অযু ভঙ্গের কারন যদি জানতে চাওয়া হয় তবে আমাদের সমাজের শিক্ষিত অশিক্ষিত প্রায় প্রতিটা মানুষ কম বেশি বলতে পারবে। নামায, রোজা ভঙ্গের ব্যাপারে ও ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু যখনই মূল বিষয়ে এসে প্রশ্ন করা হয় ঈমান ভঙ্গের কারণ কি ?
তখন অশিক্ষিত মানুষের কথা বাদই দিলাম আফসোসের বিষয় অধিকাংশ শিক্ষিত মানুষ এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনা।
:
প্রায় সবার ধারনা ঈমান আবার কেমন করে ভাঙ্গে ছোট বেলা হুজুর চার কলেমা আর ঈমানে মুফাস্সেল পড়িয়ে একবার ঈমান এনে দিছি আর পৈতৃক সূত্রে ও তো পেয়েছি এটাই থাকবে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। এর মধ্যে আমি যত যা করি না কেন ঈমান ভঙ্গ হবে না। এটা যদি মনে না করতাম তবে একটু হলেও জানার চেষ্ট করতাম ঈমান ভঙ্গের কারণ কি কি ! কিন্তু এ ব্যাপারে আমরা বড় উদাসীন। তবে আমাদের মনে রাখা উচিত, ঈমান হয়েছে ঐ জিনিস যা ব্যতীত আপনার কোন ভাল কাজ আল্লাহর কাছে গ্রহন যোগ্য হবেনা। সর্ব প্রথম আপনাকে আল্লাহর উপর ঈমান আনতে হবে তারপরে অন্যান্য কাজ নামায, রোজা, হজ্জ্ব, যাকাত আদায় করতে হবে।
আপনি অনেক ভাল ছাত্র হতে পারেন সব সাবজেক্টে অধিক দক্ষতা থাকতে পারে কিন্তু স্কুলে ভর্তি না হলে কখনোই কোন ক্লাস অতিক্রম করতে পারবেন না। আমার এক ভাই ঈমানের উদাহরন দিতে গিয়ে বলেছিল, মনে করো একজন খারাপ ছাত্র যে কোন রকম টেনে টুনে পাশ করে আবার ফেল ও করে কিছু সাবজেক্টে। তাকে চাইলে শিক্ষক বোর্ড পরিক্ষায় অংশগ্রহনের সুযোগ দিতে পারবে যদি তার রেজিস্টেশন করা থাকে। পক্ষন্তরে একজন ভাল ছাত্র যার সকল বই সম্পর্কে অধিক ধারনা তাকেও সুযোগ দিতে পারবে না যদি তার রেজিস্টেশন করা না থাকে। ঈমান ঐ রেজিস্টেশনের মতো যা না থাকলে আপনার ভাল কাজের কোন মূল নেই। ঈমান ছাড়া যদি আপনি সুন্দর ভাবে অযু করে হাজার রাকাআত নামায পড়েন, রোযা রাখেন, অসংখ্য টাকা আল্লাহর পথে দান করেন, কাবা ঘরে সিজদা দিতে দিতে মাথা ফাটিয়ে ফেলেন বা জিহাদে গিয়ে মারা যান
কোন লাভ নেই। ফলাফল সর্বদা শূন্য।
:
এজন্য আগে আমাদের ঈমানকে ঠিক করতে হবে এবং ঠিক রাখতে হবে। অযু নামায রোজা ভঙ্গের মতো জানতে হবে ঈমান ভঙ্গের কারণ...
নিচে ঈমান ভঙ্গের কারণ গুলো দেয়া হলো আশা করি সকলে উপকৃত হবেন
:
ঈমান ভঙ্গের কারণ
""""""""""""""""""
১। শিরক বিল্লাহ অর্থাত্ আল্লাহর সাথে শরীক করা।
.
২। আল্লাহর এবং বান্দার মধ্যে এমন মাধ্যম স্হির করা যার কাছে বান্দা সুপারিশ কামনা করে এবং তার উপর বান্দার তাওয়াক্কুল করা।
.
৩। কাফের মুশরিকদেরকে কাফের মনে না করা অথবা তাদের কুফুরীর ব্যাপারে সন্দেহ পোষন করা অথবা তাদের কুফুরী মতবাদকে সহীহ মনে করা।
.
৪। রাসূল সঃ এর আনীত দ্বীন বা নেক কাজের সওয়াব বা পাপের শাস্তি অথবা দ্বীনের কোন বিষয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ তুচ্ছ তাচ্ছিল করা কুফরি।
.
৫। যাদু বা তাবিজ করা।
.
৬।মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফের মুশরিকদের পক্ষ নেয়া এবং তাদের সহযোগিতা করা।
.
৭। মূর্তি প্রতিমা মানবরচিত সংবিধান ইত্যাদি সহ অন্যান্য তাগুত কে ভক্তি শ্রদ্ধা সম্মানার্থর জন্য শপথ করা।
.
৮। মুহাব্বাত ও ভালবাসার ক্ষেত্রে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা যা কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ প্রমান করে।
.
৯। যে ব্যক্তি মনে করেনবী সঃ আইন বিধানের চেয়েঅন্য বিধানকে পরিপূর্ন বা উত্তম মনে করা।
.
১০। আল্লাহর দ্বীন থেকে বিমুখ হওয়া।
.
ঈমান ভঙ্গের কারণ দশটির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। যুগের অবস্হা ভেদে তা বৃদ্ধি পেতে পারে।
ঈমান ভাঙলে সে আর মুসলিম থাকে না। এজন্য ঈমানের ব্যাপারে আমাদের সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:০৩