somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পতিতালয়ে গমনের বাস্তব অভিজ্ঞতা। বাচ্চারা টিভি দেখতে যাও।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যৌবনের গান যখন আমার বুকের কোণে ধীর তাল-লয়ে বাজনা শুরু করল, নাকের নিচে দেখলাম কালো গোঁফের রেখা উকি দিচ্ছে। কেমন কেমন যেন লাগে। এলাকার বড়ভাইদের আলাপের ফাঁকে ফাঁকে শুনে ফেলেছি গাঙ্গিনার পাড়ে নাকি যাওয়ার জায়গা আছে, যেখানে সবাই যায়। বিষয়টা আগে বোঝতাম না।
কে যেন আমাকে ভর্তি করিয়ে দিল ময়মনসিংহের একটা কলেজে আজ থেকে গুইন্না ১০ বছর আগে। থাকার মতো কোন আত্মীয়-স্বজন নাই বিধায় মেসেই উঠতে হলো। নতুন ক্লাশে বন্ধু পেলাম কাওন (অভিজ্ঞতার ১৫ কলা পূর্ণ), বাবু (১৬ কলা পূর্ণ), নাহিদ (আনাড়ি), হারুক (আনাড়ি) আর আমি বান্দর (আনাড়ি)। তো যে মেসে থাকি সেখানে বন্ধু হলো কুমন, আজীব।
ময়মনসিংহে থাকি, কেউই ভালো করে এই শহরের রাস্তা-ঘাট বা মার্কেট চিনি না। একদিন প্রস্তাব করলাম চল আমরা রেলওয়ে স্টেশন দেখতে যাব। ময়মনসিংহ নাকি রেলওয়ে জংশন। কিভাবে জংশন হয় তাও দেখব। আর দেখব কিছু নতুন মার্কেট। শুনেছি হাবীব মার্কেটে নাকি সস্তায় শার্ট-প্যান্ট কিনতে পাওয়া যায়। সেই মতে হাঁটা শুরু করলাম চরপাড়া থেকে কাঁচা বাজারের ভিতর দিয়া। যেতে যেতে গিয়ে পৌঁছলাম রেলওয়ে জংশনে। জংশন রে বাবা জংশন। কি বড় আর বিশাল। ৫/৭ টা ট্রেন স্টেশনে। ২/৩ টায় যাত্রী উঠানামা করতেছে, বাকিগুলা পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কাজে ব্যাস্ত। পুরোটা ঘুরে দেখলাম। পেসেন্জার রেষ্ট হাউস কি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন!!! কফ, থুতু, পানের পিক, বিড়ির পাছা কি নেই সেখানে!!!! বসতেও ঘিন্না হয়। এসব দেখে শুনে হাটলাম সামনের দিকে। গিয়ে পড়লাম ৫ রাস্তার মোড়ে। ওরে বাবা ৫টা রাস্তা ৫ দিকে চলে গেছে। তখন কিন্তু মোড়ের এই হোটেলটা হয়নি। সামনেই দেখি দোয়েল শপিং কমপ্লেক্স। সুন্দর সুন্দর টি শার্ট আর প্যান্ট টানায়া রাখছে। ঘুরে ঘুরে দেখলাম। বিক্রেতারা এমনভাবে ডাকে যেন আমি তাদের কোন জনমের খালাতো ভাই। আমরা তো আর ভয়ে দাম বলি না। শুনেছি দাম বললেই নাকি জোড়াজুড়ি করে মাল গছিয়ে দেয়। তারপর একটু এগিয়েই দেখি হাবীব মার্কেট। ভিতরে ঢুকে তো পুরাই টাস্কি। কত ধরনের কাপড় যে সেখানে আছে। কয়েকটার দাম জিজ্ঞেস করলাম। বেশ দাম চায়। এখান থেকে বেরিয়ে এভাবে প্রতিটি অলি গলি ঘুরতে ঘুরতে এসে পড়লাম বারী প্লাজার সামনে। এইদিকে দেখি একটা গলি। দেখতে দেখতে ঢুকে গেলাম সামনে। দেখি কেমন যেন একটা গন্ধ গন্ধ লাগছে। বাবু তো মিটি মিটি হাসছে। বলছে মামা তোমরা সামনে আগাও আমি একটা জিনিস দেখি দোকানে পাই কিনা। এবার আমরা ৪ জন হয়ে গেলাম। কাওন আর নাহিদ আগে আমি আর হারুক পিছে। গলির মাথায় গিয়ে দেখি কিছু পুরুষ লোক সিগারেট টানছে আর কোনায় কোনায় আলো আঁধারিতে কিছু মেয়ে স্বল্প বসনে ঠোঁটে রঙ মেখে ভঙ্গি করে দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের দেখে পুরুষ লোকেরা একটু কেমন যেন করলো। কতইবা আমাদের বয়স তখন ১৬ হবে, মাত্র তো কলেজে ভর্তি হয়েছি। নাহিদ শুকনা চিকনা-চাকনা ছিল, একটা মেয়ে তাকে ধরে ফেলল। কাওন চালাক ছেলে দিল দৌড়, ওর দৌড় দেখে আমি আর হারুক ও দৌড়। বাবু এক দোকানের কাছে দাড়িঁয়ে ছিল। আমাদের দৌঁড় দেখে সেও দিল দৌড়। দৌড় রে দৌড়, দৌড় কারে কয়। হামারা দৌড় কা পিছে সালাউদ্দিন কা দৌড় হারে গা মার্কা দৌড়। জান হাতে নিয়া গলির মুখে আসলাম। বাবু বলে নাহিদ কইরে? কাওন কয় রাইখ্যা দিছে। ওরে এক মাইয়্যা ধইরা রাইখ্যা দিছে। আমি উপরের দিকে তাকাইয়া দেখি লেখা নাজমা বোর্ডিং। বাবুরে জিগাইলাম এইডা কি রে বাবু? কয় মামা এইডাও হেইডা। তয় দাম বেশি। আমি তো আবারও দিলাম দৌড়। একেবারে বারী প্লাজার সামনে এসে দাড়ালাম। ৫ মিনিট পর নাহিদ আসলো। আইস্যা জিজ্ঞেস করে তোরা দৌড় দিলি কেন? কাওন বলল, ছোট জামা পড়া মেয়ে তরে যহন ধরলো, আমি তহনই বুঝছি এইটা কোন জায়গা। তাই দৌড় দিয়া জান বাচাইছি। আমরা বললাম, কাওনের দৌড় দেইখ্যা আমরাও দৌড় দিছি। বাবু কয় আমি আগেই জানতাম এইডা সেই জায়গা, এই জন্য তোদের সাথে যাইনি।
জিজ্ঞেস করলাম কি করল রে তোরে ওই মাইয়্যা?
নাহিদ কয়ঃ কিছু না। জিগাইল কেন আইছি, কিছু দরকার কিনা, কি করি ইত্যাদি।
পরে বাসায় এসে কাদতে কাদতে বলল, "বাড়ি থেকে ৩৪০ টাকা এনছিলাম জুতা কিনার জন্য। সেই টাকাগুলি মাইয়্যাটা রাইখ্যা দিছে।"

এই ছিল প্রথম দিন পতিতালয়ে গমনের অভিজ্ঞতা।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:৫৯
৫৪টি মন্তব্য ৫৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×