somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নাঈম মুছা
সুবোধ আমি। তবে পলায়নরত। কারন সময় আমার পক্ষে না। জীবন আমার সঙ্গে না। আগে কোথাও থিতু হই। তখন পরিচয়টা জানাব। ধন্যবাদ এখানে ঢু মারার জন্য। মোর নির্জীব ব্লগবাড়িতে আপনাকে স্বাগতম।

আবেগের রকমফের

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শেষ বিকেলের সূর্যটা এখনও চেষ্টা করছে বিকিরত হতে যদিও একটু পরে অস্তমিত হয়ে যাবে। জানালার পর্দাটা সরিয়ে দিয়ে বসলাম, যাতে করে সূর্যের শেষ বিকিরণটা ভালোমত নজরে আসে। সারাদিন ও সারারাতের মধ্যে কয়েকটি আবেগঘণ মূহুর্ত আছে। পড়ন্ত বিকেলটাও এর মধ্যে অন্তর্গত। এই ধরণের মূহুর্তগুলো জীবনের পাতাকে সামনে মেলে ধরে অবলীলাক্রমে। বর্তমানের অনুভূতিটা এমন, ছোটো ছিলাম, বড় হচ্ছি, বড় হবো, বুড়ো হবো এবং মারা যাব। ভাগ্যের লিখন অন্যথা হলে কাহিনিটা অন্য রকম। আপাতত সেটা নিয়ে ভাবছি না।
.
কিছুদিন আগে একজন জিজ্ঞাসা করেছিল, আপনার শখ কি? উত্তরে বলেছিলাম, প্রিয়জনদের কাছে ডাকযোগে চিঠি লেখা। আদতে আমার সেরকম কোনো প্রিয়জন নেই এবং আমি এমন করে কারো কাছে চিঠিও লিখি না। তবুও তার ঐ কথার মধ্যে কেমন একটা বিশেষ আবেগ ছিল। আর তার আবেগে ঢেউ খেলানোর জন্য রঙচঙ লাগিয়ে কথাটা বলেছিলাম। যাতে করে মনে মনে সে পুলকিত অনুভব করে। আবেগপূর্ণ প্রশ্নের আবেগপূর্ণ উত্তর। মানুষের শখ থাকতে হয়, শখটা হতে হয় আবেগপূর্ণ, সাধারণ কোনো কাজের থেকে আলাদা। এ যেন এক অলিখিত আইন। আসলে শখের উৎপত্তিটাও আবেগজনিত একটি ব্যাপার। আবেগের কথা বলতে গিয়ে আবার প্রিয়জনের কথা চলে আসল। এটাও আবেগের পরম্পরা।
.
কেউ একজন লিখল,সুন্দর করে কাঁদানোর জন্য প্রিয়জনেরাই যথেষ্ট। কথাটি সত্য। সম্পর্কের মধ্যে আবেগ না থাকলে প্রিয়জন সৃষ্টি হয় না। আবার প্রিয়জনেরাই আবেগ নিয়ে খেলা করে আমাদেরকে কাঁদায়। আবেগ কথাটির সৃষ্টিও আবেগ থেকে। আবেগ না থাকলে মনের মধ্যে অনুরণ সৃষ্টি হয় না। আর মনের মধ্যে অনুরণের উদগীরণ না ঘটলে শব্দের আঁকিবুঁকিও তৈরি হয় না। আর শব্দ সৃষ্টি না হলে ভাষার উদ্ভবও অসম্ভব। যারা কথায় কথায় বিবেকের দোহায় দিয়ে আবেকগে দূরে ঠেলে দিতে চায় তারাও জীবনের কোনো না কোনো অংশে আবেগের কাছে নতী স্বীকার করে। আমরা সবাই আবেগের কাছে ধরাশায়ী। আবেগকে প্রশ্রয় না দিতে পারা মানুষের সংখ্যাটা নেহায়েতই কম তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সৃষ্টিশীল সবকিছুই আবেগ মিশ্রিত।
.
শিল্পীর তুঁলি হতে শুরু করে কামারের হাঁতুড়ির বাড়ির মধ্যেও আবেগের বহমানতা বিদ্যমান। আমরা আবেগকে সম্বল করে বেঁচে থাকার অবলম্বন খুঁজে বেড়াই। আবেগ ছাড়া আমাদের জীবন নিরর্থক। আমাদেরকে শুধু নিরেট আবেগ ও বাস্তবতা মিশ্রিত আবেগের পার্থক্য নিরুপণ করতে শিখতে হবে। কারণ বেশী মাত্রার নিরেট আবেগ অনেকাংশে ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়ায়। আর বাস্তবতা মিশ্রিত আবেগটা সবসময় আমাদের ভিতরের প্রকৃত আমিকে সুন্দর রুপে ফুটিয়ে তোলে। প্রতিটা কাজকে সুচারুরূপে সম্পন্ন করতে সাহায্য করে। সুতরাং, বাস্তবতা থেকে আবেগকে একেবারে পৃথক করে ফেলাটা বোকামির কাজ হবে। অনেকটা কাটখোট্টা মরুভূমির সমতুল্য হয়ে যাবে তখন। স্বল্পমাত্রার আবেগ ছাড়া কোনো কিছুতে সৌন্দর্য আশা করা যায় না।
.
সূর্যটা এতক্ষণে ডুবে গেছে। পর্দাটা টেনে দিলাম। তবে সূর্যাস্তের সাথে সাথে আমার ভিতরকার আবেগটাও অস্তমিত হয়ে যায় নি। জিইয়ে রেখেছি সযত্নে। কারণ এটা ছাড়া জীবন কল্পনা করা অযৌক্তিক। আমাদের মৃত্যুর সাথে সাথে আবেগেরও মৃত্যু ঘটবে। ততদিনে চাইলেও আমরা আবেগ থেকে পৃথক হতে পারব না। যতদিন আবেগ আছে ততদিন আমরা আছি। আবেগ নির্ভর এ জীবনে এটাই একমাত্র পাওয়া।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৩৮
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×