টুকটুকি দেখতে ততোটা সুন্দর না যতোটা ওর মুখ সুন্দর। রোগা পাতলা একটা শরীর। জৈষ্ঠ মাসের কালবৈশাখী তে যে কোন সময় উড়ে যেতে পারে। তবে ওর বিশ্বাস উড়ে যাওয়ার সময় আমি হাতটা ধরবো। আসলেই হয়তো ধরবো।
শুকনো একটা মানুষের মুখ দিয়ে এতো কথা বের হয় আমার অবিশ্বাস্য মনে হয়। সব এনার্জি কথা বলতে বলতেই শেষ। তাই হয়তো শরীরের এই দূরাবস্থা।
আধঘণ্টা কটকট করার পর মনে হয় এখন একটু ক্লান্ত। প্রথম মনে হতো টুকটুকি ভার্সিটির লেকচারার আর আমি ফার্স্ট ব্রেঞ্চ এ বসা সুবোধ বালক।
ঃ তুমি আর কয়টা চাকরি ছেড়ে দিবা?
_ আরেহ এইটা তে মন টিকিতেছিল না।
ঃ মোট কয়টা হলো?
_ সর্বমোট ছয়টা।
ঃ আরো ছাড়বার ইচ্ছে আছে?
_ উঁহু। কসম করে বলতেছি।
ঃ এইবার নিয়ে কতোবার কসম কাটছো?
_ এইটা তো মনে নেই।
ঃ কি মনে থাকে তোমার?
_ শুধু তোমার কথা।
ঃ ফাজলামো বাদ দাও। তোমার মুখটা দেখতে ইচ্ছে করছেনা। তুমি উল্টো দিকে ঘুরে বসো।
_ এখনি?
ঃ চুপ করো তো। যা বলছি তাই করো।
_ আচ্ছা...
ঃ বাসা থেকে বিয়ের কথা বলছিল? আর কতোদিন বসে থাকবো? দেখতে দেখতে গ্রাজুয়েশন শেষ হয়ে গেলো আর তুমি অকর্মাইই রয়ে গেলা।
_ চলো তাহলে বিয়ে করে ফেলি। তাহলে মনে হয় কর্মা হয়ে যাবো।
ঃ আচ্ছা আমি গেলাম। বসে থাকতে ইচ্ছে করছেনা। তুমি বসে বসে কর্মা হও। আর এর মধ্যে আমি দু-তিনটা ছা ফুটাই।
_ তাহলে ভালোই। সুন্দর একটা ফ্যামিলি হয়ে যাবে।
ঃ ফ্যামিলি হবে হয়তো। তবে তোমার না, অন্যকারো।
সুযোগ গুলো হাতছাড়া হয়ে গেলে আর ফিরে আসেনা। সৃষ্টিকর্তা হয়তো মুখ ফিরিয়ে নেয়। আর আমি এখনো কর্মা হওয়ার চেষ্টা করতে করতে ক্লান্ত।
বুকের বাম পাশটা এখনো চিনচিনিয়ে ব্যাথা করে। এ ব্যথার কোন রং নেই।
ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে দেখি বৈশাখী ঝড়ে উড়ে যাওয়া পাতলা শরীর টা অন্যকোন হাতে ধরা। এখনো আমার হয়তো টা ই রয়ে গেছে।
দুঃখ সইতে সইতে নাকি মহাপুরুষ হওয়া যায়। আমিও মনেহয় তাই হয়ে গেছি। মহাপুরুষ রা নাকি পার্থিব কিছু স্বপ্ন দেখেনা। তবে আমি দেখি। একটা শুকনো হাত আমার দিকে বাড়ানো আর আমি ধরতে পারছিনা...
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:১৬