দেশে সংখ্যালঘু পিটাইতে পিটাইতে ৩০% থেকে ৮% নিয়ে আসা হলেও কেউ কোনদিন এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে নি । এপর্যন্ত কোন পত্রিকা , নিউজপোর্টাল দেখলাম না যে, বাংলাদেশে বিলুপ্ত প্রজাতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কমে যাওয়া নিয়ে একটা প্রতিবেদন প্রকাশ করতে । করবেই বা কেন ? কারণ উদ্দেশ্য সফল করতে হবে তো ! এখন যদি এটাকে নিয়ে পত্রিকার পাতায় ব্যাপক আকারে আলোচনা করানো হয় তাহলে তো সারাবিশ্বের কাছে বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িকতা
র যে একটা পরচিতি আছে সেটার গোমর ফাঁস হয়ে যাবে । তাই মডারেট , কনভার্টেড , সহি , অসহি সব মুসলিমই চায় সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাগুলোকে ধামাচাপা দিতে । তাছাড়া সংখ্যালঘু নির্যাতন করলে বোনাস হিসেবে অনেক কিছুই পাওয়া যায় আমাদের এই অসাম্প্রদায়িকতার লেবাসে লুকিয়ে থাকা সাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে ।
অপরাধ করলে অপরাধিকে শাস্তি পেতে হয় সেই অপরাধ বিবেচনা করে । কিন্তু সংখ্যালঘু নির্যাতন করে অপরাধ করলে সেই অপরাধ সাত খুন মাফ । এটা প্রমান করতে বেশিদিন দূরে ফিরে যেতে হবে না । ( তনু হত্যা প্রসঙ্গটির সাথে পাবনা এওয়ার্ড কলেজের সংখ্যালঘু পরিবারের মেয়েটির গনধর্ষন এবং মনিকা সাহার দিনদুপুরে অপহরন এর ঘটনাদুটির সাথে একটু হিসেবনিকেশ করলেই বুজতে পাবেন ) অবশ্য মাঝে মাঝে দুএকটা নামে মাত্র বিচার করে পত্রিকার পাতায় ফাটিয়ে প্রকাশ করে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রমান করার জন্য উঠে পরে লাগে । সারা বছর দেশে মন্দির , প্রতিমা ভাংচুর করে দুরবিত্তদের দোহাই দিয়ে সেই খবর সবার আরাল করানো হয়, কিন্তু কোথাও কোন এক মন্ত্রি কিংবা পাতি নেতা মন্দিরে গিয়ে যদি একটা শুধু ফুলের তোরা দিয়ে মন্দিরের কোন পুরোহিতকে দিলে সেই খবর বিশালাকারে পত্রিকার পাতায় উঠে আসে । খবরের কলাম গুলো অনেকটাই এইরকম হয় , “ অমুখ মন্ত্রির অমুখ মন্দিরে এত টাকা বরাদ্দ করেছেন” । অসাম্প্রদায়িক দেশ বলে কথা !
যতই শাঁখ দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করেন না রে ভাই গোমর একদিন ফাঁস হইবই । অনলাইন তথ্য প্রযুক্তির অনেক উন্নতি হওয়ায় বর্তমানে ফেসবুকের , বিভিন্ন ব্লগ সাইট এর কল্যাণে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাগুলো সাদা কালোর মধ্যে জায়গা না পেলেও সাদা নীলের ক্যানভাসে উঠে এসে ঘটনাগুলো অনেকটাই স্পষ্ট করছে । এজন্যই যারা সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়গুলো নিয়ে একটু লেখালেখি করে তারাও এদেশের ৮০% লোকের চোখে খারাব । প্রায়ই তো ছুপা মালু বলে হ্যাসট্যাগ খেতে হয় । বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ব্যাপারগুলো নিয়ে কিছু বললেই ক্যান জানি এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ভাইয়েরা বলে উঠে “তোরা তো বাংলাদেশে সুখই আছস । পাশের দেশে মুসলিম জাতভাইয়েরা কত নির্যাতন হচ্ছে, সেই তুলনায় তোদের কিছুই হয় না ।মালুর বাচ্চা মালু, সুখে থাকতে ভুতে কিলায়”। আমি বুজি না, অন্য দেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের সাথে বাংলাদেশের কি সম্পর্ক ?
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকেরা আওয়ামীলীগ সরকারকে হিন্দুদের নাকি রক্ষাকারী, হিন্দুদের নয়নমণি , হিন্দু তোষণকারী দল বলে এতদিন মনে করে আসছিল ।সেই স্বয়ং আওয়ামীলীগ সরকারের অঙ্গসংগঠন ওলামা লীগ এদেশের হিন্দু,বুদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্যপরিষদ বন্ধের দাবি করেছে । আওয়ামীলীগ সরকার মুলত তাদের কথাগুলোই ওলামা লীগের দ্বারায় বলাচ্ছে । ভোটের রাজনীতি সবাই বুঝে । একসময় বিএনপি, জামাতের মত দলগুলো হিন্দুদের পাশে না থাকলেও আওয়ামীলীগ হিন্দুদের পাশে ছিল । কেননা ৩০% ভোট ব্যাংক আওয়ামীলীগ এর জন্য বিশাল পাওয়া ছিল । এখন দেশে হিন্দুদের সংখ্যা কমে গেছে । ৮% ভোট ব্যাংক নির্বাচনে জয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে তেমন ভুমিকা রাখে না । সবচেয়ে দুদলেরই ক্ষেত্রে ভাববার মত বিষয় হল যে, এই ৮% কে কতটা নির্যাতন করতে পারবে এবং তার ভোট ব্যাংক তার দিকে ততটা গড়াবে । তাই আওয়ামীলীগও তাদের না বলা কথাগুলো ওলামালিগের দ্বারায় বলাচ্ছে । এমনকি ওলামালিগ বলেছে ইসলাম বিদ্বেষী ব্লগারদের ধরে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা । ওয়াজ মাহফিল এর নামে অন্য ধর্মের কুৎসা রটালে,অন্য ধর্মকে গালি দিলে তখন ধর্মীয় অনুভুতি কারো আঘাতপ্রাপ্ত হয় না । কিন্তু আধুনিক সমাজের সাথে খাপ খাইয়ে চলতে বুরখার বিরুদ্ধে কথা বললে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হয় । আজকে খবরে দেখলাম বগুরার শাহজাহানপুর উপজেলার গণ্ডগ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের হরিবাসরে গনিমতের মালদের ভোগ করতে গিয়েছিল কিছু দূবৃত্ত । এরা কিন্তু দূবৃত্ত , কোন মুসলিম নয় । মুসলিম বললে আবার অনুভুতিওয়ালাদের অনুভুতি আঘাতপ্রাপ্ত হবে । সন্ত্রাসীদের কোন ধর্ম নেই, যারা এসব করেছে তারা ইসলাম ধর্মের হতে পারে না । ইসলাম এগুলোকে সমর্থন করে না । আপনি হয়ত জানেন না পাশের দেশ ভারতে সামান্য গরু খাওয়ার অপরাধে আখলাক কে মেরে ফেলেছে উগ্র হিন্দুরা । এখানে কিন্তু অপরাধীদের ঠিকই ধর্ম আছে । আসুন একটু অনুভুতিওয়ালাদের অনুভুতি যেনে নেওয়া যাক ________
(১) ভারতে গরু খাওয়ার অপরাধে আখলাক কে মেরে ফেলেছে কারা ?
উত্তরঃ উগ্র হিন্দুরা । ( অনুভূতি ফুল থ্রিজি)
(২) মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের মেরে কুটি কুটি করেছে কারা ?
উত্তরঃ উগ্র বুদ্ধরা । ( অনুভূতি ফুল থ্রিজি)
(৩) অসহায় ফিলিস্তানিদের উপর বোমা হামলা করে মুসলিমদের মেরে ফেলছে কারা ?
উত্তরঃ উগ্র ইহুদিরা । ( অনুভূতি ফুল থ্রিজি)
(৪) ইয়েমেনে বোমা হামলা করে অসহায় ইয়েমিনিদের মেরে ফেলছে কারা ?
উত্তরঃ একটু নেটয়ার্ক প্রবলেম । ( টুজি পায় , পায় না আবার । কিছুটা কিন্তু আছে )
(৫) বাংলাদেশে গতকাল বগুরায় এক নববিবাহিত হিন্দু ছেলেকে মারা হয়েছে। মেরে ফেলেছে কারা ?
উত্তরঃ rettry . data connection failed