দৃশ্য ১ : স্বামীকে বেঁধে রেখে গর্ভবতী স্ত্রী কে ধর্ষণ করছে পাকিস্তানী সৈন্যরা । সময়টা ৭১।
দৃশ্য২ : রাঙ্গামাটির ঘাগড়ায় স্বামীকে বেঁধে রেখে গর্ভবতী মার্মা মহিলাকে পাঁচজন বাঙালী ধর্ষণ করছে । সময়টা ২০১৫।
এটা মাত্র একটা ঘটনার উদাহরণ দিলাম , অবস্থাটা এমন হয়েছে প্রায় প্রতি মাসেই একটা দুটো ধর্ষণের ঘটনা ঘটেই চলেছে । সব চেয়ে আশ্চর্যের বিষয় দেশটা বাংলাদেশ এবং ধর্ষকরা কেউ পাকিস্তানী নয় , বাংলাদেশী !!
মজার বিষয় হল মেইনস্ট্রিম পত্রিকাগুলোতে অমুক নায়িকার ব্রেসিয়ারের ফিতার ছবিটা বেশ স্পষ্টই আসে , অমুক নেতার হাঁচি কাশির খবর বড় বড় শিরনামে বের হয় । কিন্তু এই আদিবাসী সরল মানুষগুলোর কান্নার শব্দ তাদের কাগজে জায়গা পায় না ।
এর চেয়ে মজার বিষয় হল, বাঙালীদের পায়জামার ফিতা যে এই সব আদিবাসী মেয়েদের দেখলেই আজকাল ঢিলা হয়ে যাচ্ছে সে খবর বেমালুম চেপে যাচ্ছে মেইনস্ট্রিম মিডিয়াগুলো।
জি জি , সব বাঙালী পুরুষ এক না । যারা ধর্ষণ করছে ওরা মোটেও বাঙালী না । ওদের কোন জাত পাত নেই । সবই মানছি ,
কিন্তু প্রশ্ন হল এই এক দুলাইন বলেই যখন আপনার প্রতীবাদটা ঢেঁকুরেই ফুঁড়িয়ে যাচ্ছে এবং আপনার এই চুপ হবার সুযোগে ঐ শুয়োরেরা আর একটি ধর্ষণের সুযোগ খুঁজছে সে জন্য কি আপনি দায়ী নন ? মেইনস্ট্রিম পত্রিকাগুলোর চুপ থাকা , আমাদের মিউ মিউ স্বভাব আর নেতাদের চোখ বন্ধ রাখাটাও কি এক ধরণের ধর্ষণ নয়?
আমরা বাঙালীরা পাকিস্তানীদের ঘৃণা করি , কেন করি সেটা সবাই জানি । খুব ছোট্ট একটা প্রশ্ন করি , এখন যদি এই আদিবাসী গোষ্ঠী ঠিক একই ভাবে বাঙালীদের ঘৃণা করে সেটা কি খুব অযৌক্তিক হবে ?
আমরা বাঙালীরা নিজেদের নিয়ে গর্ব করি , আমরা বলি আমরা একটা প্রতিবাদী সংগ্রামী জাতি। দাম দিয়ে স্বাধীনতা কিনেছি কিন্তু যখন দেখি সেই জাতিই এখন পাকিদের মত আচরণ করা শুরু করেছে তখন খুব লজ্জা হয় ।
এক জন আদিবাসীর উপড়ে আঘাত মানে সমস্ত বাঙালীদের উপড়ে আঘাত । স্পষ্ট করে বলতে চাই স্বার্থপর মিডিয়া কর্তারা , নেতা এবং সুশীল টকমারানিরা চোখে কানে কাপড়্গুজে বসে থাকুক ।
যেহেতু আমরা কার দালালী করি না তাই এই সরল আদিবাসী মানুষগুলোর উপর নির্যাতনের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি । প্রয়োজনে আমরা ওদের পাশে থেকে ঐ সব শুয়োর স্বভাবের অত্যাচারী বাঙালীদের বিরুদ্ধেই আন্দোলন করব । আমার আদিবাসী বোনটি , ভাইটির পাশে আছি থাকব।