somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডাইনী সাহারা আর কত মায়ের কোল খালি করবি ?

০৮ ই আগস্ট, ২০১১ ভোর ৬:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বঙ্গবন্ধু তাজউদ্দিনকে দূরে সরিয়ে দিয়ে মোশতাককে কাছে টেনে নিয়েছিলেন। হাসিনাও তোফায়েল, রাজ্জাক প্রমুখ পরিক্ষীত নেতাদেরকে দূরে সরিয়ে সাহারা খাতুন, ফারুক খানসহ বদমাইশগুলিকে মন্ত্রী বানিয়ে দেশের বারোটা বাজাচ্ছেন। এর মধ্যে ফারুক খান আছেন দূর্নীতি নিয়ে। সাহারা খাতুন পুলিশ ব্যবহার করে সরকারকে যতটা পারা যায় অজনপ্রিয় করে তুলছেন। লিমনের রেশ কাটতে না কাটতেই, আমিন বাজারে পুলিশের উপস্থিতিতে ছয় ছাত্র হত্যা। সেটার রেশ কাটতে না কাটতেই মিলনকে পৈশাচিকভাবে হত্যা। নিচের কবরটি দেখুন।


দৈনিক প্রথম আলো ০৮ আগস্ট, ২০১১

মারি হালা। মারি হালা। পুলিশ কইছে মারি হালাইবার লাই। তোরা মারছ্ না কা? (মেরে ফেল। মেরে ফেল। পুলিশ বলেছে মেরে ফেলার জন্য। মারিস না কেন?)’
লোকজনের জটলা থেকে কেউ একজন এভাবে বলছেন, আর কিছু লোক কিশোর মিলনকে রাস্তার ওপর ফেলে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মারছে। একজন লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি পেটাচ্ছে। একপর্যায়ে এক যুবক ইট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। মিলনের মৃত্যু নিশ্চিত হলে পুলিশ তার লাশ গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
গত ২৭ জুলাই সকালে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ঘটে এই অকল্পনীয় ঘটনা। ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, ১৬ বছরের কিশোরটিকে পুলিশের গাড়ি থেকে একজন নামিয়ে জনতার হাতে ছেড়ে দিচ্ছে। তারপর শুরু হয় কথিত গণপিটুনি। অবিশ্বাস্য এই হত্যাকাণ্ড ঘটে পুলিশের উপস্থিতিতে।
কোম্পানীগঞ্জে ওই দিন ডাকাত সন্দেহে পৃথক স্থানে ছয়জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে পুলিশ দাবি করেছিল। এর মধ্যে টেকেরবাজার মোড়ে মারা হয় তিনজনকে। তাঁদেরই একজন এই কিশোর শামছুদ্দিন মিলন। মিলনকে মারা হয় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। আর বাকি দুজনকে মারা হয়েছিল ভোরবেলায়।
মিলনকে হত্যার অভিযোগ এনে তার মা বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেছেন। এ ঘটনায় ‘দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে’ গত শনিবার রাতে কোম্পানীগঞ্জ থানার তিনজন পুলিশ সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন: উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আকরাম শেখ, কনস্টেবল আবদুর রহিম ও হেমারঞ্জন চাকমা।
মিলন কোম্পানীগঞ্জের চরফকিরা গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। সে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে, তবে এসএসসি দেয়নি। সে চট্টগ্রামে একটি কোম্পানিতে কাজ করে। কয়েক দিন আগে সে বাড়ি এসেছিল। চার ভাইয়ের মধ্যে মিলন সবার বড়। তার বাবা বিদেশে থাকেন।
মিলনকে পুলিশের গাড়ি থেকে নামানো, পিটিয়ে হত্যা এবং লাশ পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত পুরো ঘটনার ভিডিও চিত্র এখন কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্নজনের মুঠোফোনে পাওয়া যায়। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় গতকাল এর ভিডিও চিত্রের উল্লেখযোগ্য অংশ সম্পচারও করেছে।
ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, মারধরের একপর্যায়ে মিলন উঠে দৌড়ে পাশের একটি দোকানে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু উপস্থিত কেউ তাকে বাঁচাতে ন্যূনতম চেষ্টাও করেনি। এ পর্যায়ে সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা একজন ইট নিয়ে সজোরে আঘাত করেন মিলনের মাথায়। সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে মিলন। একই লোক ইট দিয়ে এর পরও মিলনের মাথায় একাধিকবার আঘাত করেন। সঙ্গে আরও কয়েকজন এলোপাতাড়ি লাথি মারতে থাকে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর মিলনের লাশ পুলিশ গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। পুরো ঘটনার সময় পুলিশের সদস্যরা গাড়ি নিয়ে উপস্থিত ছিলেন।
মিলনের মা কোহিনুর বেগম তাঁর ছেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ এনে গত বুধবার আদালতে মামলা করেছেন। মামলার আরজিতে মিলনকে আটক করে মারধর এবং পুলিশের হাতে সোপর্দ করা পর্যন্ত স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান ওরফে মানিক ও চরকাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য জামাল উদ্দিন সম্পৃক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়।
কোহিনুর বেগম উল্লেখ করেন, গত ২৭ জুলাই সকালে মিলন জমি নিবন্ধনের কাজের জন্য বাড়ি থেকে ১৪ হাজার টাকা নিয়ে উপজেলা সদরের দিকে যায়। পথে সে চরকাঁকড়া বেপারী উচ্চবিদ্যালয়ে পড়ুয়া দূর-সম্পর্কের এক খালাতো বোনের সঙ্গে কথা বলতে বিদ্যালয়ের মসজিদের পুকুরঘাটে বসে অপেক্ষা করছিল। এ সময় মানিক নামের স্থানীয় একজন মিলনকে সেখানে বসে থাকার কারণ জানতে চান।
একপর্যায়ে সেখানে আসেন স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন। তিনিও মিলনকে সেখানে বসে থাকার কারণ জানতে চান। কারণ জানালে জামাল উদ্দিন ওই মেয়েটিকে বিদ্যালয় থেকে ডেকে এনে মিলনের পরিচয় নিশ্চিত হন। কিন্তু এরপর মানিক ও জামালসহ উপস্থিত লোকজন মিলনকে চড়-থাপড় দিয়ে তার সঙ্গে থাকা নগদ টাকা ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয় এবং মিলনকে পুলিশে সোপর্দ করে।
কোহিনুর বেগমের অভিযোগ, পুলিশ আহতাবস্থায় মিলনকে হাসপাতাল বা থানায় না নিয়ে টেকেরবাজার এলাকার তিন রাস্তার মোড়ে নিয়ে যায়। সেখানে স্থানীয় লোকজন মিলনকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে পুলিশ সেখান থেকে মিলনের লাশ থানায় নিয়ে যায়।
যোগাযোগ করা হলে ইউপি সদস্য জামাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘লোকজন ডাকাত সন্দেহে ছেলেটিকে মারধর শুরু করে। আমি তাকে উদ্ধার করে সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। ওই ছেলে নিজেই হেঁটে পুলিশের গাড়িতে উঠেছে। এরপর শুনেছি, তিন রাস্তার মোড়ে লোকজন পুলিশের কাছ থেকে ছেলেটিকে নিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে জামাল বলেন, ‘আমরা তার কাছে যা কিছু পেয়েছি, তা দারোগা আকরামকে দিয়েছি। আমরা তো তাকে (মিলন) মেরে ফেলার জন্য পুলিশের হাতে তুলে দেইনি। পুলিশের কাজ তো কাউকে মেরে ফেলা না। কিন্তু তারা যদি কাউকে মৃত্যুর মুখে ফেলে দেয়, তাহলে কার কী করার আছে।’
পারিবারিক সূত্র জানায়, ওই সময় মিলন কিছু লোক তাকে আটক করেছে বলে মোবাইল ফোনে মাকে জানায়। তার মা মিলনের এক চাচাকে নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে জানতে পারেন তাকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিক উল্লাহ গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে জানান, মিলনকে ডাকাত সন্দেহেই লোকজন পিটিয়ে মেরেছে। তিনি বলেন, আদালতে করা তার মায়ের মামলার কপি এখনো থানায় আসেনি।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) হারুন-উর-রশিদ হাযারী গতকাল রোববার দুপুরে জানান, এ ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব রশীদকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামীকাল মঙ্গলবারের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এসপি হারুন-উর-রশিদ হাযারী গতকাল মিলনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। চরফকিরায় মিলনের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্য এবং ওই স্কুলছাত্রীর সঙ্গেও কথা বলেন। পরে এসপি হারুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিলন অপরাধী কি না, তা এই মুহূর্তে বলা যাবে না। আমরা সব বিষয় খতিয়ে দেখছি।’
স্থানীয় লোকজন জানান, গতকাল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় স্থানীয়ভাবে অপরিচিত কয়েকজন ব্যক্তি মিলনকে নানাভাবে ডাকাত হিসেবে চিহ্নিত করতে তৎপর ছিল।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×