আমরা বাঙ্গালীরা গোল্ডফিস মেমরীর জাতি। কিন্তু এত গোল্ডফিস না যে এত তাজা ইতিহাস একদিনে ভুইল্লা যামু। তাই ম্যামোরি শর্ট খাওনের আগেই কথাগুলা টুইক্কা রাখি।
সাভারের ঘটনায় প্রথমেই আসে ফায়ার বিগ্রেড এবং তারপর প্রায় একই সময়ে পুলিশ-র্যাব।
এরপরের ঘটনাক্রমঃ
১. সর্ব প্রথম চিকিৎসা সেবা দেয়া শুরু করে এনাম মেডিকেল
২. স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক উপস্থিত হন এবং বেসরকারী উদ্ধার তৎপরতার নেতৃত্ব শুরু করেন।
৩. প্রথম বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং ঢাকা শহরে প্রথম চিকিৎসা সেবা দেয়া শুরু করে ইবনে সিনা
৪. সেনাবাহিনীর আগমন, এবং জনতার কাছে রক্ত চেয়ে আহবান
৫. ফেসবুক পেজ বাঁশের কেল্লার ব্যপক প্রচারণার মাধ্যমে প্রথম রক্ত দেয়া শুরু করছে রাজাকারের বাইচ্চারা মানে ছিবিরের সাভার অঞ্চলের পুলাপাইন।
৬. এর পর বিএনপি হরতাল উইথড্র করে এবং বেগম জিয়া সকল কর্মীগণকে সেবা কাজে অংশ নিতে আহবান জানান। এবং সর্বপ্রথম অর্গানাইজ উপায়ে রক্ত সংগ্রহ করা শুরু করে।
৭. এরপর আবার ফেসবুকের কল্যানে গণজাগরণ মঞ্চ ব্যপক প্রচারণা চালায় রক্ত সংগ্রহ করতে এবং রক্ত সংগ্রহ শুরু করে। বেশ অপরিকল্পিত ও অগোছালোভাবে।
৮. হেফাজতি হুজুররা সন্ধ্যা নাগাদ উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেয় যদিও সেটাও ছিল বেশ অপরিকল্পিত ও অগোছালো। অনেকটা সাধারণ পাবলিক স্টাইলে
৯. স্থানীয় অঘোর চন্দ্র মডেল বিদ্যালয়ে হস্তান্তরের উদ্দেশ্যে লাশ রাখা শুরু হয় এবং আত্নীয়-স্বজনরা সেখানে প্রিয়জনদের খোজাখুজি শুরু করেন।
১০. মাননীয় বিরোধীদলের নেত্রীর ঘটনাস্থল সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্ভবত ব্যস্ততার কারনে ঘটনাস্থলে যাইতে পারেন নাই বিশেষ কইরা নতুন নির্বাচিত মহামান্য প্রেসিডেন্ট সাভার স্মৃতিসৌধে গেলেও সম্ভবত তিনিও সময়ের অভাবে রানা প্লাজা এলাকায় যাইতে পারেন নাই। রাষ্ট্র পরিচালনার মত গুরুত্বপূর্ণ কাজে তাঁদের ব্যস্ত থাকতে হয়।
সর্বপোরি, ২ টা গ্রুপ সবচেয়ে বেশী প্রশংসা পাওয়ার মত কাজ করছে। যদিও তারা প্রসংশা পাওনের আশায় এগুলা করে নাই, ভিতরের তাগিদ থেকে করছে। তাগো প্রশংসা ইয়ে করার মত টাইম নাই। কাজগুলা হইলো
১. সাভারের স্থানীয় পাবলিক যারা জীবনের মায়া ত্যাগ করে ভাঙ্গা ভবনের ভিতরে ঢুকে গিয়ে উপস্থিত বুদ্ধি দিয়া উদ্ধার তৎপরতা চালায় এবং
২. আম তরুণ সমাজ যারা ফেসবুক ও ব্লগে ক্রমাগত রক্ত, চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য, ফোন নম্বর ব্যাপকভাবে শেয়ার করে। সম্ভবত বাংলাদেশের এমন একজনও ফেসবুক বা ব্লগ ব্যবহারকারী নাই যে কি না তার ওয়ালে বা ব্লগে কিছুক্ষণ পরপর তথ্যগুলা শেয়ার করে নাই।
সর্বশেষঃ সবচেয়ে বিরক্তিকর এবং ক্ষেত্রবিশেষে নিন্দনীয় ভুমিকা পালন করে গণমাধ্যম বিশেষ কইরা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া কর্মীরা। তারা উদ্ধার তৎপরতার জন্য করা ফুটা দিয়া মাইক্রোফোন ঢুকাইয়া আটকে পড়াদের অনুভূতি জানতে চায় যদিও তাদের প্রত্যেকের পিছন দিয়া জন্মগত ভাবেই অন্ততঃ একটা কইরা ফুটা আছে।
বি.দ্র.
১. দুঃখের মইদ্ধে বড় মামা যেসব কৌতুক ঝাইড়া জাতিরে একটু হাসানোর চেষ্টা করছিলেন সেগুলা ইচ্ছা কইরা বাদ দিছি কারণ মন-মেজাজ ভালো নাই
২. কারও কাছে আরও কোন কথা বা ভিন্ন মত থাকলে জানাইতে পারেন।
আল্লাহ আমাদের সেলাই দাদাভাই আর দিদিমনিদের রক্ষা করুক। আমিন। আর যেন একজন আটকা পড়া ও আহতও নতুন করে নিহত না হয় ঘটে ইয়া আল্লাহ!