পরপর তিনটা বাস চলে গেছে। আমি এখনো ঠাঁই দাঁড়িয়ে। লাল হিজাব পরা মেয়েটি এখনো আসেনি।
গোধূলির আলোতে আমার তেল চিটচিটে বদনখানি চিকচিক করছে। তবে গরম টা অসহ্য।
কেন জানি এখনো নামটাই জানা হয়নি। হয়তো একটু একটু করে যে অনুভূতি জমছে তা ভেঙে যাওয়ার ভয়ে। ভয় পাওয়া যে খারাপ জিনিশ।
পাঁচটা আটচল্লিশ। এখনো আসেনি মেয়েটা। কেন দেড়ি করছে আসলে আচ্ছা করে বকে দিবো। পুচকি মেয়েটা জানেনা যে আমি প্রত্যেকদিন অপেক্ষা করি।
শেষতক এসেছে। তবে আজকে হিজাব করেনি। নীল রঙের একটা জামা পড়ে এসেছে। সাথে রঙিন চশমা। অনেকটা আমার তেল চিটচিটে মুখের মতন।
তবে একটু কথা বলা যেতে পারে আজকে। কোঁকড়ানো চুলের উড়াউড়ি দেখে মনে হচ্ছে মেজাজ ভালো। চান্স সিক্সটি বাই ফরটি।
: জ্বী হ্যালো। শুনতে পাচ্ছেন?
_ আমি বধির না। বলুন...
: জ্বী আপনার নামটা বলা যাবে। বললে একটু খুশী হতাম আর কি।
_ আমি বধির মানুষ দের খুশী করতে পছন্দ করিনা।
: এইটা কেমন কথা ছিলো?
_ নাম কি আপনার?
: শুভ। আপনি চাইলে তুমি করেই বলতে পারেন।
_ আচ্ছা বুঝেছি। কি করা হয়?
: আপনার জন্য দাঁড়িয়ে থাকি।
_ তা তো দেখতেই পাচ্ছি। বলি আর কিছু করা হয়না?
: জ্বী হয়তো। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। আর কিছু না।
_ আর কিছু শুনতে চাইনি আমি। অফিস শেষ করে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকাটা কি ভালো দেখায়?
: জ্বী না। তবে মনের কাছে যে সব হাড় মানতে বাধ্য।
_ আপনার ফিলোসফি আপাতত রাখুন। আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে। আপনি যেন কি জানতে চাচ্ছিলেন?
: জেনে গেছি।
_ কিভাবে?
: আপনার গলায় ঝুলানো আইডি কার্ড দেখে।
_ যাক কিছুটা বুদ্ধি আছে অন্তত। অতটা হাধারাম না তাহলে।
: জ্বী কিছুটা আছে।
_ কাল থেকে আর পাঁচটায় অপেক্ষা করতে হবেনা। ছয়টায় আসলেই হবে।
: জ্বী আচ্ছা।
_ আচ্ছা আমি যাই কেমন।
সে চলে যাচ্ছে আর আমি ভিজে গেছি। কিছুটা বৃষ্টির বৃষ্টিতে...