somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুবলার চরে

২৪ শে জুলাই, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সুন্দরবনের একবারে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের ধার ঘেঁষে বেশ বড় একটা চরের নাম দুবলার চর।এর নাম কেন হলো তা জানা নেই,তবে এলাকার খুব কাছাকাছি জায়গা এটা।সাধারণত লোকে সুন্দরবন আসে গাছ কাটতে,গোলপাতা কাটতে,মাছ ধরতে,নয়তো মধু সংগ্রহ করতে।
আমি আর ছোট চাচা শীতের এক বিকেল বেলা ধানমণ্ডি লেকে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম।অনেক কথা হল সুন্দরবন নিয়ে,এক পর্যায় সে বলল তুই সুন্দরবনের দুবলার চর গেছোস?বললাম গেছিলাম একবার,মনের মত করে চরটা দেখতে পারি নাই।হঠাৎই সে প্রস্তাব দিল চল যাবি নাকি ওখানে?আমি বললাম কবে যেতে চাচ্ছো,কিভাবে যাবা?সে বলল আগামী মাসে(কুরবানির ছুটিতে)যেতে চাচ্ছি আর যাবো বন্ধুর মাছ ধরার টলারে।
আমি বললাম ভালোই হবে আমার কলেজও বন্ধ থাকবে আর তোমার অফিসও বন্ধ।

দিন গুনতে থাকলাম কবে আসবে সেই দিন।ঢাকা থেকে কুরবানির ২ দিন আগে চলে গেলাম গ্রামের বাড়িতে(রায়েন্দা,বাঘেরহাট)।

১ম দিন

ঈদের পরের দিন ভোর বেলা আমি ও চাচা স্থানীয় মাছের ঘাটে এসে দাড়াই।এখানেই টলার আসার কথা।
কিন্তু টলার আসে নাই,দেরি হচ্ছে।অনেকক্ষণ পর টলার আসলো কিন্তু এখন টলারে উঠা যাবে না।
টলারে মাছ আছে।
মাছ খালাশ হলে তবেই টলারে উঠতে হবে।মাছ খালাশের ১.৫ ঘণ্টা পর আমরা উঠলাম।
টলার অবশেষে ছুটে চলেছে বলেশ্বর নদীর বুক চিরে।
২ ঘণ্টা চলার পর টলার নামলো গভীর সাগরে।
টলার চলছে বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে।আমরা যে যার মত করে গল্প গুজব করছি।জেলেদের অনেকে তাস খেলছে,কেউ বা নাক টেনে ঘুমুচ্ছে।এরি মাঝে টলার তার গন্তব্যে ছুটে চলেছে।
দুপুর গড়িয়ে এল।টলারের রান্না হয়ে গেছে।মাঝি আমাদের খেতে তাড়া দিলো।আমরা সবাই খেতে গেলাম।

মোটা চালের ভাত সঙ্গে আলু ভত্তা,মরিচ ভত্তা আর পাতলা ডাল দিয়েই দুপুরের খাবার খেলাম।
শহুরে মানুষদের কাছে অপ্রিয় হলেও তাদের নিত্য দিনের খাবার।
আর যাই হোক আমার কাছে খাবারটা দারুণ লাগছিলো।
টলার বিকালে দুবলার চর এসে থামলো।চরটা ভালো করে ঘুরে দেখবো বলে টলার থেকে নামবো
এরি মাঝে বাঁধা দিলো মাঝি আক্কাস বলল শেষ বিকেলে জঙ্গল থেকে বাঘ নামে হরিণ ধরার জন্য,
আপনারা ঘরে গিয়ে বিশ্রাম নেন।সকালে সব ঘুরে দেখাবো।
আমরা তার কথা বিশ্বাস করে জঙ্গলে না গিয়ে ঘরে গেলাম।
ঘরে গিয়ে দেখি ওখানকার ঘরগুলি বিশেষ ব্যবস্থায় তৈরি।
প্রতিটা ঘরেই মাচা করা।মাচার উপর শন বিছানো।এরকম কেন একজনকে জিজ্ঞেষ
করতেই সে বলে রাতে বাঘ জঙ্গল থেকে ঘরে ঢুকে পড়ে এ কারণেই এরকম।

বিছানা দেখে মনে হচ্ছে রাতে ঘুম কেমন হয় কে জানে?
রাতের খাবারঃ মোটা চালের ভাত আর আলু ভত্তা খেয়েই ঘুম দেয়ার জন্য ঘরে গেলাম।
তবুও হেলান দিয়ে ঘুমোতে চেষ্টা করতেই ধারণা ভুল হলো,
কিযে আরাম না শুইলে বুঝার উপায় নাই।শুইলে মনে হয় পাখির লোম দিয়ে তৈরি বিছানা।
রাতে কখন যে ঘুমিয়ে পরলাম মনেই নেই।

২য় দিন

পরদিন সকালে উঠে দেখি সবাই যার যার মত কাজে গেছে।
শীতের দিনে ভোঁরে উঠার অভ্যাস নাই।আক্কাস মাঝি আমাদের ঘুম থেকে উঠালো
সকালে।বলল চলেন আজ আপনাদের চরটা ঘুরে দেখাবো।আমরা কোন মতে নাস্তা শেষ করেই ছুটলাম তার পিছু।
দেখা যাক আক্কাস মাঝি আমাদের কি দেখায়?তার সাথে চর ধরে হাঁটছি আর তার গল্প শুনছি শেষ কবে চরে বাঘ আসছিল,
সিডরে কত লোক মারা গেল,কে কোথায় আশ্রয় নিছিলো,আরও অনেক কিছু।এভাবে তার সাথে ২ ঘণ্টা হাটার পর আমরা ঘরে আসলাম।যথারীতি দুপুরের খাবার খেলাম।আবার চর দেখতে বেরুলাম।এবার আক্কাস ছোট একটা নৌকা নিয়ে আমাদের ঘুরবে।উদ্দেশ্য হরিণ দেখাবে।

আমরা নৌকায় উঠতেই নৌকা চলতে লাগলো।৩০ মিনিট চলার পর আমরা নদীর ধারে হরিণের পাল দেখলাম।হরিণের পালে কম হলেও ২০ থেকে ২৫ টা হরিণ একসাথে দেখলাম।
হরিণ দেখে সন্ধ্যা হওয়ার আগেই চরে ফিরলাম।এভাবে ২ দিনটি অনেক মজাই কাটল।


৩য় দিন

ভোঁরে আমরা ঘাটে অপেক্ষমাণ মাছ ধরা টলারে করে ফিরতি পথ ধরলাম।


সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১১ রাত ৯:৫২
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×