পেছন থেকে বারবার ডাকলে কেও বিরক্ত হউক আর না হউক আমি হই। এই ব্যাপার টা আমার অপছন্দের তালিকাভুক্ত। বিন্তী বারবার সেই কাজটা করছে। বিরক্তিকর হলেও পিছনে ফিরে অপেক্ষা করতে হবে। তাছাড়া উপায় নেই।
_ এতোক্ষণ যাবত ডাকছি শুনছিস না কেন?
ঃ এমনিতেই।
_ তোর গার্লফ্রেন্ড কেমন আছে?
ঃ এটাও মনে হয় টিকবে না। আচরণগত পরিবর্তন লক্ষণীয়।
মিতু আমার বর্তমান গার্লফ্রেন্ড। রিলেশান টা ছয়মাসের। এতো অল্প সময়েই কেমন জানি হয়ে গেছে। রিলেশান এর সময় বৃদ্ধি র সাথে সাথে নাকি মজবুত হয় কিন্তু আমার আর মিতুর ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন। একটা মানুষের এতো অভিযোগ থাকতে পারে আমি ভাবিনী কখনো। সব কিছু সহ্য করেও চেয়েছিলাম রিলেশান টা টিকে থাকুক। কিন্তু শেষ কয়েক সপ্তাহ ধরে এমন সব কান্ড করছে যাতে আমি মারাত্মক পরিমাণ এ মর্মাহত। দিনে ১০বার ফোন দিলে একবার ধরে, কোন টেক্সট এর রিপ্লাই তো দেয় ই না সাথে কারনে অকারনে বাজে ব্যবহার। বিরক্ত হয়ে তাই এখন আর আমিও ফোন দেই না।
_ চল ক্যফে তে বসি?
ঃ I need food. Um so much hungry.
_ আচ্ছা চল যাই।
বিন্তী আমার বান্ধবী সাথে এক্স গার্লফ্রেন্ড। প্রায় আড়াই বছরের রিলেশান ছিলো আমাদের মধ্যে। সবচাইতে বড় কথা আমরা খুব ছোট বেলা থেকেই বন্ধু।
বিন্তীর আগেও আমার অর্পিতা নামের একটা মেয়ের সাথে রিলেশান ছিলো। মাস দুয়েক টিকেছিল সম্পর্ক টা। সারাজীবন শুনে এসেছি মানুষ নাকি তার প্রথম প্রেমের কথা ভুলতে পারেনা। কিন্তু অর্পিতার কোন প্রভাব আমার উপর পরেনি। সত্তি বলতে ঐ সম্পর্কের ব্যাপারে আমি নিজেও কনফিউজড ছিলাম। ভালবাসা ছিলো না বয়ঃসন্ধি কালের বুনে উল্লাস ছিলো তা নিয়ে আমি নিজেই উৎকন্ঠিত।
এরপর থেকেই বিন্তীর সাথে যোগাযোগ বাড়তে থাকে। একটু একটু কাছে আসা থেকে প্রণয়ে পরিণত। খুব কম মানুষ কে আমি জীবনে বিশ্বাস করি। তার মধ্যে বিন্তী একজন। সম্পর্ক টা শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও বিশ্বাসে এতটুকুন চির ধরেনি। দু বছর পার করার পর আমি ভাবিই নি যে সম্পর্ক টা শেষ করে দিতে হবে। আস্তে আস্তে বিন্তীর সমস্যা শুরু হয়। সাথে পারিবারিক ঝামেলা তো আছেই। বিন্তীর সাফ কথা সম্পর্ক টা আগানো সম্ভব না। কথাটা শুনার পর নিজে নিজেই জমে গিয়েছিলাম। এই প্রথম বুঝেছি যে কাছের মানুষ গুলো দূরে চলে কতটা কষ্ট। শেষ অবধি সিগারেট এর পরিমাণ টা আর একটু বাড়ে। জোর করে আটকিয়ে রাখার চাইতে ছেড়ে দেয়াই ভালো। আর যাই হউক জোর করে মানুষের মন বেশিদিন পাওয়া যায়না। যদি আবার ফিরে আসে সে আশায় ছেড়ে দিয়েছিলাম।
পছন্দের রেস্তোরা তে দুপুরের খাবার সাথে বিন্তী ছিলো। মাঝেমাঝে ভুলে যাই যে এই মানুষ টা এখন আর আমার সাথে নেই। অন্য একটা মানুষের হাত ধরে স্বপ্ন বুনছে।
ঃ তোমার বয়ফ্রেন্ড এর কি অবস্থা?
_ হুম। ভালো তো। কোন সমস্যা হয়েছি নাকি?
ঃ উঁহু। তা হবে কেন?
বিন্তী ড্যাবড্যাব করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। খুব কষ্ট হলেও বলতে পারছিনা ভালবাসি। হয়তো আমি আটকে গেছি এ ত্রিভুজ প্রেমের মায়াজালে নয়তো ঈশ্বর আমাকে আটকে দিয়েছেন।