নেফার সিটির দৃষ্টি-আকর্ষণী পোস্টে আমি গতকাল ৪টি কমেন্ট করেছিলাম, ১১৮, ১২০, ১২২ ও ১২৫ নম্বর। এর দুটি কুমিল্লা সেনানিবাসের নিরাপত্তা বিষয়ে এবং তৃতীয়টিতে উল্লেখ করেছিলাম যে, পোস্টের ফোকাস তনু হত্যা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধেই সীমিত থাকা উচিত। কিছু কিছু কমেন্টে সেনাবিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন অপ্রয়োজনে, তাতে ফোকাস শিফট হচ্ছে। এতেই নেফার সিটি আমাকে মিথ্যাবাদী বলে গালাগাল করে ফাজিল ও ব্রেন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে গালাগাল করলে আমি তার প্রতিবাদে ৪র্থ মন্তব্যটি করি। আজ দেখি আমার একটিও মন্তব্য নাই, মুছে দিয়েছেন। এখানে আমি আমার শেষ কমেন্টটি তুলে দিতে চাই...
----------------------------------------------------
---------------------------------------------------
ক্ষতিগ্রস্থ বলেছেন: আপনার সেনাবিদ্বেষের মাত্র কয়েকটা নমুনা দেয়া হল...
১) জ্বি, দেশের সবথেকে নিরাপদ স্থান বলা হয় ক্যান্টনমেন্টগুলোকে তেমনই একটা ক্যান্টনমেন্টে ধর্ষণ করে হত্যা করা হলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে ইতিহাস বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুকে।
২) চেষ্টা করলে তারা ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে তনুকে ধর্ষণ করে হত্যাকারীদের ঠিক খুঁজে বের করতে পারবে।
< ক্যান্টনমেন্টে ধর্ষণ করে হত্যা করা হলো - পুলিশ জানেনি, কোন সাংবাদিক জানেনি, আপনি নিশ্চিত জেনে গেলেন তনুকে ক্যান্টনমেন্টেই ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে? খুন-ধর্ষণ করে বাইরে থেকে এখানে এনে লাশ ফেলে গেছে, এটা হতে পারে না? এত বেশি নিশ্চিত জেনে গেলে অসুবিধা হতে পারে, পুলিশ তখন আপনাকে জেরা করতে নিয়ে যেতে পারে!
৩) ২৯ নম্বর মন্তব্যে বলেছেন, লেখক বলেছেন: ক্যান্টনমেন্টের নীরবতা বিষয়টাকে সিভিল আর আর্মিকে মুখোমুখি করে দিচ্ছে। আমি পুরোপুরি বিশ্বাস করি আর্মি ইন্টেলিজেন্স যদি চায় খুব দ্রুতই অপরাধীকে বের করতে পারবে। তাদের উচিত রাখঢাক না করে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে সবকিছু প্রকাশ করা।
< আর্মি আপনার মুখোমুখি হয়নি, আপনি ব্লগে মুখ খিচড়ে এক গাদা হিংসা নিয়ে সেনাবাহিনী মুখোমুখি দাড়িয়ে গেলেই আপনার জবাব দিয়ে দেবে? কি বলবে? রাজনীতিকদের মত সত্যানুসন্ধানের ধার না ধরে বলে দেবে যে, না, লাশ ক্যান্টনমেন্টে পাওয়া যায়নি বা এতে আর্মি জড়িত না! পুলিশ তাদের তদন্ত করছে, আর্মিও তাদের তদন্ত করছে, তদন্ত শেষ হোক। সেনাবাহিনী কোন মিডিয়া চালায় না, ব্লগও না। সেই অধিকার আপনার, সেই অধিকার এবিউজ করার অধিকারও আপনার, যেটা করছেন, সেনাবাহিনী ঢাকের বাদ্য না...
৪) ৪৯ নম্বর মন্তব্যের জবাবে লিখেছেন, দেখা যাক ক্যান্টনমেন্টবাসীরা আমাদের তনু হত্যার বিচারের জন্য কতটুকু সাহায্য বা কতক্ষণ রাখঢাক করে।
< আর্মি কোন ঘটনায় মাইক নিয়ে নেমে পড়ে 'একটি বিশেষ ঘোষনা' বলে চেচাতে থাকে যে, রায় দিয়ে দিলেন আর্মি রাখঢাক করছে?
৫) ৭৫ নম্বর প্রশ্নের জবাবে লিখেছেন, আর ক্যান্টেমেন্টেই যখন ধর্ষণ করে হত্যা করা হয় তখন তো তারা সুযোগটা ভালোভাবে পেয়ে যায়। ...বিষয়টা যখন ক্যান্টনমেন্টের মত স্থানে হয়েছে ...তিতো হলেও সত্যি যে সবসময়ই শোনা যায় বাঙালি সেটেলার কর্তৃক পাহাড়ি ধর্ষণে সেনাবাহিনীর ইন্ধন থাকে। এটা যদি সত্যি হয়ে থাকে তবে বলতে হবে পাকবাহিনী থেকে তাদেরকে আলাদা করে দেখাটা অনেক কষ্টসাধ্য বিষয় হয়ে দাড়াবে।
< সুশিল আর থাকা হল না, ছত্রে ছত্রে সেনাবিদ্বেষের নোংরা শ্বদন্ত বেড়িয়ে পড়েছে...
৬) Mahmudur Rahman বলেছেন: vai cantonment nirapod elakay.....ghotonata ghotse CCA te NOt CC a.Cantonment area and cantonment is a vinno jinish.....
লেখক বলেছেন: ভিন্ন জিনিসটার মধ্যে কি খুব পার্থক্য? ক্যান্টনমেন্টের বাইরে অনেক দূর পর্যন্ত সেনাবাহিনীর দখলে থাকে। তাদের চেকপোস্ট থাকে, গার্ড থাকে, টহল গাড়ী থাকে, সিসি ক্যামেরা থাকে। পার্থক্য খুব বেশি থাকে না।
< Mahmudur Rahman একটি অত্যন্ত বাস্তব ও উপযুক্ত যুক্তি দেখিয়েছেন, ক্যান্টনমেন্ট ও ক্যান্টনমেন্ট এলাকা এক না, তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ভিন্ন, অথচ আপনি এতটুকু আমলে নিলেন না, উড়িয়ে দিলেন। ঢাকায় কচুখেত বাজার ক্যান্টনমেন্ট এলাকার মধ্যে পরেছে, কিন্তু তা ক্যান্টনমেন্টের নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে না। এই বস্তব সত্যটা প্রত্যাখ্যান করা থেকে আপনার সেনাবিদ্বেষটা অনায়াসে বেড়িয়ে পড়ে।
--------------
< ব্লগিং কোন গালাগালের জায়গা না, আমাকে ফাজিল বলা বা ব্রেন ক্ষতিগ্রস্থ বলা দিয়ে আমার কিছু আসে যায় না, কিন্তু আপনি আপনার জাত চিনিয়ে গেলেন। আপনার জাতটাতো আপনারই, সেটা চেনাতে থাকুন... এবং সুস্থ থাকুন।
-------------------------
------------------------
এবার আমার নিজের বক্তব্য...
আর্মি কেন তনুকে নিয়ে কিছু বলছে না, সেটা নিয়ে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। আর্মির মিডিয়াও নাই, ফেসবুক-ব্লগও নাই। সেনাবাহিনী ঢাকের বাদ্যও না। আর্মি পলিটিশিয়ানের মত বলে দিতে পারে না, এতে আর্মির কেউ জড়িত না। এর জন্য তদন্তের দরকার। তদন্তের ভিত্তিতে বক্তব্য দিতে হবে। এখন আর্মি শাঁখের করাতের ভিতরে আছে, কিছু বলছে না, তাতেও দোষ। আবার কিছু বললে বলা হবে আর্মি তদন্ত প্রভাবিত করছে।
কুমিল্লা সেনানিবাসে ৯৯টি পকেট গেট আছে, সারাক্ষণ খোলা থাকে, আগে আর্মি রাত ১২টার পরে বন্ধ করতে চেয়ে রাজনৈতিক আন্দোলন ও চাপের কারণে পারেনি।এই ক্যান্টনমেন্টের নিরাপত্তা অন্য যে কোন ক্যান্টনমেন্টের চেয়ে খারাপ ভৌগলিক এবং এর আশেপাশে ও ভিতরে বেসামরিকদের অবস্থানের কারণে। এতদ্সত্ত্বেও ক্যান্টনমেন্টের ভিতরে লাশ পাওয়া গেলে আর্মির দায়দায়িত্ব থাকে। কিন্তু তাকে ধর্ষণের দায় তদন্তে আবিস্কৃত হওয়ার আগে পর্যন্ত আর্মির উপরে বর্তায় না, যেটা গণজাগরণ মঞ্চ এবং ফেসবুক-ব্লগে সবাই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষে বলতে চাচ্ছে।
এই মেয়েটি রেপড হয়েছে, সেটা পুলিশ বলেনি, মেয়েটির বাবাও বলেছে বলে শুনিনি। কিন্তু গণজাগরণঅলারা বলছে, কিসের ভিত্তিতে বলছে সেটা তারা বলছে না, আমি লাশের কোন প্রত্যক্ষদর্শীর জবানিতে বলা হয়েছে বলে শুনিনি, পড়িনি। সত্য উতঘাটনের চেয়ে, মেয়েটির স্যাঙ্কটিটি রক্ষার চেয়ে ধর্ষিত হোক না হোক, হওয়ানোটা আজ কারও কারও কাছে বেশি জরুরি!
তনু হত্যার এবং ধর্ষিত হয়ে থাকলে ধর্ষণের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাওয়ার চেয়ে ফোকাস যখন আর্মিকে অপরাধী, কালপ্রিট বানিয়ে অপপ্রচারে নামাতে শিফট হয়, তখন এই বিকৃত আকাঙ্খার ভেতরে কোন ষড়যন্ত্র খুঁজে না পেলে আমাদের সে কোন বোধ ও বিবেক যা তনুর পক্ষে কথা বলছে?