ব্লগ এর সম্মানিত একজন ব্লগার কোটা ভিত্তিক নিয়োগের ফলে চাকুরি পাচ্ছেন না বলে পোস্ট করায় আমাদের আরেকজন বিজ্ঞ ব্লগারের চেতনাতে তা আঘাত হানে। সেই নিয়েই কিছু বলার প্রচেষ্টা।
প্রথমেই বলে নেই অনেক জ্ঞানী গুনিদের মাঝে আমি নগন্য একজন। যেই দুইজন ব্লগার এর ভুমিকা নিলাম তাদের থেকে বয়সেও অনেক তরুন। তাই ভুলত্রুটি অবশ্যই মার্জনীয়। আর অনেক অল্প সময়ে লিখা তাই টাইপো থাকার সম্ভাবনা অনেক।
কোটা থাকার ফলে মেধাবীরা চাকুরী পায় না ব্যপারটা পুরোপুরি সত্য না হলেও আংশিক সত্য এ ব্যপারে কারও কোন সন্দেহ থাকার কথা না। চাকুরীর পদে যদি কোটা থাকে তবে সেই কোটায় কেউ আবেদন করলে তাদের মধ্যে মেধার যাচাই হবে যদি কোটাধারী আবেদনকারীর সংখ্যা কোটার তুলনায় বেশী হয় নইলে সে যেই লেভেল এর ছাত্রই হোকনা কেন তার চাকুরী আগে তবে কিভাবে সাধারন আবেদনকারী রা ক্ষতিগ্রস্থ হল না তা আমার বোধগম্য নয়।
ধরেনিলাম ১০০ জনের নিয়োগের জন্য একটি পরীক্ষা হল যেখানে ৪০ শতাংশ কোঠা থাকবে। সাধারান আবেদনকারীর সংখ্যা ১৫০০ কোটাধারী আবেদনকারীর সংখ্যা-৬০জন। কোটাধারী সর্বোচ্চ নম্বর পাইছে ৪৫/১০০ সাধারণ আবেদনকারীর সর্বোচ্চ নম্বর৮৫/১০০ এবং ৮০ পর্যন্ত ২০০ জন। তবে এইখানে কে কে নিয়োগ পাবে?? যদি কোটাধারাী ৪৫ পেয়ে নিয়োগ পায় তবে কেন ৮০ নম্বর প্রাপ্তরা ঐ চাকুরীর জন্য নিজেকে যোগ্য বলতে পারবে না? তারা কেন বলতে পারবে না যে কোঠার জন্য তারা নিয়োগ পাইনি???? কিন্তু বলতে গেলেই আপনি রাজাকার। আমি অস্বীকার করছিনা মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের কথা কিন্তু কিন্তু তাদের ছেলেপেলে নাতি নাতনীর দেশের জন্য অবদান কি? শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ভ্রাতা দেওয়া যেতে পারে। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। তাদের চিকিৎসা ফ্রি করা যেতে পারে, বাস ট্রেন ফ্রি করা যেতে পারে। তাই বলে তাদের অযোগ্য ছেলে মেয়েদের প্রশাসনে চাকুরী দিয়ে দেশটাকে মূর্খদের হাতে তুলে দেওয়ার পক্ষে আমি নই। এই কোটার ফলে সাধারন লোকজনের মনে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান অনেকাংশেই কমে গেছে এইটাও সত্য।
তবে বেকারত্বের জন্য একমাত্র কোটা দায়ী ব্যপারটা এমন ও না। কোটা, দুর্নীতি এবং নিয়োগ ব্যবস্থার ত্রুটির জন্য আমাদের প্রশাসন হল মাথামোটা। এখানে মেধাবীরা চাকুরী পায় না এই তিক্ত সত্য আপনি অস্বীকার করলেও তা অপরিবর্তীত। আর আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা কিছু হাবিজাবি পড়িয়ে তাদের কে সম্মান পাশ সনদ দিয়ে দেয়। যা বাস্তবতা থেকে আলাদা। আমাদের দক্ষতা না থাকার পেছনেও ত সেই শিক্ষাব্যবস্থা এবং সরকার ব্যবস্থাই দায়ী। আপনি একজন মাস্টার্স পাশ করা লোকের দক্ষতা বা পড়াশোনা নিয়ে প্রশ্ন করলেন। কিন্তু তার শিক্ষক এবং শিক্ষাব্যস্থাকে কিছুই বলতে দিবেন না। আবার বিসিএস এর কথাও বললেন আমাদের বিসিএস এর নিয়োগ ব্যবস্থা নিয়েও কিছু লিখেন। আমি ব্যবসায় শিক্ষার ছাত্র। আমার নবম থেকে আমি না বিজ্ঞান না ইতিহাস কোন বিষয় আমাকে পড়ানো হয়নি (পাঠ্য ছিল না।) আমাকে বিসিএস এর প্রিলিতে কি বিষয়ে প্রশ্ন করলে আমি তার উত্তর করতে পারব বা আমার দক্ষতার যাচাই হবে? আমাকে কি বিসিএস এ সেই প্রশ্ন করা হবে নাকি সেই সাধারণ জ্ঞান, আর্ন্তজাতিক বিশ্ব, ইত্যাদি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। আমার চাকুরির পরীক্ষায় যদি আমার বিষয়ে প্রশ্ন নাই করা হবে তাহলে আমাকে তা পড়ানোর কি দরকার? আপনি হয়ত বলবেন যে শুধু চাকুরির জন্য পড়াশোনা কেন? আসলে আমাদের সমাজব্যবস্থা এমন যে আপনি ভাল চাকুরীকরলেই কেবল আপনার শিক্ষা স্বার্থক নতুবা ব্যর্থ সকল পড়াশোনা। আমি আমার দেশকে ভালবাসি তবে কথিত চেতনাবাজ নই।
আমি আমার মতামত প্রকাশ করলাম। কাউকে আঘাত করা আমার উদ্দেশ্য নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:০৪