somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার আড্ডারা সব

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তৌহিদ ইমামের ‘রাজশাহীর সাহিত্য আড্ডা: খ-চিত্রের ল্যান্ডস্কেপ ’ লেখাটি পড়তে গিয়ে একটু নস্টালজিক হয়ে পড়েছিলাম। ১৯৯৭ থেকে ২০০২ আমার জীবনের একটা স্বর্ণ সময় কাটিয়ে এসেছি রাজশাহীতে। এ সময় সেখানকার বেশকিছু আড্ডায় আমার নিয়মিত উপস্থিতি ছিল।

আরেকটু পেছনে ফিরে যাওয়া যাক। আমার লেখালেখির শুরুটা হোমটাউন চাঁপাই নবাবগঞ্জে। একেবারে চতুর্থ-পঞ্চম শ্রেণিতে পাঠকালে। ডাইয়েরি ভরে গল্প, কবিতা,ছড়া লিখতাম, নিজে পড়তাম, কখনো বাবা, মা, বোনকে পাঠ করে শোনাতাম। আমি যখন নবম শ্রেণিতে পড়ি আমার এক দাদা ইসলামের ইতিহাসের রিটায়ার্ড প্রফেসর আবু সুফিয়ান আমাকে বললেন, ‘তোর বাবা বলল, তুই লেখালেখি করিস । চাঁপাই নবাবগঞ্জে সাপ্তাহিক সীমান্তের কাগজ নামে একটা পত্রিকা বের হচ্ছে, সেখানে লেখা দে।’ একটি ছড়া পাঠালাম, ছাপা হল। খুশিতে লাফাতে লাফাতে সবাইকে দেখালাম। সে কি আনন্দ! অতপর সে পত্রিকায় নিয়মিত লেখা শুরু করলাম, সাথে সাথে স্থানীয় বিভিন্ন ম্যাগাজিন- যেগুলো বিশেষ বিশেষ দিবসে বের হত। স্থানীয় বিভিন্ন সাহিত্য প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করে পুরস্কারও পেতে লাগলাম। আমার এক বন্ধু বলল, ‘একটা সংগঠন আছে যেখানে আবৃত্তি, সাহিত্যালোচনা, ছবি আঁকা সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রম চলে। ওখানে গেলে তুমি সহোযোগীতা পাবে।’ তখন আমি দশম শ্রেণির ছাত্র। গেলাম সংগঠনটির শুক্রবারের আড্ডায়। একটি দুশো-তিনশ বছরের পুরনো হিন্দু জমিদার বাড়ির অন্ধকার ঘরে সংগঠনটির আড্ডা চলছে। ঘরের দেয়ালে জানালাগুলো হারিয়ে গেছে। দিনের বেলাতেও মোমবাতি জ্বালাতে হয়েছে। ঘরটির সামনে ধ্বংস প্রায় একটি কালীমন্দির। জমিদারবাড়ির মালিক এখানে প্রতিষ্ঠানটিকে বিনে পয়সায় তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবার অনুমোতি দিয়েছে। এই সংগঠনটির নাম ছিল, ‘গণবচন শিল্প সংসদ’। প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি আবু বাকের। ভাল আবৃত্তি করতেন, কবিতা লিখতেন, বাম রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। প্রথম দিন সে আড্ডায় গিয়ে তার সাথে আমার পরিচয় হল। তাকে আমার কবিতা, ছড়াগুলো দেখাই। তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের প্রভাব প্রকোট, এর বাইরে মনে হয় তেমন কবিতা পড়া হয় না?’ বলতে গেলে, বাকের ভাইয়ের হাত ধরে বাংলা সাহিত্যের সত্যিকারের ঘ্রাণটা নিয়েছিলাম। প্রতিশুক্রবারে আমাদের আড্ডা চলত। আমরা আবৃত্তি চর্চা করতাম, সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করতাম। আমাদের সংগঠনের নিজস্ব কালেকশন থেকে সবাইকে পড়ার জন্য বই দেয়া হত। পরের সপ্তাহে সেসব বইয়ের পাঠপরবর্তী আলোচনা হত। কেউ নতুন লেখা আনলে তা পাঠ ও আলোচনা হত। এক সময় বাকের ভাইয়ের সাথে আমার ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। প্রায় প্রতিদিন বিকেলে কলেজ মাঠে বসে ( তখন আমি কলেজে এইচ.এস.সি.’র ছাত্র) শিল্প-সাহিত্য, বিশ্বরাজনীতি, দশর্ন নিয়ে আলোচনা করতাম। আড্ডায় আরো অনেক বন্ধু এসে জমা হত। হোসেন, শওকত, পরাগ, মোস্তাফিজার, সনি আরো অনেকে। এসময় বাকের ভাইয়ের পরামর্শে বিশ্বসাহিত্যের অনেক মাস্টারপিস পড়ে শেষ করি। পড়ি চেয়ে গুয়েভারা, কাল মার্ক্স, লেনিন, প্রীতিলতা, সূর্য সেন, সুকান্ত সহ নানা গুণি*জনের জীবনী ও সাহিত্য কর্ম। এক সময় এ আড্ডা, সাহিত্যপাঠ আর লেখালেখি এমন পর্যায়ে চলে গেছিল যে বাবা-মা আমার একাডেমিক পড়াশোনার ব্যাপারে চিন্তিত হয়ে পড়েন। মায়ের হাতে মারও খেয়েছি অনেক। এমনও দিন গেছে, আগামী কাল পরীক্ষা কিন্তু সারা দিন রবীন্দ্রনাথ বা শরৎ নিয়ে পড়ে আছি। মনে আছে এইচ.এস.সি. পরীক্ষার মধ্যে মধ্যে আমি মপাসাঁ সমগ্র’র প্রথম খ- শেষ করেছিলাম।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৯৭-এ ভর্তি হলাম। রাজশাহীতে কোথায় সাহিত্য আড্ডা হয় তার খোঁজ করতে গিয়ে জানলাম ‘রাজশাহী সাহিত্য পরিষদ’এর কথা। আড্ডা হয় রাজশাহীর প্রেস ক্লাবে। গেলাম এক শুক্রবার। সেখানে সেদিন সাহিত্য পরিষদের অনেকেই ছিলেন। পরিষদের সভাপতি ফজলুল হক, সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম সরদার, রুবিনা আনিস শিল্পী, মোস্তফা তারিকুল আহসান,জাহাঙ্গীর আলী, রজব আলি আরো অনেকে। সেখানে আমি একটা কবিতা পাঠ করলাম, আলোচক ছিলেন মোস্তফা তারিকুল আহসান। সাথে একটা গল্প নিয়ে গেছিলাম। কিন্তু পড়ার সুযোগ হল না- আরো অনেকে তাদের লেখা নিয়ে গেছিল। আমি ফজলুল হক ভাইকে বল্লাম, একটা গল্প নিয়ে এসেছি। উনি সেটা শামসুল আলম সরদার ভাইকে দিতে বললেন। রাজশাহী সাহিত্য পরিষদের আনুষ্ঠানিক আড্ডা চলত মাসের প্রথম শুক্রবার। অন্যান্য দিন কোথায় আড্ডা চলে জানতাম না। পরের মাসে প্রেসক্লাবে গেলাম, দেখি কেউ আসেনি। পরের মাসে গেলাম একই অবস্থা। বসে আছি বসে আছি কেউ আসে না। হঠাৎ কবি জাহানারা এলেন তিনিও বসে আমার সাথে অপেক্ষা করল। তিনি বললেন, নিউমার্কেটের পেছনে সাহিত্য পরিষদের অফিস। পরের দিন আমি গেলাম অফিসে ফজলুল হক সাহেবের সাথে দেখা হল। তিনি বললেন, আড্ডা এখন থেকে এখানেই হবে। আরে তোমাকে তো শামসুল আলম সরদার খুঁজছে।
- কেন?
- তুমি যে গল্পটা দিয়েছিলে তিনি খুব পছন্দ করেছেন। অন্বীক্ষার সম্মেলন সংখ্যায় ওটি ছাপা হবে। তুমি সরদার সাহেবের সাথে দেখা করো।
উনার কাছে জানতে পারলাম শামসুল আলম সরদার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের টি.এন.টি. বিভাগে চাকরি করেন। এতো আমার জন্য অনেক বড় সুযোগ- যখন তখন উনার কাছে যেতে পারব। একদিন দুপুরে গেলাম উনার কাছে। আমার পরিচয় শুনে সরদার চাচা আমাকে বসতে বললেন। কিছুক্ষণ নিজের কাজ সেরে আমাকে বললেন, ‘তোমার গল্পটা আহামরি কিছু হয়েছে সেটা বলছি না। কিন্তু লেখাটার মধ্যে তোমার সম্ভাবনার ইঙ্গিত রয়েছে। তুমি যদি লেগে থাকো, ভাল গল্প লিখতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।’ তিনি কিছু লেখকের নামের তালিকা করে দিয়ে তাদের লেখা পড়তে বললেন।
এভাবে আমার রাজশাহী সাহিত্য পরিষদের একজন হয়ে ওঠা। যত দিন রাজশাহীতে ছিলাম হক চাচা আর সরদার চাচার স্নেহ পেয়েছি। কত দিন বিরক্ত করেছি সরদার চাচাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমার লেখা নিয়ে বসেছি উনার সাথে। আলোচনা করেছেন, পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। উনি অনেক সিরিয়াস লেখক ছিলেন। তাঁর বেশ কিছু ভাল গল্প রয়েছে। মুক্তধারা প্রকাশনী থেকে তাঁর ‘পা’ নামে একটি গল্পগ্রন্থ বেরিয়েছিল। গল্পগুলো প্রশংসার দাবী রাখে। এছাড়াও তাঁর বেশ কিছু কবিতা ও গল্পের বই রয়েছে। তিনি কিছু দিন রাজশাহীর দৈনিক বার্তা’র সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন। সে সময় ‘নীল আকাশ কালো মেঘ’ নামে আমার একটি উপন্যাসিকা তিনি কয়েক কিস্তিতে সে দৈনিকে ছেপে ছিলেন। রাজশাহী সাহিত্য পরিষদের কাগজ অন্বীক্ষা’র সম্পাদক ছিলেন, সহসম্পাদক হিসেবে তার অধীনে কাজ করেছি। রাজশাহী সাহিত্য পরিষদের অফিসে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা আড্ডা হত। অনেক প্রাণবন্ত সেসব আড্ডা। হক সাহেব একটা পরিবার গড়ে তুলেছিলেন। লেখক হিসেবে উনার মূল্যায়ন করতে গিয়ে অনেকে অনেক কথা বলে কিন্তু সংগঠক হিসেবে তিনি সে সময় রাজশাহীতে অদ্বিতীয় ছিলেন। মাসউদ আহমেদের ফোনে ফজলুল হক ও শামসুল আলম সরদারের মৃত্যু সংবাদ জানিয়েছিল। এদুটি মানুষের স্নেহ সান্নিধ্যে কথা আমি কোন দিন ভুলব না।

আরেকটি আড্ডার কথা না বললে আমার রাজশাহীর আড্ডার গল্প অসমাপ্ত তেকে যাবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর দেখলাম আমাদের অনেকেই লেখালেখি করে। শেখ সফি তো প্রথম দিনই তার হেয়ার স্টাইল আর পোষাকে সবাইকে চমকে দিয়েছিল। কাজী নজরুলের মত কোঁকড়ানো বাবরি চুল, গ্রামীণ চেকের গোলাপী পাঞ্জাবি, ঘাড়ে ঝোলানো চটের ব্যাগ। অন্দিতা ইসলাম একটু পাগলাটে বেপরোয়া মেয়ে। সারা দিন ছটফট করে এখানে ওখানে ঘুরে বেড়ায় আর একে ওকে স্বরচিত কবিতা পাঠ করে শোনায়। শামীম সুফিয়ান, তার কথাগুলোই ছিল কবিতার মত, সে ভাল কবিতাও লিখত। কাওসার আহমেদ ক মাসেই জ্বালাময়ী প্রেমের কবি উপাধী লাভ করেছিল। একের পর এক সিগারেট টানত আর প্রেমের কবিতায় লেকচারের নোটখাতা ভরিয়ে তুলত। জ্যোৎস্নালিপি তখন নতুন নতুন কবিতা লিখছে, কুমার দীপ লিখছে...
প্রতমবর্ষের ক্লাস সপ্তাখানিক আগে শুরু হয়েছে। একদিন লিচু তলায় বসে অন্য সব দিনের মত সাহিত্য নিয়ে আড্ডা দিচ্ছি। আমি বল্লাম, আমরা এত জন যখন লিখি, সবাই মিলে একটা পত্রিকা করলে কেমন হয়?
সবাই বলল, ভালই তো হয়। আমাদের লেখা তো কেউ ছাপবে না। আমাদেরই আমাদের লেখা ছাপার ব্যবস্থা করতে হবে।
অনেকেই জেনেছে আমি লেখালেখি করি। কিছু লেখা এদিক ওদিকে ছাপা হচ্ছে। তারা বলল, সুমন তুমি বলো কী করা যায়।
আমি বল্লাম, পত্রিকা করার জন্য আগে একটা সংগঠন দাঁড় করানো দরকার। সংগঠনের আদর্শকে প্রতিনিধিত্ব করে এমন একটি ছোট কাগজ আমাদের থাকবে।
- কেমন আদর্শ?
-আমাদের কিছু লক্ষ্য থাকবে। আমরা পুরনোকে ভেঙে নতুন কিছু গড়ব, আমাদের সাথে তারাই আসবে যারা মুক্ত চিন্তায় বিশ্বাসী...
সবার কাছে আমার কথার চমক বেশ লাগল। সবাই উৎসাহী হল। এখন সংগঠনের নাম ঠিক করতে হবে? অনেকে অনেক নাম প্রস্তাব করল কিন্তু শামীম সুফিয়ানের প্রস্তাবিত নাম ‘কাহ্নপা’ সবার ভাল লাগল। এরপর, পত্রিকাটির নাম কী হবে? চাঁপাই নবাবগঞ্জে ‘গণবচন শিল্প সংসদ’ থেকে বাকের ভাইয়ের সম্পাদনায় পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে প্রকাশিত একটি বিশেষ সংখ্যার নাম ছিল ‘এসো রুদ্র’। নামটা আমার বেশ পছন্দ হয়েছিল। আমি এ নামটিই প্রস্তাব করি। সবাই বলে এটা আবার পত্রিকার নাম হয় নাকি। শামীম সুফিয়ান বলে, এসো বাদ দিয়ে শুধু ‘রুদ্র’ হলে কেমন হয়?
সবাই সম্মত হল। এবার আমাদের উপদেষ্টা কোন স্যারকে করা হবে, এই নিয়ে আলোচনা শুরু হল। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার আগেই আমি অনীক মাহমুদ স্যারের লেখার সাথে পরিচিত ছিলাম। তাছাড়া তিনি অল্প কদিনের মধ্যেই আমাদের সকলের প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। তিনি ছাত্রদের সাথে অত্যন্ত ফ্রেন্ডলি ছিলেন। আবার তাঁর ক্লাসও আমরা বেশ ইনজয় করতাম। সর্বসম্মতি ক্রমে স্যারকে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা করার সিদ্ধান্ত নিলাম। স্যারকে রাজি করাতে আমরা স্যারের রুমে গেলাম। স্যার সানন্দে রাজি হলেন। শুরু হল কাহ্নপা’র পথ চলা। পত্রিকা ‘রুদ্র’ বের করার আয়োজন শুরু হল। সবাই বলল এটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। সামনে কদিন পরে একুশে ফ্রেবুয়ারি। একুশে ফ্রেব্রুয়ারিতে আমরা আত্মপ্রকাশ করব। দেয়ালিকার মাধ্যম্যে আত্মপ্রকাশ করলে কেমন হয়? দেয়ালিকার জন্য লেখা নেয়া শুরু হল। অন্য বিভাগের ছাত্ররাও লেখা দিল। আমরা কাঠমিস্ত্রি দিয়ে বিশাল বোর্ড বানালাম। সেটা একটা স্ট্যান্ডের উপর দাঁড়িয়ে থাকবে। এটাকে ঠিক দেয়ালিকা বলা যায় কি না...এটা আমাদের নিজেদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি। হাতের লেখা কার ভাল? খোঁজা শুরু হল। রাজু রহমান ও কাওসার আহমেদের হাতের লেখা ভাল। তাদের দেয়ালিকা লেখার দায়িত্ব দেয়া হল। অলঙ্করণ নিয়ে যখন আমরা ভাবছি, আইডিয়াবাজ শামীম সুফিয়ান বলল, আর্ট পেপারকে আগুনে ঝলসে তাতে লিখলে কেমন হয়?
-চমৎকার।
আমি বললাম, তবে দেয়ালিকার নাম দেয়া হোক ঝলসানো পান্ডুলিপি।
বিনোদপুরের একটি মেসে দিন রাত কাজ করলাম। বারটার আগে আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে নিয়ে যাবো। শহীদ মিনারের পাদদেশে রেখে, কাহ্নপা’র পক্ষ থেকে শহীদদের স্মরণে পুস্পাঞ্জলি দিব এবং দেয়ালিকার কবিরা তাদের স্বরচিত কবিতা পাঠ করবে। এভাবে একটি ছোট-খাটো আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে কাহ্নপা’র যাত্রা শুরু হবে। আমরা ঠিক বারটার মধ্যে কাজ শেষ করে শহীদ মিনারে দেয়ালিকা নিয়ে গেলাম। শুরু হল ১৯৯৭-এর একুশে ফেব্রুয়ারিতে কাহ্নপার যাত্রা। রুদ্রে’র প্রথম সংখ্যাটি(১৯৯৯-এ) আমি সম্পাদনা করেছি, দ্বিতীয় সংখ্যাটি করে শেখ সফি। রা.বি. তে আজো কাহ্নপা অনীক মাহমুদ স্যারের নেতৃত্বে তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। স্যারের পঞ্চাশতম জন্মদিন উপলক্ষ্যে রুদ্র’র বিশেষ সংখ্যা বের করা হয় কিন্তু সেখানে কাহ্নপার ইতিহাস তুলে ধরতে গিয়ে আমাদের ছেটে বাদ দেয়া হয়। তৌহিদ ইমামের লেখাটিতেও কাহ্নপা’র আড্ডার ইতিহাসে আমরা উপেক্ষিত। এর সঠিক হেতু জানতে বড় ইচ্ছে করে। যাক সে কথা।

ঢাকায় আসার পর আড্ডা থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন আমি। সত্যি বলতে ঢাকায় সে ধরনের প্রাণের আড্ডার সন্ধান আজো পাইনি। পেলে আপনাদের জানাব।

পুনশ্চ: আর একটি কথা। এখন ঢাকা থেকে চাঁপাই নবাবগঞ্জ গেলে মহানন্দার পাড়ে দিলিপের দোকানে কুয়াশার আড্ডায় মিলিত হই আনিফ রুবেদ, জুয়েল মোস্তাফিজ, জগন্নাথ সাহা,অনন্ত আজাদ, শরিফ সামিল, আবির, শাহিন ওমর আরো অনেকে। শিল্প, সাহিত্য, দশর্ন, রাজনীতি কত না আড্ডার বিষয়বস্তু। সাথে চলে দিলিপের দোকানের চা, পান, সিগারেট। অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগলে আছে ঝাল মসলা দিয়ে বোরহানের দোকানের কালায়ের রুটি। এখন সারা বছর মুখিয়ে থাকি এ আড্ডার জন্য। কখন চাঁপাই যাবো, আড্ডা দিব মনপুরের বন্ধুদের সাথে। এ আড্ডা নিয়ে অন্য একদিন বিস্তারিত বলার ইচ্ছে থাকল।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×