somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসা vs. বিয়ে(তৃতীয় এবং শেষ পর্ব)

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রওনিতা আবার তার ইজি চেয়ারে বসে দোল খেতে লাগল।কৌশিকের ভীত চেহারা দেখে রওনিতার হাঁসিই এসে গেল।আপনি কি ভয় পাচ্ছেন নাকি আমাকে?আসলে আমি আপানার ফেসবুক প্রোফাইল চেক করছিলাম মোবাইলে।কিছু পাবলিক করা পোস্ট আর ছবি ছিল।আপানার ফ্রেন্ডসদের কিছু কমেন্টস ও পড়লাম।এসব কমেন্টসের কিছু কমেন্টসে আপনার আগের গার্লফ্রেন্ডসদের কে নিয়ে আপনার ফ্রেন্ডসরা বেশ মজার কথা লিখেছে।কেন যে আমার সামনে এমন ভেজা বেড়ালের মত বসে আছেন? কৌশিকের মন চাচ্ছিল এখনই যেয়ে ওই হারামির বাচ্চাগুলোকে গুলি করে মেরে ফেলতে।বাই দা ওয়ে,২০১৩ সালের নভেম্বরে আপলোড করা এ্যালবামের একটি ছবিতে তো আপনি বলিউডের নায়িকাদের মত শর্ট ব্লাউজ পরা একজনের কোমরে হাত দিয়ে বসেছিলেন।আপনাদের দুজনকে যা মানিয়েছে না!

কৌশিক বুঝতে পারল অবস্থা তার হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।তাকে অবস্থাটা কন্ট্রোল করা দরকার।দেখুন ফেসবুক দিয়ে কি আর মানুষকে যাচাই করা যায়?ওরা আমার ফ্রেন্ডস,দুষ্টামি করে কি লিখেছে না লিখেছে আর ওই মেয়েটা ও আমার শুধু ফ্রেন্ডই হয়।ভুল বুঝবেন না আমাকে।

ও আচ্ছা আচ্ছা এবার বুঝতে পারলাম আমি।ঠিক আছে,আমি না হয় ভুলই বুঝলাম আর আপনি সঠিক।তা মিস্টার কৌশিক আপনার গলার বামদিকের নখের আঁচর টা কবের?যা আপনি আপনার শার্টের কলারের নিচে সযত্নে লুকিয়ে রেখেছেন।কৌশিকের সাথে অথৈর ব্রেকআপ হয়েছে চারদিন আগে।সেদিন ঝগড়ার এক পর্যায়ে অথৈ তার সাথে হাতাহাতি পর্যায়ে চলে যায় এবং তখন ই নখের আঁচরটা লাগে।কৌশিক এবার ভাল মতেই বুঝতে পারে রওনিতাকে পাওয়া তার জন্য এখন শুধুমাত্র স্বপ্নই।তাই আর কিছু না বলে সে উঠে দাড়িঁয়ে গেল।এবার আমার যাওয়া দরকার রওনিতা।বলেই সে দরজার দিকে হাঁটা দিল।

দাঁড়ান কৌশিক,যাওয়ার আগে একটা শেষ প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যান তো।আপনি কি জীবনে সত্যিই কাউকে মন দিয়ে ভালোবেসেছেন,নাকি আপনার কাছে ভালোবাসা আর বিয়ে দুটো বিপরীতমূখী বিষয়?মেয়েদের সন্মান আর ভালোবাসতে শিখুন কৌশিক,নাকি শুধু তাদের শরীরকে চাইতে।শেষের কথাটা কৌশিকের মনে এতই প্রভাব ফেলল যে ওর মন চাইলো এই মুহূর্তে যদি তার পায়ের নীচের মাটি টা দুভাগ হয়ে যেতো আর সে মাটির ভিতরে ঢুকে যেত তাহলে সবচে ভাল হত।আর এক মুহূর্ত ও আর না দাঁড়িয়ে তাড়াতাড়ি রুম থেকে বের হয়ে গেল।

ডাইনিং রুমে আসতেই কৌশিক দেখতে পেল ওর বাবা মা আর রওনিতার বাবা মা অনেক গল্প করছে।কৌশিককে দেখে ওর বাবা বলে উঠল,আরে কৌশিক এসে গেছে।অনেকক্ষণ কথা বললে তোমরা,আমরা কি সম্পর্কটা হ্যাঁ ধরে নিবো নাকি?সবাই এখন হাঁসি মুখে কৌশিকের দিকে তাকিয়ে উত্তরের অপেক্ষা করছে।কিন্তু কৌশিক চেষ্টা করে ও কোন কথা বলতে পারল না।ও এখনও একটু আগে ঘটা অবস্থাটার ধকল সামলে উঠতে পারেনি।একটু পর কৌশিকের বাবা মা রওনিতার বাবা মা থেকে বিদায় নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেল।যাওয়ার সময় কৌশিকের বাবা রওনিতার বাবাকে বলল,ভাই আপনি রওনিতার সাথে কথা বলেন আর আমি ও কৌশিকের সাথে কথা বলে রাতে আপনাদের ফোনে জানাব।

কৌশিকরা রওনিতাদের বাসা থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠল।গাড়িতে উঠার আগে কৌশিক রওনিতার বারান্দার দিকে তাকাল।রওনিতা দাঁড়িয়ে আছে বারান্দায় আর ওর দিকেই হাস্যজ্জ্বল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।রওনিতার এই হাঁসি কৌশিকের কাছে হাত না লাগিয়েও শত থাপ্পড় একসাথে মারার মত মনে হল।

গাড়িতে কৌশিক তার বাবা মায়ের সাথে কোন কথাই বলল না।আজ তার পুরানো সব স্মৃতি মনে পড়তে লাগল,মনে পড়তে লাগলো সেইসব অন্তরঙ্গ সময়গুলো যা তার আগের গার্লফ্রেন্ডরা তার উপর ভরসা করে তার সাথে কাটিয়েছিল,তার কানে ভেসে আসল সেইসব মেয়েদের কান্নার আওয়াজ।আজ কৌশিকের অনেক কষ্ট হতে লাগল তাদের জন্য এবং নিজের মধ্যে অপরাধবোধ সৃষ্টি হল।কৌশিকের এক সময় ধারণা ছিল মেয়ে মানুষ মাত্রই আবেগের সৃষ্টি,তাদেরকে আল্লাহ তাআলা হরেক রকম রুপে রংএ সৃষ্টি করেছে তো ঠিক ই,কিন্তু বুদ্ধি নামক উপকরণটা তাদের ব্রেইনে দিতে ভুলে গেছে।আজ সে ভুল ধারণার সম্পূর্ণরূপে অবসান ঘটালো রওনিতা।এ গার্ল নট অনলি উইথ বিউটি বাট ওলস উইথ ব্রেইন।





৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×