somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জনগনের বন্ধু পুলিশ !!!

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পৃথিবীর সর্বত্র কি পুলিশ এমন ! ইতিহাসে দেখা যায় সর্বযুগে সর্বখানে পুলিশের নির্মম পেষনে পিষ্ট হয়েছে মানুষ ।

আমরা যদি ভারতের নকশাল আন্দোলন দেখি, তাহলে দেখব সমাজ বদলে দেয়ার শপথে মাও সে তুং, মার্কস, লেনিনদের মতবাদে বিশ্বাসী হয়ে উৎসাহিত হয়ে কতগুলো তরুন এক আন্দোলন সূচনা করেছিল । হয়তো তারা অবুঝ ছিল, হয়তো তারা অপরিপক্ক ছিল, হয়তো নিজেদের সামর্থ্য সম্পর্কে তাদের জ্ঞান ছিল দূর্বল । কিন্তু সেই তাদের সেই সমাজ বদলানোর আন্দোলনকে শাসকগোষ্ঠীর প্ররোচনায় পুলিশের নির্মম অত্যাচারে বোতলবন্দী করা হল ।

শত শত তরুনকে পাখির মত গুলি করে মারা হল । হাজার হাজার তরুনকে বিকলাঙ্গ, পঙ্গু, মানসিক বিকারগ্রস্থ করে দেয়া হল । লাখ লাখ মানুষ হল গৃহহীন, সমাজ ছাড়া ।

জারের শাসনামলেও একই ভুমিকা নিয়েছিল সে সময়ের রাশিয়ার জারের পেটোয়া বাহিনী, তথা পুলিশ । বিনা বিচারে আন্দোলনের সমস্ত পথ রুদ্ধ করে দিয়েছিল ক্ষমতালোভী শাসিতের উস্কানিতে ঐ পুলিশ ।

ম্যাক্সিম গোর্কী তার কালজয়ী উপন্যাস মা প্রবন্ধে এই পুলিশদের নিয়ে চমৎকার বর্ননা দিয়েছিলেন,
"ওরা(পুলিশরা) আমাদের মতোই মানুষ । বরং বুদ্ধি নেই বলে ও আরো দুর্ভাগা, বঞ্চিত । পুলিশ-গোয়েন্দারা আমাদের শত্রু । ভাইকে দিয়ে ভাইকে ঠ্যাঙ্গাচ্ছে রক্তচোষারা । রক্ত শুষে শুষে খাচ্ছে ওদেরও । ওদের(অত্যাচারী শাসক) হাতে কাঠ, পাথর যা ওরাও তা । বন্দুক, লাঠি ইত্যাদি দিয়ে ওদেরকে ভাইয়ের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে ওরা । জাঁক করে বলছে ওই নাকি রাষ্ট্র ।"

এমন ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে ভুরি ভুরি পাওয়া যায় । এটা শাসকগোষ্ঠীর 'বিভাজন পদ্ধতি' । ক্ষমতার মসনদ পাকাপোক্ত করার জন্য অত্যাচারের ষ্টীমরোলার চালিয়ে বিপর্যস্ত করে তোলে জনজীবন । একজনের হাতে অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে অপরজনকে দমিয়ে রাখার কৌশল । ফলে যখন বিপদ ঘনিয়ে আসে, যখন শাসকের বিদায় ঘন্টা বেজে উঠে তখন পলায়নপর শাসক হয়তো রক্ষা পেয়ে যায় । কিন্তু ঐ ব্যবহৃত পেটোয়া বাহিনী আর রক্ষা পায় না ।
এটাই নির্মম সত্য ।

আমাদের বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায়ও একই ঘটনার প্রতিফলন চোখে পড়ে । ভিন্ন মতবাদ, ভিন্ন মতাদর্শের বলি হয়ে আজীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরন করছে অগনিত তরুন । অসংখ্যা পরিবারে নেমে আসছে শোকের ছায়া । গগনবিদারী আহাজারীতে ভারী হচ্ছে চারপাশ ।

আমি ব্যক্তিগত ভাবে তরুন-যুবক-কিশোরদের জন্যই অধিক শোকগ্রস্ত হই । অনাবিল আগামী কোন অধিকার বলে তার থেকে কেড়ে নিয়ে তাকে সমাজের আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলা হয় ?
তার নির্মল বেঁচে থাকাকে কোন অধিকারে এমন বিরক্তিকর করে তোলা । যখন দাপিয়ে পুরো পৃথিবী চষে বেড়ানোর কথা তখন কেন তাকে বিছানার এক কোনে গুটিশুটি মেরে পড়ে থাকতে হয় ? কেন তাকে অকালে পরগাছার মত পরের উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকতে হবে ?

কেন বাবার কাঁধে লাশ হয়ে তার যেতে হবে ? কেন নববধুর মেহেদি শুকানোর আগেই তার স্বামীকে জেল থেকে ছাড়ানোর জন্য উকিলের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াতে হবে ? কেন নবজাতক তার রাজবন্দী বাবার সমাজবিরোধীর ছেলে তিলক লেপে দুনিয়ায় আসবে ? কেন ? কেন ? কেন ?

পুলিশের এই নির্মম, হৃদয়হীন, পিশাচতুল, হিংস্র অত্যাচারের বলি আমি না হলেও আমার আত্মীয়, আমার স্বজন, আমার প্রতিবেশী, আমার পাড়াতো ভাই কেউ না কেউ অহর্নিশ হচ্ছে ।
আমি আজ না হলেও কাল যে হব না তার নিশ্চয়তা কি !

পুলিশের কি এত কঠোর না হলেই নয় ! তাদের কি মা-বাবা, ভাই-বোন নাই ! তাদের হৃদয়ে কি স্নেহ-প্রীতি-মমতা নাই !
কে জানে !

যদি সমাজের কখনো মনে হয় যে এ দল বিপথগামী, এই তরুনরা অবুঝ । তাহলে তাদের বুঝিয়ে, যুক্তির নিরিখে তাদের কি ফিরিয়ে আনা যায় না !

অবশ্যই যায় । কিন্তু অত্যাচারী শাসকগোষ্ঠী ভুলেও কখনো এ কাজ করবে না । কারন, তাদের উদ্দেশ্য কখনো সমাজের ভালো করা নয় । ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে সমাজকে নিয়ন্ত্রন করে তার থেকে ফায়দা লুন্ঠন করা ।

আর এজন্য তারা ব্যবহার করে হাতিয়ার স্বরুপ লাঠিয়াল পেটোয়া বাহিনী । যারা শিক্ষায়-দীক্ষায় সমরশস্ত্রে সুসজ্জিত । যাদের আমরা বলি জনগনের বন্ধু পুলিশ !!!
যাদের নিজের ভাইয়ের রক্তে নিজ হাত রঞ্জিত করতে কখনো হাত কাঁপেনি, কাঁপবেও না । আজো কাঁপছে না ।


__________####_________
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×