somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঝড়ে বিধ্বস্ত আমার মা, ভিনদেশির আহ্বান এবং নিরুপায় পরবাস

১৮ ই নভেম্বর, ২০০৭ দুপুর ২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১.
ব্যস্ত এই জীবনে মনটা অস্থির হয়ে উঠলো, যখন বৃহস্পতিবার ল্যাবে তিনঘন্টার ম্যারাথন সেমিনার শেষে ডেস্কে এসে এই ছবিটা দেখলাম। কিছুক্ষণ গুম হয়ে বসে রইলাম। টাইফুনের দেশে পরবাস, সারাবছরে কমপক্ষে ১০-১৫ বার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে টাইফুনের চোখের ছবি দেখানো এই আবহাওয়া-চিত্রগুলো খুব ভালোভাবেই বুঝি।

তাই রুদ্র সাইক্লোনের চোখের সম্ভাব্য পথের সামনে নিজের ওই ছোট্ট আয়তাকার দেশটুকু দেখে, ভয়ে শিউরে উঠেছি, একানব্বইর কথা ভেবে। এখনো চোখের সামনে ভাসে, পেপারে লাল কালিতে বড় বড় হরফে প্রথম পাতার অর্ধেক জুড়ে লেখা, "কাঁদো, বাংলাদেশে, কাঁদো"।

তারপর সিডর এলো। সারারাত মনের অস্থিরতা কমেনি। ভূমিতে আসতে আসতে অনেক সাইক্লোনের গতি কমে যায়, পথ বদলায়। প্রার্থনা করছিলাম যেনো সেরকম কিছু ঘটে। আমরা এমনিতেই দুর্ভাগা, আরো কতো কষ্ট সহ্য করতে হবে আমাদেরকে?
সকালে গুগল নিউজ চেক করেই বুঝতে পারি, পুরো বাংলাদেশ আহত। রেখে গেছে ক্ষত পথে পথে। গতকাল আর আজ খবরের কাগজ আর বিভিন্ন তথ্যসূত্রে যে ছবিগুলো ছাপা হচ্ছে। তাতে সহজেই বুঝতেই পারা যায়, হতভাগ্য বাংলাদেশ ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে গেছে প্রলয়।

কী করতে পারি আমরা? দুর্যোগ আসবেই, ভৌগোলিক অবস্থানটাই এরকম, কিছু করবার নেই।
কিন্তু এই মুহুর্তে কী করবার আছে আমাদের?

২.
কিছু করতে চেয়েছেন শেরিল কার্সেনব্যম ,(Sheril Kirshenbaum ক্ষমাপ্রার্থী, উচ্চারণটা কেমন হবে, আমার জানা নেই)। ডিউক য়্যুনিভার্সিটির এই মেরিন বায়োলজিস্ট তাঁর এই ভিডিও ব্লগিং পোস্টে মানবিক এই দুর্যোগে হাত বাড়ানোর একটা আহ্বান জানিয়েছেন তাঁর ব্লগের পাঠকদের প্রতি।
চোখদুটো আবার জলে ভরে গেলো, ভিডিওটা দেখে।



৩.
সুপরিচিত ব্লগার রেজওয়ান জার্মানি থেকে তাঁর এই পোস্টটিতে , যেখানে শেরিলের আহ্বানের কথাও উল্লেখ আছে, সেখানে তিনি দারুণ কিছু নির্দেশনা রেখেছেন হাত বাড়াতে আগ্রহী সহৃদয় সবার উদ্দেশ্যে। পাঠকদের সেই পোস্টটি পড়ার ও নিজেদের ব্লগে বা সাইটে কোনভাবে উল্লেখ করার অনুরোধ জানাই, যাতে ব্লগ সার্চ এর ফলাফল হিসেবে সেই নির্দেশনাগুলো উঠে আসে খুব সহজেই।
আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যা বলে, এই মুহূর্তে অর্থ বা ত্রাণ যথেষ্টই থাকবার কথা। কিন্তু জরুরি হচ্ছে সেগুলো পৌঁছুনো আর দেশের অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়বে, তা যতো কমানো যায়, সেই চেষ্টায় নিজের অংশগ্রহণ রাখা।
আর সবচেয়ে জরুরি, এই শীতের মধ্যে দুর্গতদের কাছাকাছি পৌঁছানো। সামনের শীতে মাথার উপরে ছাদ ছাড়া লাখ লাখ মানুষ থাকবেন - এটা মাথায় রাখা খুব খুব দরকার।

কীভাবে কি করা যায়, আমি জানি না।
নিরুপায় পরবাসে চোখ ভিজে যায় খুব সহজে, তাই লিখতে ইচ্ছে করলো এই লেখাটা। অর্থ-সমর্থন দিয়ে দুঃখ লাঘব হয়না, সেইটা খুব নিরুপায় একটা পথ। (আমি অর্থ-সাহায্য শব্দটি অপছন্দ করি ভীষণ )

তবু্ও বলি,
নিরুপায় অর্থ-সমর্থন দেবার জন্যে আমিও অন্যদের মতোন, রেডক্রস-রেডক্রিসেন্ট অথবা সেভ দ্য চিলড্রেন কে প্রথম পছন্দ হিসেবে মেনে নেবো। আমি জানি এখানে ভলান্টারি কাজ করে যাওয়া এনজিওতে গুলোতে কাজ করেছেন বা এখনো করেন, এরকম অনেকেই আছেন, তাঁদের কাছ থেকে কোন ধরনের তথ্যসংযুক্তি থাকলে কৃতার্থ হবো।

এইসবে কিছু হয় কি না আমি জানি না।
ফেসবুকে বা অর্কুটে গ্রুপ করে কিছু হয় না, এটা জানি - (কারো ভিন্নমত থাকলে ক্ষমাপ্রার্থী)। কিন্তু মিডিয়া কাভারেজ বা প্রচারণা খুব জরুরি - এটা বিশ্বাস করি। তাই এই বিনীত নিবেদন।

লিংক-
বাংলাদেশ রেড-ক্রিসেন্ট সোসাইটি
Bangladesh Red Crescent Society
A/C No. 01-1336274-01
Standard Chartered Bank
Dhaka Bangladesh
SWIFT Code: SCBLBDDX

Red Cross Red Cresent
সাইক্লোন সিডর এর প্রেক্ষিতে রেডক্রিসেন্ট এর আহ্বান
Save the Children
বাংলাদেশে আপনার সমর্থন প্রয়োজন
সচলায়তনে দেয়া ইশতিয়াক রউফ ভাইয়ের লিংক
Association for Bangladeshi Students at Virginia Tech
লিংক
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই নভেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৪:০২
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×