somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ পিশাচ (শেষ পর্ব )

১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নিশির মৃত্যুর প্রায় দুই মাসের মাথায় আবার বিয়ে করেছে ওসমান। বধু নিশির ছোট বোন নিলু। মিশুকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। শওকত তাকে নিয়ে দূরে কোথাও চলে গেছে! ওসমান অবশ্য তাকে খুঁজে বের করতে চেষ্টার কোন কমতি রাখেনি। পুলিশ কেইস করেছে। পেপারে নিয়মিত নিখোঁজ সংবাদ প্রকাশ করেছে। কিন্তু কোন লাভ হয় নি। পুলিশের ধারণা সেই রাতে তাদের বাসায় কোন ডাকাত দল ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু তারা সুযোগ না পেয়ে চলে গেছে। সাথে মিশুকে নিয়ে গেছে মুক্তিপণের আশায়। যদিও কয়েকমাস পেরিয়ে গেলেও মুক্তিপণ চেয়ে কোন আগুন্তকের ফোন আসে নি।

এ দিকে ওসমান শওকতের কথাটা প্রায় সবার থেকে আড়াল করে গেছে। কিছু সত্যি জগতের কাউকে জানতে দিতে নেই। জানলে তারা পাগল ভেবে উপহাস করে। যদিও ঘটনা হয় সত্যি! তবে সে ঘটনাটা নিলুকে খুলে বলেছে। কারণ সে এখন তার সংসারেরই অংশ। তাছাড়া এত বড় ঘটনা! আবার যে ঘটবে না তারই বা নিশ্চয়তা কি! আর আগে থেকে জানা থাকলে মানসিকভাবে প্রস্তুতিও নেয়া যায়। কিন্তু নিলু তার কথা বিশ্বাস করেছে কিনা কে জানে! অতিরিক্ত শিক্ষিত মেয়েদের নিয়ে এই এক সমস্যা! ওরা অনেক সত্যি ঘটনাকেও ভ্রান্তি বলে উড়িয়ে দিতে চায়! সেদিক থেকে নিশি ভালো ছিল। সে যা বলতো সবই বিশ্বাস করতো। অনেক স্বামী ভক্ত মেয়ে ছিল। আর নিলু! সব কিছুতেই তার সন্দেহ! সে পুরো নিশির বিপরীত! অবশ্য তার জায়গায় সে নিজে হলেও হয়ত এমনই করত! কে বিশ্বাস করবে একটা মৃত লোক ফিরে এসেছিল! তাকে দেখে ভয় পেয়ে তার স্ত্রী এক্সিডেন্ট করে মারা গেছে! নিশির কথা ভাবতেই ওসমানের মনে পড়ে যায় হারিয়ে যাওয়া ছেলে মিশুর কথা। বুকের গভীর থেকে উঠে আসে দীর্ঘশ্বাস।

কিছু দূরে মিলি পুতুল খেলছে। আজ তার পুতুল কন্যার বিয়ে হবার কথা। তাই নিলুও তাকে সাহায্য করছে। নিলু সুযোগ পেলেই মিলিকে জিজ্ঞাসা করে সেই রাতের কথা। মিলি শুধু এতটুকু বলে ''মামনি পলে গেছিল। তালপল রত্ত '' এর বেশি কিছু সে মনে করতে পারে না। নিলুও তাকে জোর করে না। ছোট মানুষ। কি লাভ তাকে সেই বীভৎস স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়ে? এমনিতেই মাকে হারিয়ে মেয়েটা অনেক ভয় পেয়েছে। আস্তে আস্তে সে সেই শোক কাটিয়ে উঠছে। তাই নিলু আর মিলিকে বেশি কিছু জিজ্ঞাসা করে না। কিন্তু নিজেও মনে মনে শান্তি পায় না। কেমন যেন অস্বস্তি থেকেই যায়! আচ্ছা সত্যিই কি শওকত এসেছিল? তাকে দেখে ভয় পেয়ে তার বোন মারা গেছে? একটা মৃত মানুষ কি করে ফিরে আসে! যদি সত্যিই সে ফিরে এসে থাকে সে কি আবার আসবে? সে কেন মিশুকে নিয়ে গেলো সাথে? এতে তার কি লাভ? নিলু বুঝতে পারে বড় কোন রহস্যে আবৃত তার চারিপাশ! এই রহস্য উদ্ঘাটনের উপর হয়ত নির্ভর করছে তাদের পরবর্তী জীবন!!এমনও তো হতে পারে কোন রাতে আবার শওকত ফিরে এলো! এসে আবার ভয়াবহ কোন ঘটনা ঘটিয়ে চলে গেলো! তখন কি হবে?

একদিন না পারতে নিলু ওসমানকে জিজ্ঞাসা করেই বসে ,''আচ্ছা ওসমান তুমি সেই রাতে মিশুকে শওকতের কাছে একা ফেলে কেন গেলে? কেন মিলির মত তুমি মিশুকেও সাথে নিয়ে গেলে না?'' ওসমানের মুখ আঁধার হয়ে আসে।
- ''নিলু সেই রাতে আমার মাথা কাজ করছিল না! নিশির চিৎকার শুনে ছুটে গেলাম। কয়েক সেকেন্ডে এমন কিছু হয়ে যাবে বুঝিনি! যদি বুঝতাম তবে আজ হয়ত মিশু আমাদের সাথে থাকতো!'' ওসমানের গলা ধরে আসে। চোখ দিয়ে টপটপ করে জল ঝরতে থাকে। নিলু আর তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করে না। এত বড় ঘটনা! নিশ্চয়ই ওসমানের উপরও চাপ কম না। হাজার হোক সে সন্তান হারিয়েছে!

কিছুদিন পর নিলু বুঝতে পারে সে সন্তান সম্ভবা। নতুন অতিথির আগমনি পয়গামে ওসমানের খুশির অন্তত নেই। সেই প্রস্তাব দেয় তাদের অনাগত সন্তানের নাম হবে ''মিশু''। নিলুও মেনে নেয়। তারা আস্তে আস্তে পিছনের সব ভয়ের স্মৃতিগুলো ভুলতে থাকে। মিলিও এখন আগের মত তার মাকে মনে করে না। নিলুকেই ''মা'' বলে ডাকে। সব মিলিয়ে তারা পুরনোকে ভুলে সব কিছু গুছিয়ে নিচ্ছিলো নতুন করে। আর এতে নিলুরই খাপখাওয়াত হচ্ছে বেশি!
হঠাৎ বোনের অকাল মৃত্যুতে হতভম্ব হয়ে পড়েছিল সে। তারপর বোনের পরিবারেই বউ হয়ে এসেছে। তার বাবার ভয় ছিল অজানা পরিবারের কোন মেয়ে মিলির সৎ মা হলে সে তার প্রাপ্য আদর যত্ন থেকে বঞ্ছিত হবে। তাই নিলু মিলির মুখের দিকে চেয়ে তার সব স্বপ্নগুলোকে জলাঞ্জলি দিয়ে দুলাভাইকে বিয়ে করেছে।

বিয়ের আগে তার ভার্সিটির এক ছেলের সাথে তার ছিল হৃদয়ের রদবদল। কিন্তু হঠাৎ বোনের মৃত্যুতে বোনের দিশাহীন পরিবারের হাল ধরেছে সে। আর সব কিছু যেন খুব জলদিই ঘটে গেছে! কি থেকে কি হল বুঝে উঠার আগেই সে নিজেকে আবিস্কার করেছে একজনের স্ত্রী এবং একটি কন্যা শিশুর মা!

নিলুর এখনো মাঝে মাঝে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয় না তার বড় বোন বেঁচে নেই। সব কিছুকে স্বপ্ন মনে হয়। মনে হয় সে ঘুমিয়ে আছে। গভীরে ঘুমে নিমগ্ন। ঘুম ভাঙলেই বুঝবে সব ছিল দুঃস্বপ্ন! তার বড় বোন নিশি বেঁচে আছে! সে তার ছেলে মেয়েদের নিয়ে তাদের বাবার বাড়ি বেড়াতে এসেছে! নিলু তাদের সাথে তার স্বপ্ন পুরুষ আসিফের পরিচয় করে দিচ্ছে। আসিফের সাথে তার বিয়ে হচ্ছে আরো কত কি! কিন্তু সব কিছু তার কল্পনাতেই শোভা পায়! কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দেখে যেই আসিফের সাথে তার তিন বছরের প্রেম ছিল তাকে ছেড়ে সে এখন তার দুলাভাইয়ের স্ত্রী। এক সন্তানের মা, আরেক অনাগত সন্তান তার পেটে পৃথিবী দেখার অপেক্ষায়।

সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে সত্যি চোখ লেগে আসে নিলুর। ঘুমের মাঝে স্বপ্নে দেখে শওকত এসেছে! এসে মাথার খুলি খুলে তার সামনে বাড়িয়ে দিয়ে বলছে ''দেখো নিলু আমার মাথায় মগজ নেই! দেখো!'' বলে শওকত জোরে জোরে চেঁচাতে থাকে। নিলু দুই হাতে কান চেপে ধরে। তবুও সেই স্বরকে সে রোধ করতে পারে না। যেন বুকের পাঁজর ভেঙ্গে হৃদপিন্ডে গিয়ে আঘাত হানে। ঘুম ভেঙ্গে যায় নিলুর।
শোনে বাহিরে মিলি চিৎকার করছে ,'' মামনি মামনি! ভুত! ভুত এছেছে! কামল দিবে'' । ছুটে যায় নিলু। পাশের বাড়ির ছেলেটা মিলিকে মুখোশ পরে ভয় দেখাচ্ছে। আর মিলি ভয়ে কাঁদছে। নিলু গিয়ে তাকে ঘরে নিয়ে আসে। দুপুর হল ওসমানের বাড়ি ফেরার সময় হয়েছে।

ওসমানের বাড়ি ফেরার কথা ভাবতেই নিলুর বিষণ্ণ মুখে হাসি ফুটে। ইদানিং ওসমানকে তার ভালো ই লাগে। অবশ্য সে ভালো লাগার মতনই লোক। নম্র, ভদ্র, সুদর্শন। স্ত্রী সন্তানদের প্রতি যত্নশীল। পরোপকারী। নিলু যত দেখে মুগ্ধ হয়। আর স্বামী হিসেবে তো সে অসাধারণ! বাড়ি ফেরার পথে নিয়মিত গুণে গুণে পাঁচটা গোলাপ নিয়ে বাড়ি ফিরবে। এনে চার দিবে নিলুর হাতে আর একটা মিলির। নিলু তার ফুলগুলো ফুলদানীতে রাখবে আর মিলি পাপড়ি ছিড়ে ছিঁড়ে তার ছোট ছোট পাতিলের নিয়ে মিছেমিছি ফুল রান্না করবে। আর রোজ বাড়ি ফিরে জমিয়ে গল্প করবে মিলি আর নিলুর সঙ্গে। মিলি তার শিশু মনে অনেক কিছু না বুঝে হুটহাট প্রশ্ন করে বসবে। আর সবাই হেসে গড়িয়ে পড়বে। মাঝে মাঝে হঠাৎ করে উঠে আসে নিশি আর মিশুর গল্প! সেই বীভৎস রাতের কথা! ক্ষনিকেই মন খারাপ হয়ে যাবে সবার। তারপর ওসমানই আবার প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে সবাইকে ভুলিয়ে দিবে।
নিলু ভাবে তার অতীতের সব কথা ওসমানকে বলে দেবে। তাদের নতুন জীবনের এই দীর্ঘ পথ চলায় সানন্দে হেটে চলতে চাই সম্পর্কে চাই স্বচ্ছতা। আর ওসমান উদার প্রকৃতির। সে নিশ্চয়ই ব্যাপারটাকে স্বাভাবিকভাবে নেবে।

তার ধারণাই সত্যি হয়! ওসমান ব্যাপারটা নিয়ে কোন মাথা ঘামায় না। তার উপর নিলুর ভক্তি আরো বেড়ে যায়। এখন থেকে আরো তাদের দাম্পত্য জীবন আরো সুন্দর হবে। ভাবে নিলু।

কিন্তু দুর্ভাগ্য যেন পিছু ছাড়ে না! পরদিন থেকে একটা অদ্ভুত সমস্যা দেখা দেয়। রাতে টেবিলে সবাই এক সাথে খেতে বসে শোনে ছাদের উপর কে যেন হাঁটছে! থপ! থপ! ওসমান কান খাড়া করে শুনে বলে ''কে?'' কোন উত্তর আসে না। কিন্তু আবার সেই থপ থপ! ওরা পাত্তা দেয় না। কিন্তু দিনের পর দিন একই সমস্যা! রাত বাড়লে ছাঁদের উপর কে যেন জোরে হাটাহাটি করে! দিন হাটাহাটির শব্দ যেন ক্রমান্বয়ে বাড়ছে! নিলু, মিলি ভয় পেতে শুরু করেছে।

তবে ওসমানের ছাদের উপর দেখতে যায় না কে এসেছে। যদি শওকত এসে থাকে! তবে দেখতে যাওয়াটা বিপদজনক হবে! একরাতে শব্দ প্রচন্ড বেড়ে যায়। সারা রাত মিলিকে কোলে নিয়ে পাশাপাশি বসে রাত পার করে দেয় ওসমান আর নিলু।

নিলুর কিছুই বুঝে আসে না! কে হাঁটে রাতে ছাদের উপর? রাতে উঠে দেখতে যাবার মত ঝুঁকিও তারা নিতে চায় না। কারণ সত্যিই কোন অশুভ শক্তি হলে তার কাছে যাওয়া মোটেই ঠিক হবে না!

পরদিন সকালে কাজে একটু দেরিতেই আসে কাজের মেয়ে রহিমা। নিলুর পেটে বাচ্চা আসার পর তাকে নতুন কাজে রেখেছে তারা। সে রোজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বাড়ির যাবতীয় কাজ করে দিয়ে যায়। নিলু তাকে নিয়ে ফুল গাছ দেখার বাহানা করে ছাঁদে উঠে। কিন্তু উঠেই চমকে ওঠে। গাছগুলোতে একটা পাতাও নেই! রাতারাতি সব পাতা গায়েব। এমন কি ছাঁদে কোন পাতা পড়ে নেই। যেন কেউ সুন্দর করে সব পাতা ছিড়ে রেখে চলে গেছে!
''খালাম্মা কোন দুষ্টু পোলাপাইন ছাঁদে উঠছিল মনে হয়! আইসা সব পাতা ছিইড়া নিয়া গেছে।'' বলে রহিমা।
আপাতত ওর যুক্তিকেই যুক্তিযুক্ত মনে হয় নিলুর কাছে। রাতের বেলা যেই ব্যাপারটাকে অধিক ভুতুড়ে মনে হয় দিনের আলোতে তার মাত্রা একেবারেই থাকে না। নিলু সব ভয় কাটিয়ে পুরো ব্যাপার টাকে যুক্তি দিয়ে ভাবতে চেষ্টা করে।

নিচে এসে ওসমানকে অফিসে বিদায় দিয়ে সে লেগে যায় ঘরের কাজে। মিলি বসে যায় খেলতে। খেলতে খেলতে হঠাৎ মিলি বাহিরে থেকে চিৎকার করে বলে ,''মামনি এছে দেখে যাও ছব ঘাছ মরে গেছে!'' নিলু কোন পাত্তা দেয় না। ছোট মানুষ কি না কি বলছে। পরে মিলির জোরাজুরিতে গিয়ে দেখে আসলেই তাই! তাদের উঠোনে যত ঘাস ছিল সব এমন ভাবে নির্জীব হয়ে গেছে যেন বহু দিন তারা আলো বাতাশ অক্সিজেন কিছুই পায়নি! হঠাৎ নিলুর কাছে সব কিছু অপরিচিত মনে হয়। মনে হয় প্রতিটা গাছে আড়ালে কেউ আছে! তারা সবাই তাদের দেখে উপহাস করছে! নীরবে দাঁত মুখ খিঁচরে হাসছে! কিন্তু তারা শুনতে পাচ্ছে না! নিলু মিলিকে কোলে নিয়ে ঘরে এসে দরজা বন্ধ করে দেয়। তার হাত পা সমানে কাঁপছে! কান গরম হয়ে উত্তপ্ত হাওয়া মাথার তালু স্পর্শ করে যেন নিচের দিকে নামছে। এভাবে চলতে থাকলে স্বাভাবিক ব্যাপারকেও অস্বাভাবিক মনে হয়। নিলু জোর চেষ্টা চালায় নিজেকে শান্ত করার। কিছুক্ষণ মিলিকে চেপে ধরে বসে থাকে। তারপর নিজেকে বোঝায় ''এসব কিছু না। গরমে গাছগুলো ওমন হয়েছে! এতে কোন অতিপ্রাকৃতিক শক্তি হাত নেই! '' কিন্তু নিজের কাছেই যেন বেখাপ্পা শোনায়!

মিলিকে কোলে নিয়ে কতক্ষণ বসে ছিল মনে নেই নিলুর। বোধয় ঘুমিয়ে গিয়েছিল। হঠাৎ কলিংবেলের শব্দে জেগে উঠে! কেউ এসেছে দরজায়! কিন্তু দু পা এগিয়ে দরজার কাছে গিয়ে দরজা খোলার সাহস হয় না তার।এ দিকে মিলিও কলিংবেলের শব্দে জেগে উঠেছে। সে নিলুর হাত নেড়ে বলে ''মামনি দলজা খুলছো না কেন? আমি গিয়ে খুলে দিয়ে আছি? মামনি ,ও মামনি'' । নিলু নিজেকে ধমক লাগায় তার এই অহেতুক ভয়ের জন্য। অতঃপর বাহিরে থেকে আগুন্তক নিজেই আওয়াজ দেয় ,''মিলি, নিলু দরজা খোলো! আমি ওসমান''

নিলু গিয়ে দরজা খুলে দিয়ে আসে। ওসমানকে দেখে স্বস্তি পায়। এই একটা মানুষের উপর তার পরম নির্ভরশীলতা! ওসমান ফ্রেস হতেই হড়বড় করে তাকে খুলে সব। শুনে ওসমানের মুখে চিন্তার ছাপ! শওকত বোধয় সত্যিই এসেছিল গত রাতে। ওসমানও বাহিরে গিয়ে সব গাছ দেখে আসে। সত্যি অবিশ্বাস্য!

রাতের বেলা হাজার গল্পের ভীড়ে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। ভুতুড়ে আমেজ কেটে যায়। মিলিকে ঘুম পাড়িয়ে নিজেও শুয়ে পড়ে নিলু। ওসমান কিছুক্ষণ জেগে থেকে অপেক্ষা করে ছাঁদের শব্দ শোনার। কোন কিছু টের না পেয়ে নিজেও ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তু মধ্যরাতে শুরু হয় বিপত্তি! কে যেন দরজার কড়া নাড়ছে! ঘুম ভেঙ্গে যায় সবার।
ওসমান ''কে'' বলে ডাকতে গিয়ে বুঝতে পারে তার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। ফেসফেস আওয়াজ বেরোচ্ছে। কিন্তু দরজার ওপাশ থেকে কে যেন কড়া নাড়ছে অবিরত! ক্রমান্বয়ে দরজার উপর চাপ বাড়ছে! নিলু জিজ্ঞাসা করে ''কে?'' নিলুর ডাক শুনতেই ওপাশের আগুন্তক যেন নড়ে চড়ে উঠে। যেন তার জন্যই অপেক্ষা করছিল। আগুন্তক কথা বলে উঠে '' নিলু আমি তোর বোন নিশি! দরজা খোল নিলু!''

নিলু কেঁপে উঠে। পাশে বসা ওসমানের দিকে তাকায়! কিন্তু হঠাৎ কারেন্ট চলে গেছে! মরার উপর যেন খাড়া ঘা! নিলু মিলিকে কোলে নিয়ে ওসমানকে জড়িয়ে ধরে। ওসমান হাতের কাছে টর্চ বা কোন মোমবাতি খুঁজতে থাকে। টেবিলের উপর থেকে মোম তুলে নিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। তারপর স্ত্রী কন্যাকে ধরে বিছানায় বসে থাকে। বুঝতে পারে নিলু আর মিলি অনবরত কাঁপছে। ওসমান তাদের অভয় দেয় ,''কিচ্ছু হবে না! ভয়ের কিছু নেই। দরজা বন্ধ থাকলে ওরা আসতে পারবে না!''

ওসমানের কথার জবাব দিতেই যেন দরজার উপর এবার কিলের শব্দ। ধুপ ধুপ ধুপ! কিছুক্ষণ পর মনে হয় কিল নয়, কেউ বল ছুঁড়ে মারছে! কেউ দরজায় বল ছুঁড়ে দিয়ে খেলছে! নিলু ওসমানের বুকে মুখ চেপে ধরে। শক্ত করে দু হাতে কান চেপে ধরে এই শব্দ বন্ধ করতে চায়! কিন্তু শব্দ থামে না। দরজার ওপাশের আগুন্তক যেন নাছোড়বান্দা! অবশেষে শব্দ আর সইতে না পেরে চেচিয়ে উঠে ওসমান ''কে ? কে দরজার ওপাশে?''

একটা শিশু কন্ঠ আওয়াজ দেয় ,''বাবা আমি মিশু! ফুটবল খেলি!'' চমকে উঠে ওসমান! তার ছেলে মিশু ফিরে এসেছে। সে উঠে যায় দরজা খুলতে! কিন্তু নিলু তার হাত ঝাপ্টে ধরে! ''কি করছ ওসমান! মিশু এত রাতে আসবে কি করে! অন্য কেউ এসেছে! ও মিশু নয়!''

কিন্তু দরজার ওপাশ থেকে আগুন্তক আরো জোরে চেঁচিয়ে উঠে ,''বাবা দরজা খোলো! আমি মিশু! কে যেন আমাকে পানিতে ফেলে দিয়েছিল বাবা! খুব শীত করছে! দরজা খোলো!''

ওসমান আবার পা বাড়ায়। কিন্তু নিলু পথ আগলে দাঁড়ায়। ''ওসমান বাঁচতে হলে আমাদের ঐ কন্ঠকে অগ্রাহ্য করতেই হবে! ও মিশু নয়! অন্য কেউ!'' ওসমান নিরুপায় হয়ে নিলুর দিকে তাকায়। তার চোখ থেকে অঝোরে জল ঝোরছে! সে নিলু আর মিলিকে নিয়ে বসেই সারা রাত পার করে দেয়।

পরদিন সকালের ঝলমলে রোদে কেটে যায় রাতের বিভীষিকা। রহিমা এসে নাস্তা বানিয়ে টেবিলে রেডি করে দেয়। নিলু মিলিকে মুখে তুলে খাইয়ে দেয়। কিন্তু রুচি হয় না তার এবং ওসমানের মুখে। কোন রকমে নাকে মুখে গুঁজে দিয়ে দু জনেই উঠে পড়ে।
সকালে ওসমান বাড়ির আনাচে কানাচে খুঁজে দেখেছে মিশু আছে কিনা। নেই! তারমানে সত্যিই কাল রাতে অন্য কেউ ছিল!

এদিকে নিলু ভীষণ মুষড়ে পড়েছে! এভাবে ভুতুড়ে পরিবেশে আর কত! তার দম বন্ধ হয়ে আসে! মনে হয় এই পরিবেশে আর কিছুক্ষণ থাকলে সে মারা পড়বে! কিন্তু ওসমানকে কিছু বলে না। আজ সে খুব বিষণ্ণ! অফিসেও যায়নি! তার মিশুর কথা মনে পড়ছে! একটা পুরনো এ্যালবাম বের করে সকাল থেকে মিশুর ছবি বের করে দেখছে। থেকে থেকে ছেলেমানুষের মত করে কাঁদছে! ছেলেকে খুব ভালোবাসতো ওসমান।

দুপুর গড়িয়ে আবার সন্ধ্যা নামে। ওসমান তবুও বিষণ্ণ! সে নিলুকে বলে,''নিলু গতরাতে দরজা খুলে দেখলেই হত! যদি সত্যি মিশু কোনভাবে এসে থাকে! হয়ত ও বেঁচে আছে! মরেনি!''

-''তুমি পাগল হয়েছো ওসমান! মিশু কেন এত রাতে আসবে? কেন সে দিনে আসে না! আর কেন ভুলে যাচ্ছো! গতরাতে আপুও এসেছিল! আপুকে তো তুমি নিজের হাতে কবর দিয়েছো!''
ওসমানের অস্বস্তি কাটে না! বার বার মনে হয় গতরাতে দরজা খুললে হয়ত ফেরি পেতো তার হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে!
-' আচ্ছা নিলু আজ রাতে মিশু এলে আমাকে বের করে দিয়ে তুমি দরজা লাগিয়ে নিও! আমি উদ্ধার করে নিয়ে আসবো আমার ছেলেকে!''

নিলু ওসমানকে বোঝাতে চায়! কিন্তু সে অবুঝ! কাল রাতে মিশুর কন্ঠ শোনার পর থেকে সে যেন কেমন হয়ে গেছে!
চিন্তায় নিলুর চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করে! কিন্তু কাঁদতে পারে না! কি হতে চলেছে আজ রাতে! ওসমান বাড়ি থেকে বেরোলে ঐ পিশাচ যদি তাকেও মেরে ফেলে! ওসমান তো কিছুই বুঝতে চাইছে না!

রাত দশটা বাজতেই ওসমান দরজা খুলে বাহিরে বের হয়ে নিলুকে বলে ভিতর থেকে লাগিয়ে নাও। নিলু অনিচ্ছা শর্তেও লাগায়! তার চোখ দিয়ে অঝোরে জল ঝরছে। অনেকক্ষণ কেঁদে তার মনে হয় সে এখন স্পষ্ট চিন্তা করতে পারছে। দিনের মত অনুভূতিগুলো আর এক জায়গায় জমাট বেঁধে নেই! সে গতরাতে কাহিনী নিয়ে নতুন করে ভাবতে চেষ্টা করে।

একটা ব্যাপার তার কাছে স্পষ্ট! মিশু বেঁচে নেই! সে মারা গেছে! তাই গতরাতে সে বলেছিল ,''কেউ তাকে পানিতে ফেলে দিয়েছে!'' তারমানে তাকে পানিতে ফেলে হত্যা করা হয়েছে! নিলু বুঝে তার সামনেও ভীষণ বিপদ! তাকে বুঝতেই হবে কি ঘটে চলেছে তার চারপাশে! নয়ত এই বিপদ থেকে পরিত্রাণের কোন পথ খোলা নেই!
তবে আরেকটা ব্যাপারও তার কাছে পরিষ্কার হয়! দরজা বন্ধ থাকলে ওপাশের আগুন্তক তাদের ঘরে প্রবেশ করতে পারে না! তারমানে ঐ পিশাচের একটা দেহ আছে! কিন্তু ভুতের কোন দেহ থাকে না! ভুত সব জায়গায় যেতে পারে। বন্ধ দরজা দিয়েও ঢুকতে পারে। তারমানে এই পিশাচ ভুত নয়!

এদিকে মিলি তার বাবার ছবির এ্যালবাম নিয়ে খেলছে! সে একটা একটা করে ছবি বের করে এনে দেখায় নিলুকে
-''মামনি মামনি দেক, এইতা আমি! আর এইতা মিছু!'' আজ মিলিরও তার ভাইকে খুব মনে পড়ছে। নিলু এলবামের দিকে তাকায়। ছোট্ট নিষ্পাপ মিশুর চেহারা দেখে তার বুক ভেঙ্গে আসে। তারপর পুরনো পাতা উল্টে দেখে কিছু আগেকার ছবি। এই এ্যালবাম সে আগে দেখেনি! এই বাড়িতে এতদিন আছে অথচ এটা তার চোখে পড়েনি! তারমানে এটা ওসমান সরিয়ে রেখেছিল!
একটা ছবিতে ওসমানের সাথে হাসি খুশি সুদর্শন এক যুবকের ছবি। ছবিটা দেখে চমকে উঠে নিলু! সে মিলিকে দেখিয়ে বলে ,''বলতো মা! এটা কার ছবি?''
মিলি একবার দেখেই বলে দেয়,''ছওকত আনকেল!'' এই ছবি সে আগে বহুবার দেখেছে!

নিলুর বিস্ময় যেন কাটে না! কিছুতেই সে ছবি থেকে চোখ ফেরাতে পারে না! সে দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দিয়ে বলে ,''ওসমান ভিতরে এসো!'' নিলুর সব ভয় কেটে গেছে!
ওসমান ভিতরে আসে। কিন্তু তার চোখে মুখে ভয় স্পষ্ট!

নিলু কঠিন গলায় ,''ওসমান মিশু কি তোমার সন্তান ছিল?'' ওসমান চুপ করে থাকে!
নিলু আরো জোরে চিৎকার করে উঠে- '' কথা বলো ওসমান! মিশু কি তোমার সন্তান?''
ওসমান বলে ,''না!''
-মিশু শওকতের সন্তান তাই না?
ওসমান মাথা নিচু করে বলে ,''হ্যা'' তার চোখের বিস্ময় জোর করে সে আড়াল করতে চাইছে!
-'' আর তাই তুমি তাকে খুন করেছো তাই না? সাথে খুন করেছো আমার বোনকে! ''
-এ সব তুমি কি বলছো! আমি খুন করেছি নিশি মিশু কে? তুমি জানো তাদের আমি কত ভালোবাসতাম!''

- '' তুমিই ওদের মেরেছো ওসমান! তুমি কোন দিন মন থেকে মিশুকে মেনে নিতে পারো নি! তোমার মনে তাকে নিয়ে ঘৃণা থেকেই গিয়েছিল! তাই তুমি তাকে নদীতে ফেলে দিয়ে এসেছো!' চিৎকার করে উঠে নিলু। তার আর এই অনাচার সইছে না!

-,'' তুমি নিজের কানে শুনেছো নিলু গতরাতে নিশি আর মিশু এসেছিল! এভাবে শওকতও এসেছিল নিলু! ঐ হয়ত মিশুকে নদীতে ফেলে দিয়েছে!''
-''শওকত কেন মিলিকে কিছু করল না ওসমান? কেন সে মিশুকেই ফেলে দিল? আর সেই রাতে মিশু আর মিলি কেন শওকতকে দেখে ভয় পাইনি? কারণ তুমিই শওকত সেজে তাদের সামনে এসেছিলে ওসমান! ওরা ভেবেছিল ওদের বাবা ওদের সাথে খেলছে!''

ওসমানের চোখে শুন্য দৃষ্টি! যেন কোন প্রশ্নের উত্তর তার জানা নেই। নিলু যা বলছে তাই ঠিক। নিলুও অনর্গল বলে চলে ,''ওসমান শিশুরা সহজে সম্মোহিত হয় না যতটা দ্রুত আমরা বড়রা হই! যেমন এই কয়দিন সম্মোহিত আমি হয়েছিলাম! ঠিক তেমনি হয়েছিল আমার বোন। তাই তুমি যখন বলেছিলে শওকত এসেছে সে ঠিক শওকতকে দেখেছে! আমার বোনও তোমার সাথে থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে গিয়েছিল ওসমান!''

-''তুমি প্রলাপ বকছো নিলু! তুমি নিজেই গতকাল দেখেছো উঠোনের গাছগুলো কিভাবে মরে গেছে! এটা কোন সাধারণ মানুষের পক্ষে করা সম্ভব নয় নিলু!''
-''কিন্তু তোমার মত স্কিজোফ্রেনিকদের পক্ষে সম্ভব ওসমান! টিকিয়ে রাখার স্বার্থে প্রভু কখনো কখনো তোমার মত রোগীদের অনেক অকল্পনীয় ক্ষমতা দিয়ে পাঠান! আমার ধারণা তুমিও এমন ক্ষমতার অধিকারী! এই সব শব্দ, হ্যালুসিনেশান, গাছের শুঁকিয়ে যাওয়া সব তুমিই করেছো!''

তাদের কথা বলার মাঝে হঠাৎ ঘরের সব লাইট একে একে টপ টপ করে নিভে যায়। নিলু গিয়ে ওসমানের হাত চেপে ধরে। ওসমান মিশুর কন্ঠে বলে ,'' এত জোরে আমার হাত ধরেছো কেন খালামনি? ছেড়ে দাও!''
নিলু তাকে ঝাঁকি দিয়ে বলে -''বাস্তবে ফিরে এসো ওসমান! তুমি মিশু নও! তুমি ওসমান! প্লিজ ফিরে এসো!''

ওসমান কেঁপে উঠে। গলার স্বর নিচু করে বলে ,''আমাকে ঐ রুমে তালা দিয়ে রেখে দাও! তারপর কাল সকালে তোমরা চলে যেও! আমি রাতে হাজার ডাকলেও দরজা খুলো না!''
ওসমানের নিজেই পাশের রুমে গিয়ে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। নিলু বাহির থেকে লাগিয়ে মিলিকে নিয়ে শুয়ে পড়ে।

মাঝরাতে ওসমানের রুম থেকে ভেসে আসে অপরিচিত এক পুরুষ কন্ঠ ''নিলু দরজা খোলো! আমি শওকত! চিনতে পেরেছো?''

নিলু পাশ ফিরে শুয়ে পড়ে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:০৪
২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×