ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গতকাল বুধবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন পরিবহন মালিকেরা। সড়কের বেহাল দশার কারণে তাঁরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
গতকাল বিকেলে মহাখালী বাস টার্মিনালের মালিক সমিতির কার্যালয়ে এক সভায় সড়ক সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত এই মহাসড়ক দিয়ে ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর ও কিশোরগঞ্জ জেলায় চলাচলকারী যাত্রীবাহী পরিবহন বাস বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন সমিতির নেতারা। সভায় সভাপতিত্ব করেন মহাখালী টার্মিনাল বাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম। এর আগে গত ১২ ও ২৫ জুলাই সড়ক মেরামতের দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল বাসমালিক ও শ্রমিকেরা। পরে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের ভিত্তিতে তা স্থগিত রাখা হয়। কিন্তু গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে মহাসড়ক তলিয়ে যাওয়ায় গত মঙ্গলবার রাত থেকে যান চলাচল কমে যায়। গতকাল সকাল থেকে তা প্রায় বন্ধই হয়ে যায়।
ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-ময়মনসিংহ পথে চলাচলকারী এনা পরিবহনের স্বত্বাধিকারী খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ প্রথম আলোকে বলেন, গত জুলাই থেকে যোগাযোগমন্ত্রী এবং গাজীপুর ও ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিতভাবে মহাসড়ক সংস্কারের দাবি জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। এখন মহাসড়কের কোথাও কোথায় হাঁটুপানি জমে গেছে। এ অবস্থায় তাঁদের পক্ষে আর যানবাহন চালানো সম্ভব নয়। এই মহাসড়ক দিয়ে দৈনিক ৫০০ বাস চলাচল করে বলে তিনি জানান।
সরেজমিন: গতকাল বুধবার সরেজমিনে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তার কাছে ভোগড়া বাইপাস এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সড়কে কোমরপানি। গতকাল বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রভাব পড়ে জেলা শহরের অভ্যন্তরীণ রাস্তাগুলোর ওপর। তুলনামূলক অপ্রশস্ত এসব সড়কে ভারী গাড়ি ঢুকে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। গাড়ির চাপে দুপুরের দিকে সালনা-শিমুলতলী সড়কে একটি কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জয়দেবপুর-বোর্ডবাজার ও জয়দেবপুর-সালনা সরু সড়কে একাধিক গাড়ি ঢুকে পড়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের সাইনবোর্ড, মালেকের বাড়ি, বাসন, ভোগড়া, উল্কা সিনেমা হল এলাকা পানির নিচে ডুবে আছে। পুরো এলাকা জলমগ্ন হওয়ায় পানি সরে যাওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ভোগড়া এলাকা। স্থানীয় মুদি দোকানি মো. আকরাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এখানে রাস্তা আগে থেকেই খারাপ। তার ওপর এক সপ্তাহের বেশি সময় পানির নিচে থাকায় অবস্থা ভয়াবহ। সড়ক ঠিক না করে গাড়ি চলতে দেওয়ায় খানাখন্দ এখন ডোবার চেহারা নিয়েছে।’
সড়কের দুরবস্থার জন্য পরিবহন মালিক, শ্রমিক, যাত্রীরা গাজীপুর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতাকে দায়ী করছেন। এ ব্যাপারে খোঁজ নিতে দুপুর আড়াইটার দিকে সওজের চান্দনা-চৌরাস্তা কার্যালয়ে গেলে নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলে রাব্বেকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়
Click This Link