সদ্য ঘটে যাওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের গোলাম রাব্বী আর পুলিশ কর্মকর্তা এস আই মাসুদের ঘটনা কে না জানে???
ঢাবি’র টিএসসি থেকে কল্যাণপুর বাসায় ফেরার পথে আসাদ গেটে ডাচবাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথে ঢুকে টাকা উত্তোলন করে রাব্বী। বুথ থেকে বের হলে বুথের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের গাড়ি থেকে একজন এসে বললেন, ”ওই চল, স্যার তোর সঙ্গে কথা বলবে”। পুলিশের গাড়ির কাছে গেলে পুলিশ তাকে টেনেহিচড়ে গাড়িতে তোলে।'
গাড়িতে নেওয়ার পর এসআই মাসুদ ও সাথে থাকা পুলিশ সদস্যরা জানতে পারে রাব্বী বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করে। তখন পুলিশ ৫ লাখ টাকা দিলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানাই। না দিলে কাল সকালে তোর লাশ বেড়িবাঁধে পাওয়া যাবে এমন ভয় দেখায়। এরপর সেখান থেকে পুলিশ তাকে গাড়িতে নিয়ে মোহাম্মদপুর এলাকার বিভিন্ন সড়কে ঘোরাঘুরি করে।
রাত আড়াইটা পর্যন্ত ওই পুলিশ সদস্যরা তাকে বন্দুকের বাট ও লাঁঠি দিয়ে মারধর করে। কাপড় খুলেও তারা রাব্বীকে পেটায়, আর টাকা আনার জন্য চাপ দেয়। এক পর্যায়ে মার সইতে না পেরে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে ফোন করার জন্য বলে। এরপর রাব্বী মোবাইল ফোন নিয়ে রেডিও ধ্বনির সাংবাদিক জাহিদ হাসানকে ফোন করে। সে আসতে চাইলে পুলিশ তাকে আসাদ গেট আড়ং এলাকায় আসার জন্য বলে।'
সাংবাদিক জাহিদ হাসান রাতেই ১০/১২ জন সাংবাদিক ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে নিয়ে আড়ং এলাকায় হাজির হন। বেশি লোকজন দেখে পুলিশ গাড়ি টান দেয়, কিন্তু আড়ং মোড়ে সিগনালে পড়ায় গাড়িটি থেমে যায়। এরপর জাহিদ হাসান ও তার সঙ্গীরা রাব্বিকে উদ্ধার করে।
রাব্বির বন্ধু ওসমান গণি জানান, প্রথমে পুলিশের কাছে গেলে তারা বলেন, ওর কাছে ইয়াবা ছিল, হেরোইন ছিল। তল্লাশি করে তাকে গাড়িতে তোলা হয়েছে। তাকে থানায় নিতে চাইলে তিনি বাকবিতণ্ডা করেন। এরপর আপনাদের ফোনে ডাকেন। উপস্থিত সাংবাদিকরা পুলিশকে বলেন, 'এতোকিছু পেয়েছেন, তো তাকে থানায় নিয়ে মামলা দেন। এ কথার পরও পুলিশ আসাদ গেট এলাকা থেকেই তাকে নিয়ে যাচ্ছি- এরকম একটি লিখিত নিয়ে ছেড়ে দেন গোলাম রাব্বিকে। এখনো তার কোন বিচারের তথ্য পাওয়া যায়নি।
এটা একটা সদ্য ঘটে যাওয়া ঘটনা মাত্র। প্রতিদিন এমন রাব্বীর মত কতজন ভূক্তভোগী হচ্ছে তার কোন হদিস নেই। এছাড়া প্রতিদিন আমাদের অগোচরে ঘটে যাচ্ছে গুম, খুন, চাঁদাবাজী, হয়রানী, মিথ্যা মামলা ইত্যাদি ইত্যাদি। আর ঘুষতো এখন সহী হয়ে গেছে। চলতে ফিরতে ঘুষ ছাড়া কথা নাই। রাব্বীর ঘটনা প্রকাশের কারণে আমরা জানতে পারলাম আর যে সকল রাব্বীর কথা ধামা চাপা পড়ে আছে তাদের হাহাকার করা ছাড়া কি করার আছে???
যাদের উপর ভরসা করে দেশের শান্তি নির্ভর করে তারা যদি অশান্তি শুরু করে। যারা সন্ত্রাস দমন করে তারা যদি সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে তাহলে আমরা সাধারন জনগনের করনীয় কি???
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১৮