somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

( ছোট গল্প ) – চুল

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এক.

“আলামিন ভাই, এক পাতা এন্টাসিড আর এক পাতা ডিসপ্রিন দেন তো” বলেই সুজয় বাঁ হাত প্যান্টের পকেটে চালান করে দিয়ে গোল্ডলিফের প্যাকেটটা বের করে নিয়ে আসে। ফার্মেসিতে আসলে সবার মধ্যেই একটু আধটু আড়ষ্ট ভাব থাকে, ভয়ে ভয়ে থাকে, উৎকণ্ঠা লুকানোর চেষ্টা করে, কিন্তু সুজয়ের মধ্যে তেমন কোন কুণ্ঠা দেখা গেল না, বরং একটা ঔদ্বত্য ভাব ফুটিয়ে তোলে দিব্বি সিগারেট ফুঁকে যাচ্ছে।

“ভাই আপনার দোকানে কি চুল পড়ার কোন ঔষধ, তেল বা কোন ক্রিম কিছু আছে?”, পাশ থেকে কেউ একজন জিজ্ঞেস করল। ঘাড় ঘুরিয়ে একবার তাকিয়েই নজর ফিরিয়ে নেয় সুজয়, লোকটার মধ্যে এমন কোন কিছু ছিল না যে দ্বিতীয়বার তাকাবে বা প্রথম নজরই চুম্বকের মত আটকে যাবে; একেবারে সাধারন বেশভূষার একজন লোক। “ঐ, আলামিন ভাই ঔষধ দিতে কইলাম না?”, কণ্ঠে ঊম্মা ঝড়ে পড়ে তার।

- বস্, একটু খারান, এই ভাইজানরে বিদাই দিয়া লই। পুরাতন কাষ্টমারদের একটা ধারনা আছে যে তাদের বেশি খাতির করা হয়, আসলে তা নয়; বরং নতুন নতুন কাষ্টমারদের ধরতেই দোকানিরা বেশি আগ্রহী, পুরাতনরা তো একটা দুইটা কথা বলে আজ কালের মধ্যেই ভুলে যাবে।

আলামিন তার অচেনা কাষ্টমারের সামনে ঝটপট কয়েকটা বোতল রেখে বলে, “এটা হইল গিয়া ‘স্মুথ হেয়ার ওয়েল’, ইউনিলিভারের বিদেশি প্রডাক্ট, তিন মাস ব্যবহার করলে চুল পড়া কইমা যাইব; এইডা হইল গিয়া ‘হিমালয় সুধা’ আয়ুর্বেদিক তেল, ইন্ডিয়ান মাল, তিন মাস মাথায় লাগাইলে চুলে পড়া একদম বন্ধ হয়া যাইবো;”

“আর এইডা হইল গিয়া আড়ল-মান্ডার তেল”, লম্বা চিকন মতন একটা কাঁচের বোতল দেখিয়ে বলে আলামিন; বত্রিশ দন্ত বিকশিত হাসি যেন একেই বলে, যদি মুখে দাঁতের সংখ্যা বত্রিশ না হয়ে বিয়াল্লিশ হতো তবে একে বিয়াল্লিশ দন্ত বিকশিত হাসি বলা হত নিঃসন্দেহে, “এক্কেবারে খাঁটি দেশি জিনিস, গ্যারান্টি; এক মাস লাগায়লে দেখবেন লাউ এর ডগার মত তরতর কইরা চুল গজাইতেছে।”

কিছুটা বিব্রত মনে হল লোকটাকে, দুই একবার চোখ পিট পিট করে দ্বিধায়িত হাতে চশমাটা খুলে সার্টের নিচ অংশের উল্টো পাশটা দিয়ে মুছতে মুছতে বলল, “আমি আসলে চুল পড়া বন্ধ করার ঔষধ চাচ্ছি না, আমি খোঁজচ্ছি চুল ফেলে দেওয়ার ঔষধ, যাতে চিরতরে আর চুল না গজায়”।

এই প্রথম লোকটার দিকে ভালো করে তাকায় সুজয়; মাঝ বয়সী মাঝারি আকারের মধ্যবিত্ত একজন মানুষ; হাতে তখনো চশমটা ধরা, চোখের চারপাশ দীর্ঘদিনের চশামা পড়ার কারনে হালকা কালচে হয়ে কিছুটা ভিতরে ঢুকে গেছে; কিন্তু লোকটার চোখে তারায় কি যেন একটা আছে! তীব্র ভালোবাসা ও বেদনার মিশ্র এক অনুভূতির ছায়া, সেটা এত তীক্ষ্ণ তীব্র যে দৃষ্টি আটকে যায়।

“নাহ ভাই, এমন আজিব কিসিমের কোন ঔষধ আমার এহানে নাই”, কিছুটা বিরক্তিভাব ফুটে উঠে আলামিনে কথায়, “কৈ থেকা যে এই সব পাগল ছাগল আইসা জোটে; চুল ফালায়া দেওনের কিরিম! হুম!”, মৃদু স্বরে বলেই সুজয়ের দিকে তাকায় সে, “বস্‌, আপনি না কি চাইছিলেন?”

“থাক, লাগবে না”, বলেই সুজয় লোকটার পিছু নেয়, হাতের সিগারেটটা প্রায় শেষ হয়ে এসেছে, প্যাকেট থেকে আরেকটা বের করে ধরিয়ে লম্বা করে টান দেয় সে। ধীরে সুস্থে আয়েসী ভঙ্গিতে হাঁটছে লোকটি; কাঁধে ঝুলানো মাঝারি আকারের একটা ব্যাগ; সাবলীল হাঁটা চলা দেখে বুঝা যায় ব্যাগে তেমন কিছু নেই, হালকা; হয়ত দরকারী কিছু কাগজপত্র বা ব্যবহারের জন্য কিছু কাপড় চোপড়, কিছুদূর হেঁটে লোকটা সোহাগের কাউন্টারে গিয়ে ঢুকে, পিছন পিছন সুজয়ও ঢুকে। বয়স কত হবে লোকটার? চল্লিশ পেরোয়নি নিশ্চিত, দেখে কলেজ কিংবা হাই স্কুলের শিক্ষকের মতন লাগে, কেন যে তাকে অনুসরন করছে সুজয় নিজেও জানে না। দূর থেকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে সে লোকটিকে। তেমন অস্বাভাবিক কোন আচরন চোখে পড়ছে না, টেবিলের উপরে পড়ে থাকা খবরের কাগজটা তুলে খুটিয়ে খুটিয়ে পড়া শুরু করে হঠাৎ সে, মাঝে মাঝে কি যেন নোট করে নিতে থাকে ডায়রিতে; হয়তো কোন অফিসের ঠিকানা কিংবা যোগাযোগের নাম্বার ভাবে সুজয়।

প্রায় আধা ঘন্টা পর সুপারভাইজার মত একজন এসে ডেকে বলে, “এস.টি-৫১১ ঢাকাগামী বাসের যাত্রীরা জলদি উঠে পড়ুন, কিছুক্ষণের মধ্যেই বাস ছেড়ে দিবে”। লোকটা উঠে ধীরে ধীরে বাসে দিকে এগিয়ে যায়, পেছন পেছন সুজয়ও বের হয়ে আসে। আরেকটা সিগারেট ধরিয়ে চলে যাওয়ার বাসটার দিকে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ, দারুন একটা কৌতুহল মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছিল, মনে হচ্ছে আগামী কয়েকদিন বেশ ভোগাবে, সিগারেট টানার পরিমানটা কয়েকদিন একটু বেশিই হবে।

দুই.

হলের সব ব্যাচেরই একটা নির্দিষ্ট রুম থাকে যেখানে রাত দিন জুয়া চলে। রশীদ হলের ৩০০৫ নাম্বার রুমটা সুজয়দের ব্যাচের জন্য বরাদ্দকৃত জুয়ারুম। এ রুমের দরজা জানালা কখনো খোলা হয় না, ধোঁয়াই আচ্ছন্ন থাকে সারাটাক্ষণ, চারটি খাট ঘরের চার দিকের দেয়ালে ঘেষে লাগানো মাঝে বিশাল ফাঁকা মেঝেতে বিছানা পাতা। সব সময়ই দেখা যায় পাঁচ থেকে দশ জন জটলা পাঁকিয়ে দিন রাত জুয়া খেলছে এখানে, মাঝে মাঝে দু একজন উঠে যায় আবার অন্যকেউ এসে যোগ দেয়, কিন্তু খেলা চলছে দিন রাত সর্বক্ষণ; অফুরন্ত তাদের থ্রী-কার্ড খেলার স্পিহা। সুজয় নিজেও মাঝেমাঝে আসরে বসে তবে বাড়াবাড়ি পর্যায়ে কখনো যায় না; মাঝেমাঝে আবার বিবেকের কাঠি টনটন করে নড়ে উঠে তার, সেদিন ভিতর থেকে সারাদিন রুমের দরজা বন্ধ করে রাখে সে, শত ধাক্কাধাক্কিতেও খুলে না, সেদিন আর খেলা হয় না; আর প্রথম থেকেই দোস্ত বন্ধুদের বলে রেখেছে, “তোরা থ্রী কার্ড খেল, বিড়ি সিগারেট গাঞ্জা সব চালা কোন সমস্যা নেই, শুধু মেয়ে নিয়ে আমার ঘরে আসতে পারবি না, আমার রুমে মেয়ে নিয়ে কোন কারবার চলবে না বলে দিলাম”।

চে-এর মুখের ছবি আঁকা টি-সার্টটি খুলতে খুলতে সুজয় বলে, “দোস্ত, মাথাটা ধরা ধরা লাগতেছে, তোদের কারও কাছে কি ডিসপ্রিন আছে?” টি-সার্টের কলারের পেছনে কাল দাগের পুরু প্রলেপ পড়ে গিয়েছে, নাকের কাছে আলতো করে ধরেই চোখ মুখ কুচকে ফেলে সুজয়। “ধ্যাঁৎ, শালার কবে যে পরিমলটা আসবে লন্ড্রীর কাপড় নিতে!”, বলেই বিছানার দিকে ছুড়ে মারে ঘামে জবজব করা জামাটা।

-- “আমি ব্লাইন্ড এ রাইজ দিলাম”, বলেই বোর্ড থেকে মুখ তুলে রতন বলে, “নাহ! রুমে নাই, মেডিক্যাল সেন্টারে গিয়ে নিয়ে আয় না?”

কি যে বলিস না! বালের মেডিক্যাল সেন্টার আমার। জ্বর আসলেও পাছায় ইঞ্জেকশন, পেটে গ্যাস হইলেও পাছায় ইঞ্জেকশন, পেট খারাপ করলেও পাছায় ইঞ্জেকশন; শালারা মনে হয় ‘পাছা’ আর ‘ইঞ্জেকশন’ ছাড়া কিচ্ছু চিনে না। ও, গেইটে আলামিন ভাই এর ফার্মেসিতে গেছিলাম ঔষধ আনতে, এক আজব পাবলিকের সাথে দেখা হইল। লোকটা চুল ফালায়া দেওয়ার ঔষধ খুঁজতেছিল।

-- “আমি অফ”, হাতের কার্ড ফেলে দিয়ে শিমুল বলে “বুঝলাম না, চুল ফালায়া দেওয়ার ঔষধ মানে?”

আরে, ঐডাই তো বলতেছিলাম! আজিব লোক, কি কারনে এমন অদ্ভুত রকমের জিনিসের খোঁজ করতেছে বুইঝা পাইলাম না।

-- “সিনে হিট করলাম”, “আরে চুল মুল কিচ্ছু না, ব্যাটার বুইড়া বয়সে ভীমের রতিতে পাইছে; হালায় আসলে বাল ফালানোর ঔষধ খুঁজতেছিল”, বলেই খুব উচ্চমার্গের রসিকতা হয়েছে মনে করে বিচ্ছিরিভাবে হো হো করে হেসে উঠে কাউসার। এই ছেলের মুখটা বরাবরই জঘণ্য রকমের।

মোটেও হাসতে পারলো না সুজয়, মনটা খচখচ করছে তার; লোকটার সাথে কি জীবনে আর দেখা হবে? ভাবতে ভাবতে দোস্তদের সাথে মেঝেতে বসে যায় সে। আগের দান শিমুল জিতেছে, এবার তাই তার ডিল।

“দোস্ত, ছয় জনের জন্য বাট”, বলেই মানিব্যাগ খুলে দুমড়ানো হাজার খানেক টাকা বের করে সুজয়। কার্ড বাটা শেষ হতেই তিনটি কার্ড হাতে তুলে নেয় সে। প্রথম কার্ডটা স্পেডের থ্রী, ধীরে ধীরে দ্বিতীয় কার্ডটা খুলে সে, স্পেডের নাইন। কাকতালিয় ব্যাপারগুলো ঘটে বলেই ‘কাকতালিয়’ শব্দটি অভিধানে আছে; না হলে লক্ষ কোটি মানুষের ভিতর স্থান ও কালের সমন্বয় ঘটে গিয়ে দুজন মানুষের পুনরায় দেখা হবে সেটা আসলেই বিরাট কাকতাল। ধুরু ধুরু বক্ষে শেষ কার্ডটা তুলে মেলে ধরে সুজয়, “স্পেডের সিক্স”, চোখ জ্বলজ্বল করে উঠে তার, রানিং স্পিন!


তিন.

ভ্রমনের ক্লান্তির চিহ্ন স্পষ্ট তার চোখে মুখে, বাস জার্নি বরাবরই অপছন্দ সুজয়ের; একদমই ঘুমাতে পারেনি সারা রাত সে। তার মধ্যে অনেকক্ষণ হলো রিসেপশনে বসে আছে কারও খবর নেই। অবশ্য সে ভি.ভি.আই.পি কেউ না অথবা ফাইভ-স্টার হোটেলেও আসেনি, যে সামনে পেছনে হুলুস্থুল পড়ে যাবে। অফ সিজন চলছে, সেমিস্টার ব্রেকের এই পনের দিন কক্সবাজারের নির্জন সমুদ্র উপকুলে দিব্বি কাটিয়ে দিতে পারবে; ছাত্র মানুষ, টিউশনির টাকায় ভ্রমনের নেশা মেটায়, তার শুধু মাথা গুজার ঠায় আর দুবেলা খেতে পারলেই হলো।

“হ্যালো স্যার, আপনাকে হোটেল বাসন্তীতে স্বাগতম। আমি এই হোটেলের ম্যানেজার, আপনার কি কোন রিজার্ভেশন আছে?”, সোফায় বসে ঝিমুচ্ছিলো সুজয়, মুহূর্তেই ঘুম ঘুম ভাব কেটে যায় তার।

-- নাহ, কোন রিজার্ভেশন নাই; সিঙ্গেল ননএসি সি সাইড রুম ফাঁকা আছে?

“এক মিনিট প্লিজ; জ্বি ফাঁকা আছে; এক্ষনি বুকিং দিয়ে দিচ্ছি, পাঁচ হাজার টাকা এডভান্স”, লোকটা চোখ থেকে চশমাটা খুলে শার্টের নিচের দিক দিয়ে গ্লাসটা মুছতে মুছতে বলে।

হঠাৎ তার চোখে দিকে চোখ পড়ে সুজয়ের, কেন যেন খুব চেনা চেনা মনে হচ্ছে লোকটাকে, কোথায় যেন দেখা হয়েছে তার সাথে, খুব পরিচিত লাগছে চোখের এই দৃষ্টি। “ধুর! ঘুম না হইলে খালি আজাইরা চিন্তা ভর করে মাথার মধ্যে”, মাথা ঝাকি দিয়ে সব চিন্তা ঝেড়ে ফেলে পকেটে চাবিটা নিয়ে রুমের দিকে পা বাড়ায় সে।

সারা দিনরাত বেঘোরে ঘুমিয়ে ভোরের দিকে ঘুম ভাঙ্গে সুজয়ের, আচমকা চিনতে পারে লোকটাকে, মনে পড়ে যায় দুই বছর আগের ক্যাম্পাসের সামনের ফার্মেসিতে দেখা হয়ে যাওয়া লোকটার কথা। লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নামে সে, মুখ হাত ধুয়ে নিচে রিসেপশনের গিয়ে বসে; লোকটার মনে হয় আজ নাইট ডিউটি পড়েছে, কাউন্টারে বসে ঝিমুচ্ছে। গুটি গুটি পায়ে তার দিকে এগিয়ে যায় সুজয়, খুব কাছ থেকে কিছুক্ষণ পরখ করে তাকে, হুমম, ঠিকই চিনেছে তাকে, এই সেই লোক!


চার.

সুজয়ের চোখের দিকে কিছুক্ষণ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে আসলাম কবির বলেন, “কিছুক্ষণের মধ্যে আমার শিফটিং ডিউটি শেষ হচ্ছে, আজ রাতে কি আপনি আমার বাড়িতে যেতে পারবেন? রাতে খাবেন, কাছেই বাসা এখান থেকে। সি.এন.জিতে গেলে আধা ঘন্টা লাগবে; আমরা না হয় ভ্যানে করেই যাবো, দুই ঘন্টার মত লাগবে বাড়ি পৌছুতে, গল্পটা বলার অনেক সময় পাওয়া যাবে।”

-- “মানুষের চুলও যে এত সুন্দর হতে পারে সেটা আমার কল্পনাতেও ছিল না। তখন কলেজে পড়ি, পড়াশুনা খেলাধূলা সব লাটে উঠেছে; সারাদিন শুধু তার চুলেই ডুবে থাকি। চিন্তায় চেতনায় স্বপনে মরমে শুধু তার চুল আর চুল। বলতে গেলে আমি তার চুলের প্রেমে পাগলই হয়ে গেলাম”, কেমন যেন উদাস হয়ে উঠলো আসলাম কবিরের কণ্ঠ।

পেছনে পা ঝুলিয়ে বসে আছে দুজন, ফাঁকা রাস্তায় তুমুল বেগে চলছে ভ্যান। সন্ধ্যা নামি নামি করছে, চারদিকে ঝিঁঝিপোকার যুগপৎ সুরেলা ঝংকার, চাঁদটা গাছের ডালপালার আড়ে আড়ে উঁকিঝুঁকি মারছে, কিছুক্ষণের মধ্যে আরও উপরে উঠে যাবে। একটু উসখুস করছে সুজয়, এমন পরিবেশে একটা সিগারেট হাতে না থাকলে ভাব আসে না। কিন্তু মুরুব্বি একজনের পাশে বসে সিগারেট ধরাতে কেমন অস্বস্তি লাগছে। লোকটা খুব গুছিয়ে শুদ্ধ ভাষায় কথা বলে, খুব সম্ভবত চাপাইনবাবগঞ্জের আশেপাশে হবে বাড়ি, এখানে হয়তো চাকরী সুবাদের থাকে, ভাবে সে।

-- “সিগারেট ধরাবেন? আরে কোন সমস্যা নাই, ধরান; আপনার বয়স তো আমিও পার করে এসেছি”, যেন সুজয়ে মনের কথাটা পড়ে ফেলেছে!, “যা বলছিলাম, প্রথম যেদিন তাকে মনের কথাটা বলি সেদিন মনে হচ্ছিলো মাথা ঘুরে পড়ে যাবো, পা কাঁপছিল ঠকঠক করে, গলা শুকিয়ে কাঠ, হৃদপিন্ড গলা দিয়ে বের হয়ে আসি আসি করছে, মুখ দিয়ে শুধু বলতে পারলাম, ‘তোমার চুলকে অনেক ভালোবাসি’। সে কিছুক্ষণ স্থির আমার চোখের দিকে তাকিয়ে শুধু বলছিল, ‘শুধু আমার চুলকে?’ বলেই স্মিত হেসে চলে গেল আর আমি পেছন থেকে তার চুলের দিকে তাকিয়ে কল্পনার জগতে হারিয়ে গিয়েছিলাম। কতক্ষণ এভাবে দাঁড়িয়ে ছিলাম মনে নেই তবে শীতে যখন কাঁপুনি শুরু হয়ে গেলো তখন উপলব্ধি করলাম খোলা মাঠে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজছি”, আসলাম সাহেবের মুখে গল্পের খৈ ফুটেছে, চাঁদের আবছা আলোয় ঝলমল করছে তার মুখমন্ডল।

চাঁদটা আরেকটু উপর উঠে এসেছে, আজ কী পূর্নিমা? নাহ! গতপরশু পূর্নিমা ছিল। একাগ্রচিত্তে গল্প শুনে যাচ্ছে সুজয়। লম্বা করে টান দিয়ে সিগারেটের ধোঁয়ায় গাল ভর্তি করে নিয়ে চাঁদ লক্ষ করে সবটুকু ছেড়ে দেয় একসাথে, যেন ধোঁয়ায় চাঁদকে ঢেকে দেওয়ার প্রয়াস, “তারপর কি হলো?”

-- কিভাবে যে সময় কাটছিল টেরই পাচ্ছিলাম না, কত স্বপ্ন, দিবাস্বপ্ন, সংসার সাজানোর পরিকল্পনা সব মিলিয়ে হাওয়ায় উড়ছিলাম। জীবনের সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খেলাম সেই সময়।

জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে থাকে সুজয়।

-- দূরের কোথাও উদাস নয়নে তাকিয়ে বলে চলছে আসলাম সাহেব, “পুকুর পাড়ে সে দাঁড়িয়ে ছিল পেছন ফিরে, আমি আলতো করে পেছনে গিয়ে তার চুলে নাক ডুবিয়ে দাঁড়ালাম, উফ! চুলের কি মাতাল করা সুরভি! পাগল করা সৌরভ, আবেসে আমার চোখ বন্ধ হয়ে আসছিল; লম্বা করে একটা দম নিয়ে যতক্ষন পারি বাতাসটা ফুসফুসে আটকে রাখলাম, তার চুলের প্রথম ও শেষ ছোঁয়ার গন্ধ!”

চমকে উঠে সুজয়! শেষ? মানে? তবে কি সেই প্রেমিকা আর বেঁচে নেই? না কী তাদের এর পরেই ব্রেকআপ হয়ে গিয়েছিল? নানান নেতিবাচক সম্ভাবনা উকি দেয় তার মনে, “শেষ?”

-- হুমম, শেষ। মুহূর্তেই সে ঘুরে তাকালো আমার দিকে, চোখ দিয়ে যেন আগুন বের হচ্ছিলো তার, খুব ঠান্ডা মাথায় কঠিন স্বরে চিবিয়ে চিবিয়ে প্রতিটি শব্দের উপর জোর দিয়ে বললো যে তার চুলে ভীষণ এলার্জি আছে জন্ম থেকেই, কেউ চুলে ছুঁলেই মাথায় আগুন ধরে যায়, সমগ্র শরীর চিড়বিড় করে উঠে। আমি যেন তার চুলে কখনো হাত না দেই। তাকে বিয়ে করতে হলে, তার সাথে সংসার করতে হলে এটা মেনেই করতে হবে, অন্যথায় নয়; শর্ত দিয়ে দেয় সে।

কণ্ঠের হঠাৎ পরিবর্তনে চমকে তার দিকে তাকায় সুজয়, চেহারের মধ্যে আগের সে প্রেমিক প্রেমিক রোমান্টিক ভাবটা উধাও; সেখানে বুনো কঠোর একটা ছায়া প্রকট হয়ে উঠেছে। লোকটা কি প্রতিশোধ স্পৃহায় ভুগছে? চুল ফেলে দেওয়ার ঔষধই কি প্রতিশোধের অস্ত্র? এসিড ছুড়ে মারার মত? চিন্তিত হয়ে পড়ে সুজয়।

-- “তুলিকে ছাড়া বেঁচে থাকা চিন্তাও করতে পারি না, তার চেয়ে বেশি ভালোবাসি তার চুলকে! এই চুলের স্পর্শ কখনো পাবো না ভাবতেই পারছিলাম না, আমার জীবনের সবকিছু অর্থহীন মনে হচ্ছিলো।”, গলাটা কেমন ধরে আসছিল আসলাম সাহেবের, একটু দম নিয়ে আবার শুরু করলেন, “কিন্তু তুলিকে হারালে তো তার চুলকেও সাথে হারাতে হবে! নাহ, কোন ভাবেই এই তার চুলকে আমার জীবন থেকে হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না; দরকার নেই চুলে হাত দেওয়ার, নিলাম না এই জনমে এই চুলের ঘ্রাণ, চোখে তো দেখতে পারবো! এটাই আমার জন্য ঢের”।

গল্প কোন দিকে টার্ন নিচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছে না সুজয়। কিছুটা বিভ্রান্ত দৃষ্টিতে আসলাম সাহবের গল্প শুনে যাচ্ছে সে।

-- “এই ভ্যান, ভাই একটু থামাও তো” বলেই সুজয়ের দিকে মিষ্টি করে হাসি দিয়ে বললো, “ভাই, একটু বসেন আমি ঐ ফার্মেসি থেকে ঘুরে আসি, এক মিনিটের ব্যাপার”।

দূর থেকে আসলাম সাহেবকে দেখেই ফার্মেসির লোকটি চিৎকার দিয়ে বললো, “নাই ভাই, এখনো আসে নাই ঐ ঔষধ। কইলাম তো আইলে আপনেরে সবার আগে দিমু”

অন্য রকম একটা সন্দেহ উকি দেয় সুজয়ের মনে। লোকটা এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন বাড়ি ফেরে আর প্রতিদিনই কি বিভিন্ন ফার্মেসিতে গিয়ে চুল ফেলে দেওয়ার ঔষধ খুঁজে বেড়ায়? লোকটা মানসিক ভারসাম্যহীন নয় তো? এই প্রথম ভয় পেল সুজয়। আসলাম সাহেব এসে ভ্যানে পুনরায় বসতেই তার মুখের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায় সে, “নাহ, অস্বাভাবিক কিছুতো চোখে পড়ছে না! তবুও ভয়ের একটা স্রোত বয়ে যায় সমগ্র শরীরজুড়ে”, কিছুটা সংশয় নিয়ে বলে, “আসলাম ভাই, বাড়ি আর কত দূর?”

-- আরে এই তো প্রায় চলে এসেছি। ঐ ভ্যান, জোরে চালাও। হুম, যা বলছিলাম, “বিয়ের পর ভালোই কাটছিলো আমাদের দুজনের চড়ুইভাতির সংসার। দুবছর পর আমাদের একটা ছেলে হয়। তারপর থেকে পাল্টে যায় আমাদের জীবনের মোড়। হাসপাতাল থেকে প্রথম যেদিন বাড়ি ফিরি কেমন যে লাগছিল আমার! বারবার মনে হচ্ছিলো এতদিন ছিলাম আমরা দুজন আর আজ থেকে এই বাসায় আমার তিনজন। কাঁথা দিয়ে মোড়ানো ছোট্ট ছেলেটা আমার! কাঁথার ভেতরে কঁচিকঁচি হাতদুটা প্যাঁচানো, সেখানে কি ছোট ছোট আঙ্গুল! প্রথম যখন সে কাঁথা থেকে হাত বের করলো তখনই ঘটে আমার জীবনের সবচেয়ে আজব সেই ঘটনা! হাত বের করেই সে মায়ের চুল ধরে বসে, আর তো ছাড়ে না! সবচেয়ে অবাক লাগলো তার মায়েরও দেখি কোন ভ্রুক্ষেপ নেই! কোন প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে, লাফিয়ে না উঠে দিব্বি ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলো!”

“কি নাম আপনার ছেলের? এখন নিশ্চয় স্কুলে পড়ে?”, জিজ্ঞেস করে সুজয়।

-- কোন উত্তর না দিয়ে আপন মনে নিজের গল্প বলে যায় আসলাম সাহেব, “সেই থেকে শুরু। ছেলে যতক্ষণ জেগে থাকে সে মায়ের চুল ধরে থাকে। চুল ধরেই খেলা করে, চুল ধরেই মায়ের দুধ পান করে, চুল ধরেই ঘুমিয়ে পড়ে। মাঝে মাঝে ঘুমের মধ্যেও চুলের খোঁজে এদিক সেদিক হাতড়িয়ে বেড়ায়। তখন আমার স্ত্রী নিজ হাতে কিছু চুল তার ছোট্ট মুঠিতে এগিয়ে দেয়”

বাহ! ভালো তো! নিশ্চয় ছেলে হওয়ার পর আপনার স্ত্রীর চুল নিয়ে ঐ এলার্জি রোগটা সেরে উঠেছে?

সুজয়ের প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে তিনি বললেন, “এইতো বাড়ি চলে এসেছি, নেমে পড়ুন। ভ্যানভাই তুমি থাক আমরা আবার যাব উনাকে নামিয়ে দিয়ে আসতে।”, বাড়িতে পা দেওয়ার সাথেসাথেই বিদ্যুৎ চলে গেল। “ধুর! এখন নিশ্চিত দুই থেকে আড়াই ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকবে না! তুলি, এই তুলি মেহমান নিয়ে এসেছি, খাবারের ব্যবস্থা কর।” বলতে বলতে অন্দরমহলে যায় আসলাম কবির সাহেব।

সুনসান নিরবতা, ঝিঁঝির ডাকটাও যেন মিইয়ে গেছে, অদূরে একটা নিসঃঙ্গ শিয়াল একাকী হুক্কাহুয়া রবে ডেকে উঠে, সুজয়ের গা টা কেমন যেন কাঁটা দিয়ে উঠে। ঘরের ভিতর থেকে একটা নারীমূর্তির অবয়ব ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠে, হাতে উচু করে ধরে রেখেছে ছোট একটা জ্বলন্ত মোম। ভয়ংকর চমকে উঠে সে, আতঙ্কে গলা দিয়ে অস্ফুট চিৎকার বের হয়ে আসে তার;

খুব সন্তপর্ণে ফ্যাকাসে লোমবিহীন ডান হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে নারীমূর্তিটি বলে, “আমি তুলি”; শুধু ডান হাত নয়, মাথা, চোখ, ভ্রু কোথাও একফোঁটা চুল নেই তুলি নামের এই নারীর, ভয়ংকর সেই রূপ!


পাঁচ.

-- চাঁদ আবার কিছুটা নিচে নেমে এসেছে, কিছুক্ষণের মধ্যেই বাঁশঝাড়ের আড়ালে চলে যাবে। হাওয়ার বেগে ছুটে চলছে ভ্যান। বিক্ষিপ্ত, বিধ্বস্থ; কিছুতেই ভুলতে পারছে না সুজয় আপাদমস্তক চুলবিহীন তুলির কথা; পাশে নির্বাক বসে আছে আসলাম। হঠাৎ স্তব্ধতা ভেঙ্গে সে বলে, “ছেলের বয়স যখন দুই একটু একটু হাঁটা শিখেছে তখনও মায়ের চুলের নেউটা সে, যেন চুলই তার মা, মায়ের চুলই তার জগত। আর তুলিও ছেলের চুলপ্রীতিতে অজ্ঞান! কোন কষ্টই হয় না তার, এ যে শতভাগ রুপান্তর! প্রকৃতির কি মধুর প্রতিশোধ! তুলির পূর্ণিমারোগ ছিল”

তন্ময় হয়ে শুনছে সুজয় তার কথা। একটা বাদুড় পাখা ঝাপটিয়ে মাথার কয়েক হাত উপরদিয়ে উড়ে গেলে মৃদু চমকে উঠে সে, কোন কিছুতেই তার মনোযোগ নেই বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠছে তুলির চেহারা। পূর্ণিমারোগ মানে?

-- “পূর্ণিমার রাতে সে ঘরে থাকতে পারতো না, যেদিন আকাশে পূর্ণ চাঁদ উঠতো সেদিন অনেক রাত পর্যন্ত বাড়ির পুকুরে গোসল করত যদিও সে সাঁতার পারতো না। তেমনি এক রাতে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে আমি ও প্রতিবেশিরা দৌড়ে যায় পুকুর পাড়ে। আমি পৌঁছানোর আগের দেখি পাড়ে উঠিয়ে নিয়ে এসেছে আমার দুই বছরের ছেলে আর তার মা কে, নিথর হয়ে পড়ে আছে দুটি দেহ। ছেলেটা দুহাতে গায়ের জোড়ে ধরে আছে মায়ের চুল। বাঁচার অন্তিম ইচ্ছায়, শেষ ভরসা হিসাবে আকড়ে ধরে আছে যেন! আমার দুনিয়া জুড়ে অন্ধকার নেমে এলো; আমিও সাথে সাথে জ্ঞান হারালাম।”, গলাটা ধরে এসেছে আসলামে, কেঁপে কেঁপে উঠছে শরীর মাঝেমাঝে।

-- নিজেকে সামলে নিয়ে আবার শুরু করে আসলাম, “মা বেঁচে যায়, কিন্তু আমার ছেলেটা বাঁচেনি। সেই থেকে প্রতি পূর্ণিমার রাতে তুলি অদ্ভুত আচরন শুরু করে, চাঁদ উঠার সাথে সাথে চিৎকার করে নিজের মাথার, গায়ের সব চুল ছিঁড়তে থাকে পাগলের মত। প্রথম প্রথম ঘুমের ঔষধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখতাম, কিন্তু কিছুদিন পর ঘুমের ঔষধেও আর কাজ হচ্ছিলো না, আবার ধীরে ধীরে তার এই আচরন প্রতি রাতেই হচ্ছিলো। এখন তাই প্রতিসপ্তাহে তাকে ইঞ্জেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে গায়ের সব চুল কামিয়ে ফেলি নিখুঁতভাবে। সে যে কি কষ্ট হয় তার! আর আমারও কি কম কষ্ট হয়? নিজ হাতে আমার সবচেয়ে ভালোবাসার জিনিস ধংসে যে কি বিষাদ! সে থেকে আমি খুঁজেফেরি আশ্চর্য চুল বিনাশী সেই ঔষধ।”, বলে সুজয়কে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে আসলাম।

চাঁদের কমল আলোয় দূরন্ত বেগে ধেয়ে চলা ভ্যানের পেছনে সুজয়কে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে একজন প্রেমিক না কি একজন বাবা? না কী তা কোন এক মায়ের হাহাকারের প্রতিধ্বনি? নিজের অজান্তেই কঠোর হৃদয় সুজয়ের চোখ ছলছল করে উঠে।
৮১টি মন্তব্য ৮১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×