somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাইয়িদ রফিকুল হক
আমি মানুষ। আমি ত্বরীকতপন্থী-মুসলমান। আমি মানুষ বলে আমার ভুলত্রুটি হতেই পারে। বইপড়তে আমার ভালো লাগে। সাহিত্য ভালোবাসি। লেখালেখি আমার খুব শখের বিষয়। বাংলাদেশরাষ্ট্র ও গণমানুষের জন্য আমি লেখনিশক্তিধারণ করেছি।

জাতির মৃত-বিবেককে জীবিত করার জন্য একটি প্রশ্ন: একজন খালেদা জিয়া আর কত মিথ্যা বলবে?

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একজন খালেদা জিয়ার বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লাগাতার মিথ্যাচার ও ধৃষ্টতাপূর্ণ উক্তি সাধারণ কোনো ঘটনা নয়। বরং এর আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে পরাজিত পাকিস্তানী-হায়েনাদের দীর্ঘদিনের লালিত-স্বপ্ন।

সাইয়িদ রফিকুল হক

আপাতদৃষ্টিতে অনেকের কাছে মনে হতে পারে, একজন খালেদা জিয়ার পাগলামিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের “ইতিহাস ও ইতিহাসবিষয়ক” ঘটনাবলীর এমন কি আসে যায়। কিন্তু একটুখানি মনোযোগসহকারে চিন্তা-ভাবনা করলে দেখা যাবে, এর আড়ালে রয়েছে একটা গভীর চক্রান্ত ও সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র, এবং মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আন্তর্জাতিক দালালগোষ্ঠীর ভয়াল চক্রান্ত।
একজন খালেদা জিয়া কেন এমন করছে, অতি-সম্প্রতি তার এমন বক্তব্য দেওয়ারই বা কারণ কী? আর তাও আমাদের মহান বিজয়-দিবসের মাসে। এর পিছনে আসলে ঘটনা আছে। এর কারণগুলো এখানে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো।

সাম্প্রতিককালে পাকিস্তানের “চিরবিশ্বস্ত-এজেন্ট” একজন খালেদা জিয়ার মুক্তিযুদ্ধবিরোধী-বক্তব্যের কারণসমূহ:

১. পাকিস্তানীরা ১৯৭১ সালে রাতের আঁধারে নিরীহ-নিরস্ত্র ও ঘুমন্ত বাঙালি-জাতির ওপর ভয়াবহ ও কাপুরুষোচিত আক্রমণ চালায়। আর তারা এই জঘন্য আক্রমণ চালিয়ে সারাবিশ্বে নিন্দিত ও ঘৃণ্যজীব হিসাবে চিহ্নিত হয়। বিশ্বের সকল বিবেকবান মানুষ ও মানবতাবাদী সভ্য-রাষ্ট্র তাদের এই দুর্বৃত্তায়ন-মনোভাবের কারণে তাদের এখনও ঘৃণার চোখে দেখে। আর তারা বাংলাদেশে নয়টি মাসে লক্ষ-লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে। এগুলো বিশ্ববাসীর জানা আছে। আর এই জাতি-রাষ্ট্রের অভিভাবক ও বাঙালি-জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘোষণা অনুযায়ী সেই সময় ত্রিশলক্ষ মানুষ শহীদ হয়েছে। সারাবিশ্বে এটি সেই সময় থেকে প্রচারিত হয়, এবং এটি একসময় নির্ভরযোগ্য ইতিহাসে পরিণত হয়। আমাদের বঙ্গবন্ধু “ত্রিশলাখ” শহীদের ঘোষণাটা ভেবেচিন্তেই দিয়েছিলেন। আজকাল কোনো-কোনো অবিবেচক ও পাকিস্তানপন্থী বলে থাকে, বঙ্গবন্ধু নাকি ভুলক্রমে “তিনলাখের” জায়গায় “ত্রিশলাখ” বলে ফেলেছিলেন। এটা সর্বৈব মিথ্যা। আর এরা বাংলার মীরজাফর। তাই, সত্য-ইতিহাসকে এভাবে বিকৃত করতে চায়। বঙ্গবন্ধু সত্য বলেছেন, “ত্রিশলাখ” শহীদের সংখ্যাই যথাযথ। কিন্তু পাকিস্তান এখনও এটি মানে না, স্বীকার করে না। কারণ, এতে তাদের পাপের ইতিহাসটা বিশ্বের বুকে ভয়াবহ-রকমভাবে বেড়ে যায়। তাই, তারা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে নিহত মানুষের সংখ্যা তিন-লাখের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে চায়। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে, ১৯৭১ সালের ২৫-এ মার্চের কালরাত্রিতেই “পাকিস্তানী-হানাদারবাহিনী” নামক বিশ্বের সর্বকালের সর্বাপেক্ষা ভয়াবহ “নরপশুবাহিনী” কমপক্ষে তিনলাখ মানুষকে হত্যা করেছে। প্রথম রাতেই তারা এই তিনলাখ মানুষকে হত্যা করেছে। বাকী মানুষগুলো তারা নয়টি মাসে ক্রমান্বয়ে হত্যা করেছে। পাকিস্তানীরা “হত্যাকারী-নরপশু”। তারা এখনও মানুষ-হত্যা করতে ভালোবাসে।

২. পাকিস্তান নিজে এই কথাগুলো বললে বিশ্বের অপরাপর দেশগুলো তা বিশ্বাস করতে চাইবে না। তাই, তারা “বাংলাদেশী” নামক “পাকিস্তানী-এজেন্ট” জিয়া, সাত্তার, খালেদা ও তারেক জিয়ার মতো আগাছা-পরগাছাকে তাদের ঢাল হিসাবে ব্যবহার করছে। এরা এখন পাকিস্তানের শয়তানী-ফর্মুলাতে অগাধ বিশ্বাসস্থাপন করে তা বাস্তবায়নের জন্য দেশের ভিতরে একের-পর-এক উদ্ভট, উল্টাপাল্টা, আবোলতাবোল, আজেবাজে ও আলতুফালতু বক্তব্যপ্রদান করতে শুরু করেছে। এদেশে এখনও পাকিস্তানের অনেক এজেন্ট বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। তাদের একপ্ল্যাটফর্মে আনার জন্যই একজন খালেদা জিয়া মরীয়া হয়ে এইসব ধৃষ্টতাপূর্ণ উক্তি করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করছে না। কিন্তু এর পরিণাম যে শুভ হবে না, তা হয়তো তার জানা নেই।

৩. ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পক্ষে ছিল কতিপয় শয়তানরাষ্ট্র। এখনও তারা আমাদের দেশের মহামূল্যবান স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে নস্যাৎ করার জন্য নানারকম শয়তানীপ্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। পাকিস্তানের দালালেরা আজ সারাবিশ্বে একজোট হয়ে তাদের “বাংলাদেশী-এজেন্ট” খালেদা জিয়া-গংকে কাজে লাগাচ্ছে। তাছাড়া, ১৯৭১ সালে বিশ্বের যে-সকল পত্রপত্রিকা-নামধারী “সংবাদপত্র-আবর্জনা” আমাদের বিরুদ্ধে, এবং প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে পাকিস্তানের পক্ষে ষড়যন্ত্রে অংশ নিয়েছিল তারাও এখন সক্রিয়। তারা শয়তানী-হিসাবের “বাতিল-খাতা” খুলে বসেছে। আরে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে আমাদের দেশে, আমরা বেশি জানি, না তোরা বেশি জানিস? ওরা এখনও মাতবরি দেখাতে ব্যস্ত। আর এই সুযোগ করে দিয়েছে খালেদা জিয়ারা। তাই, এতোকাল পরে বাংলাদেশের বিশ্বাসযোগ্য ও সত্য-ইতিহাসের পৃষ্ঠা ছিন্নভিন্ন করার জন্য খালেদা জিয়ারা উঠেপড়ে লেগেছে।

৪. খালেদা জিয়া পাকিস্তানীদের হুকুমেই আজ বাংলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য নানান রকম টালবাহানা ও চক্রান্ত শুরু করেছে। আর এটি শুধু এখন একজন খালেদা জিয়ার বক্তব্য নয়, এটি আজকের দিনে পাকিস্তানপন্থী সকল বাতিলদের “শিয়ালের যুক্তি”। দেশের ভিতরে একটা গোলোযোগসৃষ্টির উদ্দেশ্যেই খালেদা জিয়া এমনটি করছে।
মিথ্যার একটা মাত্রা আছে। আর মিথ্যার শেষও আছে। অনেকেই মিথ্যা বলা ছেড়ে দেন। একসময় নিজের ভুল বুঝতে পারেন। কিন্তু খালেদা জিয়ারা কবে নিজেদের ভুল বুঝতে পারবে? আর কবে তারা মিথ্যা বলা ছেড়ে দিবে? খালেদা জিয়া মিথ্যা বলতে-বলতে নিজের জন্মতারিখ বানিয়েছে পাঁচটি! এখন পরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকেও পাঁচরকম করতে চাইছে! একজন খালেদা জিয়া আর কত মিথ্যা বলবে?
তার এই নগ্ন-চক্রান্ত এখনই রুখে দিতে হবে। কারণ, মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে আমরা কোনোপ্রকার আপস করতে পারবো না। মুক্তিযুদ্ধ আজ আমাদের জীবন ও অস্তিত্বের মূল অংশ। জেগে উঠুক মুক্তিযুদ্ধের সকল শক্তি। জয়-বাংলা।
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা।



সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫২
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

সততা হলে প্রতারণার ফাঁদ হতে পারে

লিখেছেন মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম নাদিম, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৯

বিষয়টি আমার ভালো লেগেছে। ক্রেতাদের মনে যে প্রশ্নগুলো থাকা উচিত:

(১) ওজন মাপার যন্ত্র কী ঠিক আছে?
(২) মিষ্টির মান কেমন?
(৩) মিষ্টি পূর্বের দামের সাথে এখনের দামের পার্থক্য কত?
(৪) এই দোকানে এতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০, কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×