গত 5 নভেম্বর তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার এক সামরিক হাসপাতালে 81 বছর বয়সে মৃতু্যবরণ করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী বুলেনত্দ ইচেভিত। মসত্দিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে দীর্ঘ ছয় মাস কোমায় থাকার পর তিনি মারা যান। রাজনীতিবিদ ও শাসক হিসেবে তিনি তুরস্কে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন; যার বড় প্রমাণ তিনি চারবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন।
দক্ষ ও জনপ্রিয় শাসকের পাশাপাশি বুলেনত্দ ছিলেন বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও রবীন্দ্রনাথের ভক্ত। গীতাঞ্জলির অনেক কবিতা তিনি অনুবাদ করেছেন। তরুণ বয়সে স্বপ্ন দেখতেন রবীন্দ্রনাথের হাতে গড়া বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। তার সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি, তবে পরে তিনি এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।
বুলেনত্দ 1925 সালে ইসত্দাম্বুলের এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আহমেদ ফাহারি ইচেভিত ছিলেন আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিনের অধ্যাপক, পরে সাংসদ নির্বাচিত হন। তার মা ফাতেমা নাজরি ছিলেন তুরস্কের প্রথম নারী চিত্রশিল্পী। সাহিত্যপ্রেমী বুলেনত্দ 1944 সালে ইসত্দাম্বুলের রবার্ট কলেজ থেকে সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই রবীন্দ্র সাহিত্যে আসক্ত হয়ে পড়েন তিনি। রবীন্দ্রনাথ ও তার সাহিত্যকর্মকে আরো ভালোভাবে জানার জন্য তিনি বাংলা ও সংস্কৃত শেখেন। বাংলায় দক্ষতা অর্জনের পর তিনি গীতাঞ্জলির অনেক কবিতা তুর্কি ভাষায় অনুবাদ করেন। বুলেনত্দ 1946 পরবর্তী সময়ে লন্ডন থাকাকালে তুরস্কের জনপ্রিয় পত্রিকা ইউলাসের বিদেশ সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। পরে তিনি ঐ পত্রিকায় রাজনীতি বিষয়ে কলাম লিখতে শুরু করেন। আর এ লেখালেখি করতে গিয়েই তিনি রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হন এবং দেশে ফিরে গিয়ে সক্রিয় রাজনীতি শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় 1974 সালে তিনি প্রথমবারের মতো দেশটির প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন এবং পরবর্তীতে আরো তিন দফায় এ পদে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



