সঙ্ঘাতের দিকে ঠেলে দেয়ার অপচেষ্টা!

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৩:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইতোমধ্যে খবরের কাগজে ”কোরবানি নিয়ে মিথ্যা তথ্য পড়ানো হয় দাবি করে হাইকোর্টে রিট” শিরোনামে একটি খবর হয়তো পড়ে থাকবেন-

"কোরবানির উদ্দেশ্যে হজরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁর প্রিয় ছেলে হজরত ইসমাইল (আ.)-কে নয়, তাঁর আরেক ছেলে হজরত ইসহাক (আ.)-কে শুইয়েছিলেন দাবি করে হাইকোর্টে রিট আবেদন দাখিল করা হয়েছে। এতে আরো দাবি করা হয়, এ নিয়ে বই-পুস্তকে যা পড়ানো হয়, তা মিথ্যা।

....গতকাল এই রিটের ওপর শুনানি গ্রহণের আগে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের বিচারপতিসহ রিটকারী ও সরকারপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সবাই অজু করে নেন। আদালতের নির্দেশেই সবাই অজু করেন। গতকাল সকালে রিট আবেদনটি দেখে আদালত বলেন, এ রিট আবেদনের শুনানির জন্য সবাইকে অজু করে আসতে হবে। আদালত রিটকারী, সরকারের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাজিক আল জলিলকে অজু করে আসতে বলেন এবং বিচারপতিরাও অজু করে আসার পর দুপুরে শুনানি হবে বলে জানিয়ে দেন। পরে দুপুরে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। রিটকারী নিজেই শুনানি করেন।"

প্রথমত, কোর্ট এ বিষয়ে কেন আমল দিচ্ছে? এটা কি কোর্টের বিষয়? তাহলে তো মুসলিম বিদ্বেষী মুক্তমনারাও (যারা মূলত নাস্তিক মৌলবাদী) মামলা করে দাবী করতে পারে যে কোরান-হাদিস ভুল, মিথ্যা, ইত্যাদি। তারা কোর্টে এটাও রিট করতে পারে যে আল্লাহ নেই এবং প্রমাণ হিসেবে তারা বিবর্তনবাদকে উল্লেখ করবে। তখন কোর্ট কীভাবে ফয়সালা করবে?

ভাবুন তো, কোন মুসলিম সংগঠনের পক্ষ থেকে কোর্টে রীট করা হলো এভাবে- “রাবণ-সীতার কাহিনী কাল্পনিক বা দুর্গাপুজা হাস্যকর।” বিষয়টা আদালতে উঠার সাথে সাথেই আন্তর্জাতিক খবর হিসেবে শিরোনাম হবে। সংখ্যা-লঘুদের ধর্ম-বিশ্বাস নিয়ে উপহাস করে তাদের ধর্ম পালনে বাধার অভিযোগ তুলে জাতিসঙ্ঘের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভের আয়োজন করবে। তার সাথে যোগ হবে মুক্তমনাদের মাতম। ইসমাইল (আ.)/ইসহাক (আঃ) ইস্যুটা নতুন নয়। এটা বেশ প্রাচীন খেলা। ইহুদী/খৃষ্টানদের ধর্মানুসারে ইসহাক ছিলেন প্রতিজ্ঞার সন্তান (অর্থাৎ যাকে কুরবানী দেয়া হয়েছিল), ইসলাম এসে সত্য তথ্যটি পুনঃস্থাপিত করেছে; তা হলো ইসমাইল (আঃ)-কেই কুরবানী দেয়া হয়। এসবের উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে বিবাদ লাগানো। যে উদ্দ্যেশ্যেই করা হোক না কেন তা অত্যন্ত পরিষ্কার। মুসলিমদেরকে ক্ষেপিয়ে দিয়ে রাস্তা-ঘাটে লাঠি-সোটা-টুপি-দাড়ি-অলাদের মিছিলে নামাতে বাধ্য করে সেগুলোর ছবি-ভিডিও তুলে পশ্চিমা মিডিয়াতে প্রচার করে বাংলাদেশকে 'ইসলামিক জঙ্গী' দেশ হিসেবে চিহ্নিত করে ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে ইসলাম পালন নিষিদ্ধ করার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরী করা। তা না হলে ইহুদী-খৃষ্টানদের সাথে মুসলিমদের ধর্মীয় মতবিরোধ নিয়ে অন্য এক ধর্মাবলম্বী এ বিষয়ে কোর্টে যাবেন কেন?

দেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায়, বিষয়টি অতীব জরুরী। এতে সাধারণ মুসলমান খুব মর্মাহত হবেন। অন্যদিকে আবেগপ্রবন মুসলিম বা ধর্মীয় রাজনৈতিক গ্রুপ এটাকে ইস্যু বানাতে পারে যাতে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনিষ্ট হতে পারে। যারা রিট আবেদন করেছে তারা তা চিন্তা-ভাবনা ও পরিকল্পনা করেই এগিয়েছে। তাছাড়া কোর্টের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে, কেননা বিচার বিভাগের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সমাজে ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শান্তি কায়েম করা। ইসলাম ধর্ম এতো ঠুনকো নয় যে বিচারপতির রায়ে তা পরিবর্তন হয়ে যাবে। তাদের রায়ে/মন্তব্যে ইসলাম ধর্মের কিছু আসে যায় না। ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য হচ্ছে মুসলমানদের মনে আঘাত করে তাদের পাতা ফাঁদে পা দেওয়ার জন্য প্ররোচিত করা। ইসলাম ধর্ম ধৈর্য শিক্ষা দেয়। তাই মুসলমান হিসেবে আমাদের বিষয়টা এড়িয়ে যাওয়া উচিত। এটাই দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর।

কোরবানীর ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত জানতে পড়ুনঃ

হযরত ইব্রাহিম (আ.) ইসমাইল (আ.)-কে নয়, ইসহাক (আ.)-কে কোরবানি করতে নিয়ে গিয়েছিলেন

ইব্রাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাক (আ.) সম্বন্ধে জ্ঞাতব্য
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৩:৩৫
১২টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×