somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবৈধ উপার্জনের সুযোগ ও উৎস বন্ধ করুন - মদ, জুয়া, পতিতাবৃত্তি এমনিতেই কমে যাবে ।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দুর্নীতিই বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা | আমরা যেমন অক্সিজেনের মধ্যে বসবাস করি বলে এর অস্তিত্ব অনুভব করতে পারি না, আমাদের গোটা জাতি এই চরম দুর্নীতির মধ্যে আকণ্ঠ নিমজ্জিত রয়েছে বিধায় সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এর মারাত্মক বিস্তার ও নেতিবাচক প্রভাব বুঝতে পারছি না | কিন্তু এই মারাত্মক ক্যান্সার সারা জাতি ও সমাজকে কিভাবে কুরে কুরে খেয়ে ফেলছে তা এক সময় আমরা ঠিকই বুজতে পারবো, হয়তো তখন দেরি হয়ে যাবে অনেক |

আমরা জাতি হিসেবে আসলেই চরম হিপোক্রেট | বাংলাদেশে কেউ জনগণের পয়সা লুট করলে, দুর্নীতি করে সীমাহীন অর্থ উপার্জন করলে তার স্ত্রীরাও তাকে ভগবানের চোখে দেখে | এদের চোখে মদ খাওয়া হারাম হলেও অন্যের হক মেরে দুর্নীতি ও লুটপাট করা মোটেও হারাম নয় | রমজানের সময় সিন্ডিকেট করে পণ্যমূল্য বাড়িয়ে দেয়া বা কুরবানীর চামড়ার দাম পানির মূল্যে নামিয়ে ফেলাটাও জাতির কাছে হারাম নয় | এক অর্থে দেশের অধিকাংশ জনগণেরই কোনো প্রকৃত নৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধই নেই |

এই দুর্নীতির মাধ্যমে সহজে রাতারাতি বড়োলোক হওয়ার স্বপ্ন থেকেই সবাই এখন রাজনৈতিক শক্তি বা বলয়ের মধ্যে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে | সুতরাং সুযোগসন্ধানী রাজনীতিবিদ, আমলা ও ব্যবসায়ী চক্রের কাছে আওয়ামী, বিএনপি, জামাত, জাপা বা বামপন্থী কোনো আদর্শই এখানে আর মূখ্য থাকে না | যখন যে দল ক্ষমতায় যায়, দ্রুত পোশাক পাল্টে সেই দলের ছত্রছায়ায় গিয়ে এরা লুটপাট, দুর্নীতি ও ক্ষমতার চরম অপব্যবহারে লিপ্ত হয়ে পড়ে | এদের কাছে দেশ-আদর্শ-ধর্ম সবই হচ্ছে লোক দেখানো, তার নিজের আখের গোছানোর হাতিয়ার । দেশকে সত্যি ভালোবাসলে কেউ দুর্নীতি, প্রতারণা, দেশের সম্পদ লুটপাট করে অন্য দেশে পাড়ি দেয়া, পাচার করা ও জনগণকে নিপীড়ন করতে পারতো না । বাংলাদেশের রাজনৈতিক বলয় ও এর মাধ্যমে হালুয়ারুটি অর্জনের সুযোগ সুযোগ এতই শক্তিশালী যে বাঙালিরা প্রবাসে গিয়েও দেশের রাজনৈতিক শক্তির সাথে যোগাযোগ রাখার জন্য মরিয়া হয়ে পড়ে, যার প্রভাব আমরা দেখতে পাই কিছু সংখ্যক প্রবাসীদের মধ্যেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলীয় পরিচয় তুলে ধরার প্রাণান্তর প্রচেষ্টা - অনেকটা ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতোই ।

দুর্নীতি ও লুটপাট বন্ধ না করতে পারলে এই ক্যাসিনো ফ্যাসিনো বন্ধ করে কোনোই লাভ হবে না । সমস্যাতো ক্যাসিনো নয় সমস্যা হচ্ছে টপ টু বটম লেভেলে সীমাহীন দুর্নীতি । দেশের সংখ্যা গরিষ্ট দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রাপ্য সম্পদটুকু একশ্রেণীর আমলা/রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী চক্র লুটপাট করে সেই টাকায় মদ, পতিতা ও জুয়াতে নিমগ্ন থাকে | শামীম ওসমান ও তার পরিবার নারায়ণগঞ্জের পতিতালয়গুলো বন্ধ করে দিয়েছিলো - তার পরবর্তী ফলাফল কি হয়েছিল তা অনেকেই জানেন - ওই সকল পতিতারা সমাজের যত্রতত্র ছড়িয়ে পড়েছিল | আর জনগণের কাছে প্রচুর অবৈধ অর্থ থাকায় পতিতালয়ের পরিবর্তে শহরের আনাচে কানাচে ফ্ল্যাট ও এপার্টমেন্টে গিয়ে আমোদ ফুর্তি করতে কারো কোনো সমস্যা হয় নাই | অবৈধ উপার্জনের উৎস বন্ধ না করতে পারলে এই ক্যাসিনো/ফ্যাসিনো, পতিতাবৃত্তি বন্ধ করে কোনোই লাভ হবে না | অবৈধ উপার্জনের অর্থ উড়ানোর জন্য পাবলিক ঠিকই অন্য কোনো ধরণের আমোদ ফুর্তি করার পথ বের করে ফেরবে |

মনে হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখন মনস্থির করে ফেলেছেন তিনি জুয়ার বিরুদ্ধে জিহাদ করবেন যাতে সমাজে অনৈতিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা যায় | তবে জুয়া ও অন্যান্য অসামাজিক কার্যক্রমের মূল কারণ যে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ, তার উৎস ও সুযোগ বন্ধ করার জন্য যদি তিনি কঠোর পদক্ষেপ নিতেন তবে তা আরো বেশি ফলপ্রসূ হতো | আশা করি তার এজেন্ডাতে দুর্নীতির মতো মারাত্মক সংক্রামক সামাজিক ব্যাধিটি প্রাধিকার পাবে | আর তানাহলে তার এই ক্যাসিনো বিপ্লব লেজেহোমো এরশাদের সাইকেল চালিয়ে অফিসে যাওয়া অথবা খালেদা জিয়ার ডালভাত কর্মসূচির মতোই স্বল্পস্থায়ী একটি লোকদেখানো কর্মসূচিতে পরিণত হবে |

ছবি: অন্তর্জাল
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ১:০৭
১৬টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×