ধানমণ্ডি কলাবাগান ওভার ব্রিজের পাশের গলির শেষ প্রান্তের বিল্ডিংটায় একটা ছেলে থাকে। বয়স কতো হবে, চব্বিশ কিংবা পঁচিশ। ছেলেটার পৈতৃক নাম মুহাব্বত। গ্রামে সবাই তাকে ওই মুহাব্বত নামেই ডাকে। নামের মধ্যেও যে একটা ব্যাপার থাকে, এই ব্যাপারটা মুহাব্বত যখন বুঝলো তখন সে তার মা-বাবার ওপর ভীষণ ক্ষেপে গেলো। বাবার সামনে দাঁড়াতে না পারলেও একদিন সে তার মায়ের কাছে এসে বললো, মা, বাংলা অভিধানে কি শব্দের সংকট পড়ছিলো? কি নাম রাখছো এটা, মুহাব্বত। মুহাব্বত কোন নাম হলো? আদিম আমলের নাম। এই নাম আধুনিক যুগে বেমানান।
তার মা বললেন, নামের আবার মানান বেমানান কি রে। নাম একটা হলেই হলো। নাম হলো পরগাছা। সে বাঁচে কর্মের ওপর। নাম নিয়ে চিন্তা ফিকির না করে কর্মের ওপর মনোযোগ দে। পড়াশুনা ঠিকমতো কর।
মুহাব্বত এসব শোনে না। সে জীবন দেবে তবু এই নাম বহন করবে না। টানা দু’ দিন সে মুখে দানাপানি কিছু তুললো না। তার মা শেষমেশ বাধ্য হয়ে মুহাব্বতকে কেটেছেটে তার নাম রাখলো মুহিব। গ্রামে যদিও মুহিব নামটা এখনো প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি, কিন্তু ঢাকা শহরে মুহাব্বতের এই পরিবর্তিত মুহিব নামটা ঠিকই স্বমহিমায় বিচরণ করছে। ঢাকায় বিশেষ দু’ একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু-বান্ধব ছাড়া মুহাব্বত নামে তাকে কেউ এখানে চেনে না। মুহিব সেই দু’ একজনের মুখেও বিশেষ কায়দায় তালা লাগিয়ে দিয়েছে। মুহাব্বত নামটা সে ভুলেও তালামুক্ত হতে দেয় না। মুহাব্বত এখানে অবাঞ্চিত।
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই (উপন্যাস)
ঘাসফুল প্রকাশনী (স্টল নং-১৩৭)
লিটল ম্যাগ চত্বরে- স্টল নং-২৩
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৭