হযরত সুলাইমান (আ) -এঁর রাজত্বকালে ব্যাবিলনে মানুষ যাদুর খুব চর্চা করতো। সেসব কথা মুটামুটি তিন হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস।
যাদুকরদের যাদুর প্রভাবে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে পড়তো। তখন নবুয়্যত রিসালাত এর যুগ বিদ্যমান। নবী রাসুলগণের মুজিজা এবং যাদুকরদের কৌশল এই দুই এর মধ্যে পার্থক্য করতে না পেরে সাধারণ মানুষ প্রায়ই ধোঁকায় পড়ে যেতো। অনেকেই যাদুকরকে নবী ভেবে ভুল করতো, আবার অনেকে নবীকে যাদুকর ভেবে ভুল করতো। এই বিভ্রান্তি মানুষের জন্য কষ্টদায়ক হয়ে উঠলো।
এই অবস্থায়, মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য আল্লাহ বাবিল শহরে (ব্যাবিলন) দুই জন ফেরেশতা পাঠালেন। ফেরেশতা দুজনের নাম- হারুত এবং মারুত।
তাঁরা পৃথিবীতে এলেন আল্লাহর নির্দেশে মানুষকে পরীক্ষা করবার উদ্দেশ্যে। সেই পরীক্ষার বিষয় বস্তু ছিলো- কালোযাদু। তাঁরা কালো যাদুর জ্ঞান নিয়ে পৃথিবীতে এলেন।
ফেরেশতাদ্বয় মানুষের কাছে যেয়ে বললেন নিজেদের পরিচয় এবং তাঁরা আরো বললেন তাঁদের পৃথিবীতে আসার উদ্দেশ্য কী। তাঁদের নিয়ে আসা কালোযাদুর জ্ঞানের কথাও তাঁরা মানুষকে জানালেন। তাঁরা বিস্তারিত বললেন, যারা আল্লাহ ও পরকাল চায় তারা যেন এই সমস্ত থেকে দূরে থাকে।
কিছু মানুষ সব জেনে বুঝেই এই জ্ঞান অর্জন করতে চাইলো। তারা স্বীকার করেই নিলো যে পরকালে তাদের কোন অংশ নেই! তারা যা পাওয়ার এই দুনিয়াতেই পেতে চায়!
সেই সকল লোভীদের জন্য ফেরেশতারা কালোযাদুর জ্ঞান বিস্তার করে দিলেন। সেই সব লোকেরা কালো যাদু ব্যবহার করে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাতো।
(শয়তানের আসরে সবচেয়ে বেশি বাহবা সেই শয়তান পায়। যে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটায়!)
আর যারা আল্লাহকে ভয় করলো তারা এসব থেকে দূের রইলো।
মূলত এটা ছিলো আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের জন্য পরীক্ষা। যেহেতু ফেরেশতাগণ নবী অথবা যাদুকর কোনটাই ছিলেন না, সুতরাং তাঁদের মুজিজা দেখে তাঁদেরকে নবী বলে বিভ্রান্ত হওয়ার ব্যপার ছিলো না কোন মানুষের জন্য।
অপরদিকে, যারা মূলতঃই যাদুর প্রতি আকৃষ্ট ছিলো, তারা আসলে নবুয়্যতের মুজিজায় ঈমান আনার ব্যপারে আগ্রহী ছিলো না। তারা আল্লাহর বানী নয় বরং যাদুর ক্ষমতায় আকৃষ্ট ছিলো।
আজ অব্দি ব্যাবিলন এক রহস্যময় স্থান। এখানে ঘটেছে নানা ঐতিহাসিক ঘটনা। নানা রহস্যের প্রসিদ্ধ এক নগরী এই বাবিল নগরী।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৫:১২