somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি যে ভাই ব্যাংকার!! অবশেষে ব্যাংকার হয়ে গেলাম।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথমেই মিষ্টি খান সবাই। আমার ব্যাংকার হওয়ার খুশিটা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে এই মিষ্টি বিতরণ। এই মিষ্টিতে কোন মাছি বা তেলাপোকা নেই।



অবশেষে ব্যাংকার হয়ে গেলাম। আমার ব্যাংকার হওয়ার খবরটা পেয়েছি প্রবাসে বসে। প্রবাসের জবে রিজাইনও দিলাম গতকাল। জবটার জন্য আগষ্ট / ২০১৪ তে রিটেন টেষ্ট দিয়েছিলাম। প্রবাসে থেকে কিছুই স্টাডি করতে পারি নাই। শুধু টেষ্টের ৫ দিন আগে দেশে গিয়ে একটু বই পত্র ওল্টিয়েছিলাম। তাছাড়া বউ থাকলে কি আর ইচ্ছা করলেই রাত জেগে স্টাডি করা যায়!! রিটেন টেষ্ট বেশ ভালোই হয়েছিলো। তারপর আবার প্রবাসে চলে আসি। ২রা নভেম্বর/ ২০১৪ তে রিটেন টেষ্টের রেজাল্ট হয়। সেখানে আমি আমার নাম দেখে অফিসে জানাই। অফিস আমার আর্জেন্ট ছুটি এপ্রুভ করে। সেদিনই বাংলাদেশে ফিরে আসি। এবার ৭ দিন পর ভাইবা। যথাসময়ে ভাইবা বোর্ডে গেলাম। সেদিনের মতো আমিই সর্বশেষ প্রার্থী। মাগরিবের নামাজের পর আমার ভাইবা নিল। ৬টা প্রশ্ন করল। ৩ টা পারলাম। ৩টা পারি নাই। তবে আমার বেশ-ভুষা ভালো ছিল। একদম ফইন্নির লাহান। তারপর আবারও চলে আসলাম প্রবাসে। কিছুদিন অপেক্ষা করে যখন রেজাল্ট দিল তখন আর আমার নাম খুজে পাই না।

এরপর এক বছর গত হলো। ওই জবের আশা তো কবেই ছেড়ে দিলাম। সময়ও অনেক গড়াল। এ বছর ৫ই নভেম্বর আবার দেশে গেলাম। ২৮শে ডিসেম্বর আবার প্রবাসের বিমান ধরি। ২৯শে ডিসেম্বর সকালে পাসপোর্টটি প্রবাসের কোম্পানীর এইচআর ডি.তে জমা দিয়ে কাজ শুরু করি। ৩০ শে ডিসেম্বর দুপুরে বউ ফোন দিয়ে জানায় তোমার ব্যাংকে জব হয়েছে। তুমি চলে আসো। আমি ভাবলাম বউ দুষ্টুমি করে। ভালো করে জিজ্ঞেস করলাম, ও বলে "ব্যাংকের হেড অফিস থেকে তাকে কল দিয়ে তার পরিচয় জেনে তাকে বলেছে যে আপনার স্বামীর চাকুরি হয়েছে।" আমার বিশ্বাস হয় না। বউ এর কাছ থেকে ওই নাম্বারটা নিয়ে আমার এক ফ্রেন্ডকে জানালাম এবং বললাম তুমি ওই ব্যাংকে গিয়ে একটু খোজ নাও তো বিষয়টা কি। ফ্রেন্ড ওই নাম্বারে কল দিয়ে জানলো যে ওই নাম্বারটি ব্যাংকের এইচআর ডিপার্টমেন্টের ডিজিএম এর। তারপর ব্যাংকে সশরীরে গিয়ে জেনে আসে যে সত্যিই আমার জবটা হয়েছে। তারপর খোজ নিলাম যারা (আমার পরিচিত) আমার সাথে এই পরীক্ষাটা দিয়েছিলো তাদের কি খবর। তাদের দুইজন জানালো তাদেরকেও কল দিয়ে জানিয়েছে যে জব হয়েছে। তারপর আর আমার সন্দেহ রইল না যে জবটা হয়েছে। তবুও নিশ্চিত হতে বউকে জামালপুর থেকে ঢাকা ব্যাংকের হেড অফিসে খোজ নিতে পাঠালাম। সে গিয়ে জেনে আসলো আসলেই জব হয়েছে। জয়েন করার ডেড লাইন ০০০০০। শালার বেটারা, খবরটা দিবি দুইদিন আগে দিতিস, বিমানের জানলা ভাইঙ্গা লাফ দিয়া আইসা পড়তাম। তাইলে কি আর আমার এত অপেক্ষা করতে হহতো!!

এবার তো তাহলে প্রবাসের লোটা-কম্বল গুটাতে হয়। অফিসে জানালাম ০৪/০১/২০১৬ তারিখে, তখনই রিজাইন দিলাম। অফিস আমাকে কনগ্রেচুলেট জানিয়ে রিজাইন পেপার গ্রহন করলো আর আমি আছি ফ্লাইটের তারিখের অপেক্ষায়। আমি ঢাকা শহরকে ভালোবাসি না, ঢাকাই আমাকে টেনে ঢাকা নিয়ে আসলো। ওহ আমার পোষ্টিং ঢাকাতে দিয়েছে।

পড়ালেখা করেছিলাম কমিপউটার ইণ্জিনিয়ারিং এ। ভেবেছিলাম বড় কিছু প্রোগ্রাম করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। কিন্তু জীবনের প্রথম জব (প্রাইভেট কোম্পানীতে) পেলাম এসিস্টেন্ট ইণ্জিনিয়ার - ইলেকট্রিক্যাল পদে। করলাম ৬ মাস। তারপর চলে আসলাম প্রবাসে - ৭.৬ বছর কাজ করলাম মেরিন সেক্টরে - কর্মাশিয়াল এসিস্টেন্ট হিসেবে। একবার দেশে গিয়ে জব নিলাম টেক্সটাইলে - পদঃ এক্সিকিউটিভ - ফেব্রিক্স. ১৩ দিন জব করে ছেড়ে দিলাম, ভালো লাগলো না। ফিরে এলাম প্রবাসের জবে। এইবার পেলাম ব্যাংকে। হালার কম্পিউটার, তুমি এতদিন পরে আমাকে ধরা দিলা। একটা সুখের খবর হলো: পাশ করার পর আমি ৩ মাসও বেকার থাকি নাই। এইবার যেদিন দেশে যাবো তার পরের দিনই ব্যাংকে জয়েন করবো। সবাই দোয়া করবেন যেন সোনার বাংলায়, প্রাণের বাংলায় মা-বাবা-বোন-বউ নিয়ে ভালো থাকতে পারি।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:০৫
৪৩টি মন্তব্য ৪৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×