চলতি বছরে যতগুলো ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে বিগত কোন বছরে এত দূর্ঘটনা ঘটেছে বা মানুষ মারা গেছে বলে মনে হয়ে না। জুন মাসে কুলাউড়ায় সিলেট-ঢাকা রুটের উপবন এক্সপ্রেস কালভার্ট ভেঙে দূর্ঘটনা, অক্টোবারে রংপুরের ইন্জিন নিয়ন্ত্রন হারিয়ে দূর্ঘটনা, কিছু দিন আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভয়নাক দূর্ঘটনা, আর লাইনচ্যুত হওয়া তো সাধারন ব্যাপার হয়ে গেছে। গত ৩ মাসে ৪ থেকে ৫ টি ট্রেন নানা জায়গায় লাইচ্যুত হয়েছে। অবশ্য তাতে শুধুই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারন মানুষ। সাধারন মানুষ মারা গেলে ১ লক্ষ টাকা দিয়ে আর রেল মন্ত্রী, কর্তৃপক্ষ মিডিয়াতে নানা বিবৃতি দিয়ে খালাস হয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ রেল বিভাগ এত বড় ও গুরুত্বপূর্ন অংশ হওয়া স্বত্ত্বেও পর্যাপ্ত লোকবলের অভাব। ৮০ দশকের পরে রেল বিভাগে লোকসান হতে শুরু করে। ১৯৯৩ সালে লোকসান কেন্দ্র করে লোক ছাটাই শুরু করে রেল বিভাগ। এর পিছনে বিশ্বব্যাংক আর এডিবি হাত আছে বলেও অনেকে মনে করে। তাতে দেশের অসংখ্য স্টেশনও অচল হয়ে পড়ে। আজ প্রযন্ত দেশে প্রায় ১২-১৪ হাজার রেল পোষ্ট খালি আছে। অচল ইন্জিন বগী দিয়ে রেল পরিচালনা হচ্ছে প্রতিদিন। মান্ধাতার আমলের রেললাইন তো আছেই। রেললাইনের নিচে পাথর, লাইনের নাটবল্টু ভাল আছে কিনা, লাইনচ্যুত হওয়ার কোন সমস্যা তৈরি হয়েছে কিনা দেখার মত স্টেশন মাষ্টারের সহকারি লোকবলও নেই। ট্রেন চালানোর জন্য যথেষ্ট লোকমাস্টার,সহকারী লোকমাস্টার ও গার্ডেও অভাব আছে। রেল পুলিশ, টিকিট চেকার থেকে শুরু করে রেল প্রশাসন নানা ভাবে অবৈধ আয় করে নিজেদের পকেট ভারি করছে যা রেল বিভাগের লোকসানে অন্যতম কারন।
মজার ব্যাপার হল, ২০১৭ থেকে ২০১৮ সালে ট্রেনে ১ কোটি যাত্রী বেড়েছে তারপরও লোকসান ১,২০০ কোটি থেকে ১,৬০০ কোটিতে ঠেকেছে। এত অনিয়ম হওয়া স্বত্ত্বেও রেল কর্মকর্তাদের তেমন কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে বলেও মনে হয় না। অবশ্য সাধারণ মানুষের দাম যখন ১ লক্ষ টাকা হয়ে যায় তখন সাধারন মানুষের কথা অসাধারন মানুষদের না ভাবলেও চলে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৩৫