somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের ভবিষ্যৎ অর্থাৎ শিশুদের প্রতি অবহেলা কাম্য হতে পারে না।

১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের আজকের বর্তমান আগামীর ভবিষ্যৎ। আজকের শিশু আগামী দিনের নিয়তি নির্ধারক। আমাদের ভবিষ্যৎ অর্থাৎ শিশুরা কেমন আছে? কেমন কাটছে তাদের বর্তমান? আগামীর জন্য কিভাবে তারা নিজেদের প্রস্তুত করছে? নীতিনির্ধারকেরাই বা তাদের নিয়ে কি চিন্তা করছেন? বেশ কয়েকদিন ধরে এই প্রশ্নগুলি মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। একটা খণ্ডিত বিশ্লেষণ আপনাদের সামনে তুলে ধরার একটা প্রয়াস নিলাম।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৪৫ ভাগই শিশু। এ অনুযায়ী দেশে শিশুর সংখ্যা ৬ থেকে ৭ কোটি। চরম দারিদ্র্যতার মধ্যে অশিক্ষা, অপুষ্টিকে সঙ্গে নিয়ে এদের মধ্যে বড় একটা অংশ বড় হয়ে উঠছে ।

আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ২০২০ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া। সেজন্য ২০০০ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত মিলিনিয়াম ডেভলাপমেন্ট গোলের (এমডিজি) অন্যতম কয়েকটি লক্ষ্য অর্জন বেশ গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের পুষ্টি ও শিক্ষার ক্ষেত্রে অগ্রগতি এমডিজি অর্জনে তথা আমাদের মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বাজেটে প্রথমবারের মত এইবারই শিশুদের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। জাতীয় জীবনে শিশুদের গুরুত্ব দেয়ার যে সময় এসেছে বাজেট বরাদ্দ তারই একটা বার্তা দিচ্ছে।

দেশে বর্তমানে প্রায় ৮০ হাজারের মত প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। যার মধ্যে সরকারী স্কুলের সংখ্যা অর্ধেকেরও কম। বিশ্ব ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে অনুযায়ী দেশে ১১ ধরনের প্রাথমিক বিদ্যালয় বা শিক্ষা চালু রয়েছে। জিডিপির মাত্র ১.৬ ভাগ ব্যয় হচ্ছে শিক্ষা ক্ষেত্রে। আর শিক্ষা ব্যাবস্থা উন্নয়নে সরকারের সার্বিক ব্যয় মাত্র ১৫ শতাংশ। শুধুমাত্র প্রাথমিক শিক্ষায় কতখানি রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ আছে তা এখনও অজানা? 'সবার জন্য শিক্ষা গ্লোবাল মনিটরিং রিপোর্ট ২০১৩-১৪ অনুযায়ী দেশে বর্তমান প্রাথমিক ভর্তির হার ৯৯.৪৭ শতাংশ [১]। তবে এর মধ্যে ২১ শতাংশ শিশু প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করতে পারে না। আর যারা পাশও করে তারা গড়ে ৬.৬ বছরের বেশী সময় নেয়। গ্লোবাল মনিটরিং রিপোর্টে প্রাথমিকে ভর্তির যে হার উল্লেখ করা হয়েছে তা মন্ত্রনালয় কর্তৃক প্রদত্ত। তাই ভাববার অবকাশ থেকে যায়। তেমনি স্কুল থেকে ঝড়ে পড়ার হিসাবটিও বিশ্বাস করার মত না। আশপাশে তাকালেই এর আন্দাজ পাওয়া সম্ভব। গ্লোবাল মনিটরিং রিপোর্ট ২০১৩-১৪ প্রতিবেদনে ২০১৫ সালের মধ্যে সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকারকে ১০ লাখ ৬০ হাজার মান সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নিতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, ইউ, হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ জরিপের ভিত্তিতে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি পরিস্থিতি, ২০১২ প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশের ৩৭ শতাংশ শিশু পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী অপুষ্টির কারণে শিশুদের উচ্চতা উদ্বেগজনকভাবে কমছে। বর্তমানে দেশে খর্বকায় শিশুর সংখ্যা প্রায় ৬০ লাখ! জাতীয় একটি দৈনিকের তথ্য থেকে জানা যায় যে, বাংলাদেশের নারী ও শিশুর অপুষ্টির হার বিশ্বের মধ্যে সর্বাধিক। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, দেশে এখনও প্রতিবছর ৫৩ হাজার শিশু অপুষ্টিতে মারা যাচ্ছে যা সম্পূর্ণ প্রতিরোধযোগ্য! সবচেয়ে ভয়ংকর তথ্যটি বের হয়ে এসেছে কয়েকদিন আগে। অনেক চেষ্টা ও উদ্যোগের পরও পুষ্টিহীন শিশুর সংখ্যা কমছে না বরং বাড়ছে! খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ‘পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন ২০১৪’ অনুযায়ী ১৮ শতাংশ শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার যা ২০১২ তুলনায় ২ শতাংশ বেশী! প্রায় পাঁচ লাখ শিশু মারাত্মক অপুষ্টির শিকার। পুষ্টিবিদদের মতে দেশের পুষ্টি পরিস্থিতি কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্ষুধাপীড়িত আফ্রিকার দেশগুলির চেয়েও খারাপ!

শিশুদের অধিকার ও সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্রে হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জ জেলার অবস্থা শোচনীয় বলা চলে। জাতীয় উন্নয়নের ধারা থেকে সর্বদা পিছিয়ে থাকা এই জেলার কর্তা ব্যক্তিরা শিশুদের নিয়ে যে আলাদা করে কিছু একটা যে ভাবেন তার কোনও উদাহরণ চোখে পড়ে না। ভাবখানা এমন যে বড়রা যেখানে হিসাবের বাইরে সেখানে শিশুরা কিভাবে আলচনায় আসে! জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক হিসাব অনুযায়ী ২০১৩ সালে ১০ হাজার শিশু প্রাথমিক শিক্ষা থেকে ঝড়ে পড়েছে! সরকারী তথ্য মতে হাওর অধ্যুষিত ৬টি জেলায় প্রাথমিকে ঝড়ে পড়ার হার প্রায় ৩০ শতাংশ! আমার কাছে সরকারী এই পরিসংখ্যান অনেকটা অসম্পূর্ণ মনে হচ্ছে, ঝড়ে পড়ার শিশুর সংখ্যা বাস্তবে আরো অনেক বেশী! মৌসুমি দারিদ্রতা ও অন্যান্য সামাজিক কারণে অনেক শিশু মারাত্মক অপুষ্টির শিকার হচ্ছে। ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী সুনামগঞ্জের শিশুদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশই অপুষ্টির শিকার। শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ও ঝড়ে পড়া শিশুদের ঠাই হয়েছে হোটেল, রেস্তোরা, পরিবহন খাত, ছোট বড় কারখানা, গ্যারেজ ও গৃহ শ্রমিক হিসাবে ঘরবাড়িতে।

জাতীয় অগ্রগতি ও বিকাশের স্বার্থে দেশের সব শিশুর নিরাপত্তা, সুরক্ষা, উন্নয়ন ও সুষম বিকাশ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এর জন্য প্রয়োজন সঠিক নীতি, পরিকল্পনা ও যথাযথ বাজেট বরাদ্দ। দেশে বর্তমানে ১০২টি সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচী চালু আছে। শিশুদের শিক্ষা বা স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে কোনও কর্মসূচী সৃজন করা হয়নি। বাজেটে শিশুদের জন্য এবারই প্রথম বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কিন্তু গত চার দশক ধরে চলা বৈষম্য ও অবহেলা পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে। তাই পরিস্থিতির উন্নতিকল্পে কল্পনাতীত পরিশ্রম করা ছাড়া উপায় নেই। শিশু বিশেষ করে মেয়ে শিশু ও নারীদের সুরক্ষায় বেশ কিছু আইন রয়েছে। তথাপি শিশু নির্যাতন বেড়েই চলছে। ছয়টি জাতীয় পত্রিকার খবর পর্যালোচনা করে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ‘বাংলাদেশ শিশু পরিস্থিতি ২০১৩’ নামে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করে [২]। প্রতিবেদনে দেখা যায় উল্লেখিত সময়ে ২৬৭ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়, এর মধ্যে মারা যায় ১২ জন। যৌন নির্যাতনের খবর প্রকাশিত হয় ১৫০টি। ৯০জন শিশু অপহরণের শিকার হয়। অপহরণের পর হত্যা করা হয় দুইজনকে। পারিবারিক কলহ, মুক্তিপণ না পেয়ে, জমিজমা নিয়ে বিরোধ ও মা-বাবার পরকীয়ার জেরে ৩৩৫ শিশু খুন হয়। অশ্লীল ভিডিওচিত্র ছড়ানোর ভয়ে বা অন্যান্য কারণে আত্মহত্যা করে ১৬৬ শিশু। বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে ২৪৫ শিশুকে সম্পৃক্ত করা হয়। এর মধ্যে মারা যায় ১৭৬ জন। বছরটিতে পাচার হয় ৪২ শিশু। অ্যাসিডদগ্ধ হয় ১০ শিশু। রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার হয়ে ৪১ শিশু মারা যায়। ১০৭ শিশু গুরুতর আহত হয়।

এবার আসি পথ শিশুদের ব্যাপারে। দরিদ্রতা, পারিবার ও সমাজের অবহেলায় অনেক শিশু অভিবাবকহীন অবস্থায় বেড়ে উঠে। এদের মধ্যে অনেকেই নিজ এলাকা ছেড়ে বড় বড় শহরে গিয়ে ঠাই নেই। মাথার উপর থাকে না ছাদ, আর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে তারা থাকে বহু দূরে। দুমুঠো খাবারের জন্য অনেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধ কাজকর্মে জড়িয়ে পড়ে। মাদক আর অস্ত্র ব্যবসায় তারা বাহক হিসাবে কাজ করতে যেয়ে নিজেরাই এই চোরাবালিতে আটকা পড়ে। পথ শিশুদের জোর করে বা অবস্থার সুযোগ নিয়ে কেউ কেউ আবার তাদের পর্ণোগ্রাফিতে জড়িত করছে! কয়েকদিন আগে ঢাকায় ইন্টারপোলের মাধ্যমে এরকমই একটি আন্তর্জাতিক শিশু পর্ণোগ্রাফি চক্রের কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর থেকে পথ শিশুদের নিগ্রহের আরেকটি দিক উন্মোচন হল।

দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, পথ শিশুদের প্রকৃত সংখ্যা জানতে সরকারী কোনও জরিপ করা হয়নি। ইউএনডিপি পথ শিশুদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে ২০০৫এ একটা জরিপ করে তাতে ২০১৪ সালে পথ শিশুদের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১১ লক্ষর মত হবে বলে উল্লেখ করা হয়। নগরায়ন ও ধনী-গরিবে বৈষম্য ক্রমশ বাড়তে থাকায় পথ শিশুদের এই সংখ্যা সামনে আরো বাড়বে। যা বেশ উদ্বেগজনক। আমাদের জানা উচিত শহরের রাস্তায় যারাই ঘুরে বেড়ায় তারা সবাই পথ শিশুর কাতারে পড়ে না। রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো ভাগ্য বঞ্চিত শিশুদের কয়েকভাবে ভাগ করা যায়। একটা অংশ তাদের বাবা-মায়ের সাথেই বিভিন্ন বস্তি ও রাস্তার পাশের ফুটপাথে থাকে। আরেকটা অংশ এতিম বা পরিবার কর্তৃক পরিত্যক্ত হওয়ায় অভিবাবকহীন রূপে রাস্তায়ই বড় হয়ে উঠে। বেশ কিছু শিশু-কিশোর রাগ, অভিমান এমনকি পারিবারিক নির্যাতন সইতে না পেরে শহরে এসে পথ শিশুর পরিচয় নেয়। পরিচয় যাই হোক নিম্নবিত্ত পরিবারের প্রায় সব শিশুই সুবিধাবঞ্ছিত বলা চলে।

দারিদ্রতার কারণে অনেক শিশুকে পরিবারে বাড়তি অর্থ এনে দিতে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। দেশে কর্মজীবী এমন শিশুর সংখ্যা এখন প্রায় ৭৯ লাখ। বর্তমানে গ্রামাঞ্চলে প্রায় ৬৪ লক্ষ শিশু শ্রমিক কাজ করছে। এদের মধ্যে আবার প্রায় ৪৫ লাখ শিশু অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সঙ্গে জড়িত। আর এর বাইরে গৃহশ্রমে নিয়োজিত আছে আরো প্রায় ৪ লাখ শিশু! এইসব অনাঙ্কাংখিত শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত মানসিক, শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। শিশু শ্রম নির্মূলে বাংলাদেশ সরকার আই.এল.ও এর কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মানব উন্নয়ন সূচকে ভালো করতে হলে শিশু শ্রম বন্ধ করা ছাড়া আমাদের অন্য কোনও পথ খোলা নেই।

প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি তাদের গুণগত মান নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে মনে করি। স্থানীয় সমস্যা মাথায় রেখে আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষন ম্যানুয়াল প্রস্ততকরন এবং এর মাধ্যমে শিক্ষকদের তৈরি করা এখন সময়ের দাবি। শিক্ষকরা যেন প্রতিটি শিশুর চাহিদা মোতাবেক পাঠদান করতে পারেন সে ব্যাপারে তাদের প্রশিক্ষিত করা দরকার। মনোযোগ ও পেশাদারিত্ব বাড়ানোর জন্য তাদের বেতন-ভাতাদির দিকে এখনই দৃষ্টিপাত করা জরুরি। শিক্ষকদেরও দেশের যেকোনো জায়গায় বিশেষ করে শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা হাওর ও পার্বত্য এলাকায় গিয়ে শিক্ষাদান করার ব্যাপারে উৎসাহী হতে হবে। ঝড়ে পড়া রোধে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহন করা দরকার। পাশাপাশি পথ শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিত করনে স্বেচ্ছাসেবী ও বেসরকারি সংস্থাগুলির সাথে সরকারের সমন্বয়ও প্রয়োজন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি এই ব্যাপারে সরকারী সহায়তা পেলে পরস্থিতিতির উন্নতি ঘটবে বলে মনে করি। সরকার কর্তৃক চালু সামাজিক নিরপত্তা কর্মসূচির কয়েকটিও যদি প্রাথমিক শিক্ষা ও শিশু পুষ্টির দিক বিবেচনা করে সৃজন করা হত তাইলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারত।

সরকার থেকে প্রায় সময় বলতে শোনা যায় যে, দেশী বিদেশী বেসরকারি সংস্থাগুলি অকারণে শিশু শ্রমিক ও পথ শিশুদের সংখ্যা ইচ্ছা করেই বাড়িয়ে বলছে। সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের কল্যানার্থে ও তাদের প্রকৃত অবস্থা জানতে সরকারী উদ্যোগে পরিপূর্ণ একটা জরিপ করা এখন সময়ের দাবি। এতে খুব সহজেই শিশু শ্রমিক, পথ শিশুর সংখ্যা এবং তাদের কল্যানে সঠিক সিন্ধান্ত নেয়া সহজ হবে। শিশু শ্রমিকের সংখ্যা কমিয়ে এনে তাদের শিক্ষা নিশ্চিত করতে, পথ শিশুদের অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে তাদের সাথে যোগাযোগ বাড়ানো ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই। শিশু শ্রমিকদের ঝুঁকিপূর্ণ ও মাদকসহ অন্যান্য বেআইনি কাজ হতে বিরত রাখতে সুবিন্যাস্ত আউটরিচ প্রোগ্রাম সৃজন করতে হবে। পথ শিশুদের প্রশিক্ষনের মাধ্যমে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতে হবে। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারলে পথ শিশুদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া অনেকটা সহজ ও সফল হবে। শিশু অপুষ্টি দূরীকরনে ২০০৩ সালে সরকার কর্তৃক ন্যাশনাল নিউট্রিশন প্রোগ্রাম হাতে নেয়া হয়েছিল যা ২০০৯ সালে এটি বন্ধ করে দেয়া হয়। বর্তমান সরকার কমিউনিটি ক্লিনিকের মত যুগান্তকারী উদ্যোগের পাশাপাশি যদি ন্যাশনাল নিউট্রিশন প্রোগ্রাম আবার চালু করার উদ্যোগ নিত তাইলে শিশুদের পুষ্টি অবস্থার প্রভূত উন্নতি হতে পারত।

দেশের ৪৫ ভাগই নাগরিকই যেখানে শিশু সেখানে তাদেরকে হিসাবের বাইরে রাখা আত্মহত্যার শামিল হবে। অন্তত সংখ্যার আধিক্যের কারনে হলেও তাদের সুষম বিকাশ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। জাতীয় অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার স্বার্থে দেশের সব শিশুর নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করা দরকার। চাই সঠিক নীতি প্রনয়ন, পরিকল্পনা, বাজেট বরাদ্দ এবং এই সবকিছুর যথাযথ বাস্তবায়ন।

[১] http://tinyurl.com/n38xzz4
[২] http://tinyurl.com/kdkzoud

সুনামগঞ্জ, ১৩ আগস্ট, ২০১৩
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×