১৫ তারিখ থেকে ২১ তারিখ লকডাউনের ছুটি ঘোষনা করা হয়েছে। যাক বাবা হাফ ছেরে বাঁচলাম। কটা দিন নির্বিঘ্নে থাকা যাবে। তড়িঘড়ি একটা তালিকা তৈরি করে ফেললাম। লকডাউনের এই মহানন্দের ছুটিতে কি কি করা যায়!
তালিকা করতে গিয়ে দেখি এত অল্প সময়, কাজ তো অনেক; কিভাবে করব? ঈদ করতে গ্রামের বাড়ীতে যাওয়া। আত্নিয় স্বজন-বন্ধু বান্ধবের খোজ খবর নেয়া। ঈদের কেনাকাটা করা। আরো কত কাজ!
সরকার হিসাবে ভুল করে ফেলেছে ছুটির সময়টা আরেকটু বাড়িয়ে দেয়া উচিৎ ছিল। এতদিন পরে ইচ্ছেমত জীবন যাপনের সুযোগ অথচ সময় মাত্র আট দিন! এ বড় অন্যায়!
অবশ্য চাইলে নিতিনির্ধারকদের কাছে একটা আর্জি জানানো যায়। আর তাঁরা সেটা হয়ত বিবেচনাও করতেন কারন তারাও নিশ্চয়ই আমাদের মত করেই ভাবেন নয়ত এই সময়ে আগুনে ঘি ঢালার মত করে কি আর লকডাউন শিথিল করেন? যেখানে সবাই ভাবছিল কারফিউ দেবে সেখানে একেবারে ছুটি! আমার মত আহাম্মকদের জন্য এ যেন মেঘ না চাইতেই জল।
যা হোক সুযোগ যখন এসেছে তখন তার যথাযথ সদব্যবহারই বুদ্ধিমানের কাজ। এ কটা দিন ইচ্ছেমত খেলব, ঘুরব, আড্ডা মারব। যা ইচ্ছে তাই করব। বেশি বেশি করব। স্বাদ মিটিয়ে করব। জানি তো ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ফের লকডাউন জারি করা হয়েছে।
অতএব এই সময়ের মধ্যে অসুস্থ্য আত্মীয় স্বজনকে দেখতে যাওয়া থেকে শুরু করে যত যা করার সব কাজ শেষ করে ফেলতে হবে।
অতঃপর? নিতীনির্ধারকদের মত বসে বসে জেলা শহরগুলো থেকে ভাইরাস বয়ে নিয়ে আশার পর তুলনামুলকভাবে কম আক্রান্ত ঢাকার মানুষগুলোর ত্রাহী অবস্থা দেখব, দেখব মৃত্যুর মিছিল। হাসপাতালের বীভৎস চিত্র দেখব, চিকিৎসা না পেয়ে অক্সিজেনের অভাবে মানুষকে মরতে দেখব, টেলিভিশনে টক শো'তে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ শুনব। ওয়াল্ডোমিটারে আক্রান্ত আর মৃত্যুর পরিসংখ্যানে বিশ্বে ১০ নাম্বার থেকে কতটা উপরে উঠতে পেরেছি সেটা জানব।
অবশেষে একদিন আমি নিজেই ছবি হয়ে ঘরের কোন এক দেয়ালে কিছুদিনের জন্য ঝুলে থাকব। তারপরে মুছে যাব এক সময় সকল দেয়াল থেকে!
এত দায়িত্বহীনতা, এত অবিবেচনা, এত অভব্যতা, এত স্বার্থপরতা এর ফল ভোগ তো করতেই হবে। মহান আল্লাহ্ সয়ং বলেছেন, “তোমাদেরকে যেসব বিপদাপদ স্পর্শ করে, সেগুলো তোমাদেরই কৃতকর্মের কারণে। আর অনেক গুনাহ তিনি (আল্লাহ) ক্ষমা করে দেন।” (সুরা শুরা : ৩০)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:৩০