৪৩ বছরে বাংলাদেশ। আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম? যে হারে কোটি পতি বাড়ছে সে হারে সরকর কর আদায় করতে পারছে না।নরওয়েতে আয়ের ৫০% কর দিতে হয়! দিনকে দিন গরীবের সংখ্যা বাড়ছে। ভাবতে পারি না ৭ % লোক কর দেয়! ১৬ কোটি মানুষের দেশে! ২ লাখ ৬০ হাজার টাকার বেশী আয় করলে সরকারকে কর দিতে হবে। সে হিসাবে কত জন কর দিতে পারে?
দেশে কোটিপতির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে শুধু বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে কোটিপতি আমানতকারী রয়েছেন ৪৯ হাজার ৫৫৪ জন। এর বাইরে আরও কয়েক লক্ষাধিক রয়েছেন কোটি টাকার সম্পদের মালিক। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে গত চার দশকে কোটিপতির সংখ্যা বৃদ্ধির চিত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রতিবার ক্ষমতার পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে দুই থেকে তিনগুণ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে এমন সংখ্যা ৪৯ হাজার ৫৫৪।
২০১৩ সালের জুন শেষে ব্যাংকিং খাতে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ৪৬ হাজার ১৩৫ জন।
গত ৬ মাসের ব্যবধানে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৩ হাজার ৪১৯ জন।
২০০৯ সালে কোটিপতি ছিল ২৩ হাজার ১৩০ জন।
গত পাঁচ বছরে কোটিপতি আমানতকারী বেড়েছে ২৬ হাজার ৪২৪ জন।
১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতির সংখ্যা ছিল মাত্র পাঁচজন।
১৯৭৫ সালের ডিসেম্বর-এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৭ জন।
জিয়াউর রহমান সরকারের আমলে (ডিসেম্বর ১৯৮০) এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৮ জনে।
তখন তাদের আমানতের পরিমাণ ছিল ব্যাংকিং খাতের মোট আমানতের ১০ শতাংশ।
এরশাদ সরকারের পতনের সময় ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৪৩ জন ও আমানতের পরিমাণ দাঁড়ায় ১২ শতাংশ।
খালেদা জিয়ার প্রথম শাসনামলে ১৯৯৬ সালের জুনে কোটিপতির মোট সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৫৯৪ জন ও আমানতের পরিমাণ ছিল প্রায় সাড়ে ২০ শতাংশ।
শেখ হাসিনার প্রথম শাসনামলে ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর শেষে কোটিপতির মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৫ হাজার ১৬২ জন।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে (অক্টোবর ২০০১-ডিসেম্বর ২০০৬) কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার ৮৮৭ জন।
২০০৭-০৮ সময়কালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ৫ হাজার ১১৪ জন
২০০৮ সালে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে এক কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হিসাব সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার ১৬৩টি।
২০০৯ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোতে এক কোটি টাকার ওপরে হিসাব সংখ্যা ছিল ২৩ হাজার ১৩০টি।
২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষে এর সংখ্যা দাঁড়ায় ২৯ হাজার ৫৩৭টি।
২০১১ সালের ডিসেম্বরে শেষে এক কোটি টাকা লেনদেন হিসাবের সংখ্যা ছিল ৩৫ হাজার ৬৯৮টি।
২০১২ সালে ব্যাংকগুলোতে এক কোটির ওপরে থাকা হিসাব সংখ্যা ছিল ৪৩ হাজার ৭১২টি।
আজ চিৎকার করে বলতে চাই বাকশাল তুমি কোথায়? কোথায় তোমার সেই কোটি পতির সীমারেখা?
বঙ্গবন্ধু যে বাংলাদেশ চায় নি আমরা সেই বাংলাদেশ গড়ে চলেছি!
ক্যাটেগরি: অর্থনীতি