somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দিল্লীর লালকেল্লায় লাইট এন্ড সাউন্ড শো!

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এর আগে দিল্লী এসে লালকেল্লা দেখা হলেও লাইট এন্ড সাউন্ড শো প্রোগ্রামটি দেখা হয়নি সময়-সল্পতার জন্য। এবার প্ল্যান করেই এসেছিলাম যে লালকেল্লা দেখার মত আর তেমন কিছুই নেই। বেশীর ভাগ অংশ জুড়েই আর্মির দখলে। তাই লাইট এন্ড সাউন্ড শো দেখবোই দেখবো। এটা দেখানো হয় সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত হিন্দিতে, ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ইংলিশে। বিকেল সাড়ে তিনটাতে রওনা দিলাম। জামা মসজিদের সামনেই লালকেল্লা। কিন্তু সেখানে পৌঁছাতেই বিকেল ৫টা সাড়ে ৫টা বে্জে গেলো। রাস্তায় প্রচন্ড জ্যাম।



লালকেল্লায় পৌঁছে টিকিট কেটে বাইরের বিশাল পরিখার ধারে কিছুক্ষন বসে থাকলাম। এক কালে এই পরিখা যমুনার জলে পরিপূর্ণ থাকতো। এখন শুখনো। ঘাসের জঙ্গলে ভর্তি। আস্তে আস্তে ভিতরে গেলাম। প্রাসাদের অলিন্দের দুধারে দোকানের সারি দেখে অবাক হলাম.





। শুধু দেওয়ানে আম দেখা যায়। তাও লোহার শিকল দিয়ে ঘেরা। আরো হাটতে হাটতে একটি খোলা মাঠের কাছে গেলাম। হয়তো কোনো কালে এখানে বাগিচা ছিলো। এখন শুধুই ঘাস। তার এক পাশে খোলা আকাশের নিচে কয়েক সারি বেঞ্চ পাতা আছে। সবাই ওখানে বসছে দেখে আমরাও গিয়ে বসলাম। সামনে দেওয়ানে খাস, মমতাজ মহল। এর পিছনেই যমুনা নদী। পূর্নিমার চাঁঁদ তখন দেওয়ানে খাসের উপরে উঁকি দিচ্ছিলো। দেওয়ানে খাসের পাশে সম্রাট আওরঙ্গজেবের তৈরী মোতি মসজিদ।



দেওয়ানে খাস। সম্রাটের আমলে এখানে খাস দরবার বসতো। এখানেই ছিলো সেই ঐতিহাসিক ময়ুর সিংহাসন। আজ শুরু এক ইটের খাঁচা ছাড়া এটা আর কিছুই নয়।



মমতাজ মহল।



মোতি মসজিদ।



নহবতখানা।

সামনে কোনো স্ক্রিন নেই। বুঝতে পারছিলাম না কি ভাবে কি দেখবো। এমন সময় চারিদিকের সব আলো নিভে গেলো। মাঝ খানের মহল থেকে গমগম স্বরে ভেসে এলো আমি মহাকাল। আমি সব সময়ের সাক্ষী। এই সেই লালকেল্লা, যেখানে সব সময় মানুষের কলরব, আরজি, বিচার, আর্তি, নুপুরের নিক্কন, সরাবের নহর বয়ে যেতো আজ সে শুধুই সময়ের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে । আজ এখানে আঁধার। কিন্তু এক সময় এখানে ছিলো মানুষের ঢল। ধারা-বর্ণনার সাথে সাথে দেওয়ানে খাস,



মমতাজ মহল, কখনো মোতি মসজিদ বিভিন্ন রঙের আলোতে ঝলমল করে উঠছিলো।









সেই সঙ্গে যমুনার জলের কুলকুল ধারার শব্দ,মিনা বাজারের মেয়েদের কাঁচভাঙ্গা হাসি,কলরব, বাইজীদের নুপুরের নিক্কন, গজলের সুর...... সময় যেন জীবন্ত হয়ে উঠলো। আর আমরা সব স্তব্ধ, পাথর। ঘোড়ার খুঁরের শব্দ এতোটাই বাস্তব মনে হচ্ছিলো যে আমরা শিউরে উঠছিলাম। একে একে দিল্লীর পতন পর্যন্ত বর্ননা করে ১ ঘন্টার অনুষ্ঠান যখন শেষ হলো। খোলা আকাশের নিচে হিমে আমাদের মাথা তখন জমে গিয়েছিলো। ফিরে এসেও পুরো রাত মুগ্ধতার, কষ্টের রেশ রয়ে গেলো।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৩
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×