somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আধুনিক জমানায় ইসলামের শান্তির সুশীতল ছায়াতলে বিধর্মী, অবিশ্বাসীদের ডাকার কিছু কার্যকরী রূপ ও পন্থা

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আধুনিক জমানায় ইসলামের শান্তির সুশীতল ছায়াতলে বিধর্মী, অবিশ্বাসীদের ডাকার কিছু কার্যকরী রূপ ও পন্থা:

১. প্রথমেই প্রচুর মূর্তি ভাঙতে হবে। পূজার সময় আসলেই দলে দলে মণ্ডপে আক্রমণ করে মূর্তি গুড়িয়ে দেওয়ার পর দেখবেন এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ইসলামের মাহাত্ব বুঝতে পেরে পরদিন এলাকার ইমাম সাহেবের নিকট এসে কালেমা পরে ইসলাম গ্রহণ করছে।

২. হিন্দু বাড়ি দেখলেই লাঠিসোটা নিয়ে নেমে বাড়ি গুড়িয়ে দিয়ে লুটপাট করে ফেলতে হবে। সেই হিন্দুরা পালিয়ে ওপাশের বর্ডারে গিয়ে মোসলেমদের চরিত্রের মাহাত্ব বর্ণনা করে গোটা হিন্দুস্তানে ইসলাম কায়েম করবে।

৩. অনলাইনে, ফেসবুকে পূজা সংক্রান্ত কোনো খবর প্রকার পেলেই তার কমেন্ট বক্সে গিয়ে দেবদেবীদের নোংরা ভাষায় গালাগাল করতে হবে। নিজেদের দেবদেবীদের এমন অপমান দেখে বিধর্মীরা ইসলামকে সত্য ধর্ম হিসেবে মেনে নিবে, আল্লাহর প্রশংসায় নিজেদের বিলিয়ে দিবে।

৪. ওয়াজ মাহফিল বড় হাতিয়ার। পুরো অঞ্চল মাইকের আওতায় আনতে হবে, সর্বকর্নে আলেমের আলাপ পৌঁছাতে হবে। সেই আলাপে ইসলামে কখন কখন গোসল ফরজ, স্ত্রীকে কিভাবে আয়ত্তে রাখা যায় সেইসব বিষয়ে গুরত্ব বেশি দিতে হবে। আলাপ জমে উঠলে এইবার বিধর্মীদের দিকে মাইক তাকে করুন, তাদের রাতেরঘুম হারাম করুন, গলাবাজি করে তাদের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করুন, মূর্তিপূজা নিয়ে প্রচুর হাস্যরস করুন। ঠিক কিনা করে চিল্লান মারবেন, দেখবে মাহফিলের পিছন থেকে শত শত বেধর্মী 'ঠিক' বলে চিৎকার মেরে মঞ্চে এসে কালেমা পড়ছে বুজুর্গ আলেমের কাছে।

৫. নাসতিক দেখেলেই কথা নাই, শুধু কতল চলবে। তাদের হেদায়েত হওয়ার দরকার নাই, তাদের সাথে লজিক নিয়ে বসার দরকার নাই যেমন করে বসতেন ইমাম আলী (রা), আমরা আধুনিক যুগের মোসলেম। আমাদের কাছে আসমানী বাণী এসেছে নাস্তেক মানেই কতল। নাস্তেকরা কেন নাস্তেক সেই যুক্তি খণ্ডন থেকে কম সময়ের কাজ তাদের কতল করে দেয়া কারণ তাদের সংখ্যা হাতে গোনা। আরোজ আলিদের তখনকার মূর্খ মোসলমরা কেন যে বাঁচিয়ে রেখেছিলো কে জানে!

৬. কোনো মেয়ে বোরখা-হিজাব না পরে থাকলে, নিজের লালসকে মুখে এনে লালা ছিটিয়ে নোংরা কথা দিয়ে ওই মেয়ের চরিত্র হনন করতে হবে। মেয়েটি সাথে সাথেই পর্দার মাহাত্ব ও গুরুত্ব বুঝতে পেরে অনলাইনে এক সেট হিজাব অর্ডার দিয়ে দিবে। কেন জুব্বা পড়া কম বয়সী নিষ্পাপ বাচ্চারা মাদ্রাসায় বলাৎকার (!) হয় সেই আলাপ আমরা কজন করবোনা, করতে দিবো'ও না।

৭. আকাশে বাতাসে অলৌকিকতা খুঁজতে হবে। অস্বাভাবিক কিছু দেখা মাত্রই জোরে তাকবীর দিতে হবে। যেমন, বন্যায় সব ভেসে গেছে, কিন্তু মসজিদ টিকে আছে। এমন ভিডিও প্রচুর শেয়ার দিতে হবে। তখন বিধর্মী কেউ, বন্যায় শিব মন্দির টিকে থাকার ভিডিও প্লট শেয়ার দিলে তার কমেন্টে গালি দিতে হবে, এতে সে নিজের ভুল বুঝতে পেরে তৎক্ষণাৎ ইসলামে রূপান্তর হবে। মাংসের টুকরা, গাছের পাতা কিংবা মেঘের মাঝে কালেমা লেখা দেখা মাত্রই ছড়িয়ে দেবেন, কারণ ইসলামে ধর্ম প্রকারে অলৌকিকতার বিকল্প নেই। বিজ্ঞান ও আবিষ্কারের গুষ্টি**

৮. ইসলাম প্রচারে স্প্যামিং এর বিকল্প নেই। সানি লায়ন হোক, নোরা ফাতেহি হোক, খেলার নিউজ হোক, কমনেতে গিয়ে আল্লাহর ৯৯ নামের গুণাবলী বলে আসতে হবে। আপনার উছিলায় কেউ এই নাম সমূহ পড়া মাত্রই আপনি একজন হুর নিশ্চিত করে ফেললেন, সাথে বিধর্মী কেউ এই সকল নামের গুরুত্ব বুঝতে পেরে ধর্মান্তরিত হবে নিশ্চিত ভাবেই।

৯. মাজারে অগাধ বিশ্বাস রাখতে হবে। কারণ এই মাজারই আপনার ও বিধর্মীদের এক কাতারে আনে। তারা যখন দেখবে আপনিও তাদের মতন কবরের সামনে সিজদা দিচ্ছেন, তারা বুঝতে পারবে আপনার সেজদায় সত্য সেজদা, বিধর্মী যখন আপনার তরিকায় চলে আসবে।

১০. মনে রাখতে হবে, ধর্ম প্রচার আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য নয়, আমাদের মূল উদ্দ্যেশ্য শর্টকাটে জান্নাত যাওয়া এবং অপেক্ষমান হুরদের অপেক্ষার অবসান ঘটানো। সৃষ্টি রহস্যের সমাধানের সময় আমাদের হাতে নেই, হায়াতের ভরসা নেই। তাই, বিধর্মীদের আর অবিশ্বাসীদের একাধারে গালাগাল, আর মারের উপর রাখতে হবে। এই ধারা বজায় রাখলে উপমহাদেশে, বিশ্বে ইসলামের জয় সুনিশ্চিত।

পরিশেষে, জাহান্নামে কোন তিন শ্রেণীর মানুষ সবার আগে প্রবেশ করবে তা জানতে হবে। তারা কি নাস্তেক? তারা কি বেইশ্যা সমাজ? তারা কি হোমো? তারা কি ইহুদি নাসেরা? তারা কি পোত্তলিক? তারা কি বেপর্দাশীল নারী? তারা করা?
জানার পর চুপচাপ থেকে উপরের আমল গুলো কক্ষ বন্ধ করে পালন করতে হবে, বহুত ফায়দা হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:২৫
১৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×