somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের ভারতভীতি ও মেরুদণ্ডহীনতা

২৭ শে আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিষয়টা উস্কানির না, বিষয়টা মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াবার!

আপনারা তাইওয়ানের নাম শুনেছেন, চীনের সাথে লাগোয়া, চীনেরই অংশ একটি দেশ, যা নিজেদের পৃথক করেছে এবং নিজস্ব গভর্নমেন্ট করেছে! তাইওয়ানের মানচিত্র দেখবেন, চীনের তুলনায় কত ক্ষুদ্র! অথচ তারা নিজেদের চীনের কম্পিটিটর মনে করে! এবং চীনও তাদেরকে নিজেদের কম্পিটিটর বিবেচনা করে তোয়াজ করে!

আপনারা জাপানকে চেনেন, জাপানও চীনের তুলনায় ক্ষুদ্র! এবং এই জাপান চীনকে ইনভেইড করেছে, নির্যাতনও করেছে কয়েকবার, যা এখনও চাইনিজ মুভ্যিতে চাইনিজদের সরলতার প্রতি সফট কর্নার হিসেবে দেখানো হয়!

আপনারা অনেক কুস্তিতেই দেখবেন, দৈহিক আকৃতিতে বিশাল হলেই কুস্তিগির সর্বশক্তিমান, সবার সঙ্গেই জিতে যায় বা অপ্রতিরোধ্য হয় এমন নয়! বিরাট কুস্তিগিরের সাথে হ্যাংলা কুস্তিগির অনেক সময় জিতে যায়, কেন? তাইওয়ান, জাপানের মত ছোট্ট দেশ চীনের সাথে পারে, কেন পারে?

পারে কারণ ওই মেরুদণ্ড! তারা বিশ্বাস করে, আমরা পারব! তারা ছোট বলে আগেই নিজেকে সারেন্ডার করে বসে থাকেনি! বরং তারা উল্টো প্রতিরোধ করেছে, এবং তাই তারা পেরেছে।

আপনি সাইজে বড় না ছোট সেটা জরুরি না, আপনি কতটা শার্প সেটা জরুরি! এবং আপনি কথাবার্তায় আচার আচরণে শার্প হলে আপনার পথে ঘাঁটে উঠতে বসতে সবার সাথে মারামারি করারও দরকার হয় না অধিকার পেতে, আপনার শার্পনেস দেখে এমনিতেই মানুষ আপনাকে তোয়াজ করে প্রাপ্য সম্মানটুকু দেবে! আপনি কতটা সোজা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন, কতটা স্ট্রংলি কথা বলছেন- এটাই মুখ্য। আপনার গায়ে কতটুকু শক্তি আছে, সেটা মুখ্য না।

এই আপনি আগেই ভেবে রেখেছেন ভারতের সাথে আপনি পারবেন না! আপনার মাথায়ই গেঁথে আছে, আপনি ভারতের বগলের তলে, আপনি আগেই মাথায় সেট করে বসে আছেন, ভারত আপনাকে চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছে, আপনাকে একটা চাপ দিলেই আপনি সাগরে পড়ে যাচ্ছেন!

কখনও বিড়ালকে ইঁদুর ধরতে দেখেছেন? বা বিড়ালকে পাখি ধরতে দেখেছেন?
খেয়াল করে দেখবেন, ইঁদুরের সামনে বিড়াল এসে পড়লে ইঁদুর প্রথমেই নার্ভাস হয়ে যায়! না সে ফাইট করার চেষ্টা করে, না সে পালানোর চেষ্টা করে! ধরার আগেই একদম আধমরা হয়ে নিঃশ্বাস নিতে থাকে! পাখির বেলাতেও তাই, বিড়ালের থাবা এমন কিছু বড় না, অথচ একটা থাবা দিলেই পাখি নেতিয়ে যায়, সে দ্বিতীয়বার ওড়ার চেষ্টা করে না, ফাইট করার চেষ্টাও করে না, তার হার্ট ফেইল করে! অথচ সে আরেকটু ফাইট করলে হয়ত পারত, সে ফাইট করে না! তার মাথায় সেট হয়ে আছে, ও রে বাবা, ও তো বেড়াল!

একজন কুস্তিগির আপনাকে মারতে এলে আপনি প্রথমেই আত্মবিশ্বাস হারান, এবং আপনি মার খান। অথচ আপনি এটা ভাবতেই চান না কোন দিক দিয়ে তাকে একটা মারা যায়, বা তাকে কী করে কাবু করা যায়! এগুলো জাস্ট মাইন্ডসেট। মারামারি করাই লাগে না, আপনার চোখে যত ভয় ভর করে, আপনার অপোনেন্টের আত্মবিশ্বাস ততই বাড়ে, সে ততই সাহসী হয়ে ওঠে! আর আপনি বুক চিতিয়ে চোখে চোখ রেখে ঘুরে দাঁড়ালে আপনার অপোনেন্ট যতই শক্তিশালী হোক, সে সাধারণত প্রথমে তর্ক করার চেষ্টা করবে, আগেই হাত চালাবে না। এটা পৃথিবীর সবল বনাম দুর্বলের কমন সূত্র ভাই!

আপনি ভারতকে আজীবন ভয় পেয়ে এসেছেন, তার সঙ্গে চোখে চোখ রেখে বুক টান করে কথা বলে দেখেননি বলেই ভারত এত সাহস পেয়েছে! আমি বিশ্বাস করি, আমরা যত ছোটই হই, আমরা ঘুরে দাঁড়ালেই আগ্রাসন পেছাবে! শুধু আমি ভয় করি না এবং আমি পারব- এটুকু মানসিকতাই জরুরি! আপনি যখন মনে প্রাণে কিছু করবেন বলে স্থির করেই ফেলেন, তখন আর কোন কিছুতেই সেটা আটকায় না!

বড়াইবাড়ি ২০০১, ৩ বনাম ১৭৮ মনে আছে তো?
আপনি যে মোটেও দুর্বল না, বড়াইবাড়ির এই ঘটনাটাই তার ছোট্ট একটা ঝলক ছিল। আপনি সম্ভবত সে ইতিহাসও জানেন না! এতকিছু পড়ার পর আপনি যদি বলেন, উস্কানি দিয়েন না, আমরা ভারতের সাথে যুদ্ধে পারব না, তাহলে আপনি পোস্ট তো বোঝেনইনি, আপনার সময় নষ্টের খেসারত হিসেবে আপনাকে আবার এক লাইনে বলি, এই পোস্টে আপনাকে যুদ্ধ করতে বলা হয়নি, মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়িয়ে অধিকার চাইতে বলা হয়েছে! ভয় না পেতে বলা হয়েছে, আপনি ছোট হলেই যে দুর্বল হবেন, সেটা না ভাবতে বলা হয়েছে। ক্লিয়ার নাউ???
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পদযাত্রা যখন 'মার্চ টু গোপালগঞ্জ': ভাষা, অহংকার এবং রাজনৈতিক নির্বুদ্ধিতার ককটেল

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৭ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ২:০০


রাজনীতিতে সব জায়গা সমান নয়, কিছু জায়গা প্রতীকী - আর প্রতীক কখনোই নিরপেক্ষ থাকে না। গোপালগঞ্জ হলো তেমন একটি স্থান, যা শুধুমাত্র ভৌগোলিক নয়, বরং আওয়ামী লীগের ইতিহাস, আবেগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

গোপালগঞ্জের ঘটনায় জাতি আরেকদফা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১৭ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৮:২০

জুলাই গনঅভ্যূত্থানের বর্ষপুর্তিতে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া রাজনৈ্তিক দল এনসিপি জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসাবে গতকাল গোপালগঞ্জ যায়। গতকাল গোপালগঞ্জে দিনব্যপী সংঘর্ষের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ধরনের বক্তব্য দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

গোপালগঞ্জে এটা দরকার ছিল!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৮:৫৪


দফায় দফায় হামলা-সংঘর্ষ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অ্যাকশনে উত্তপ্ত গোপালগঞ্জ। হামলা-সংঘর্ষের সময় অন্তত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও অনেকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথমে জেলা শহরে ১৪৪ ধারা ও পরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

NCP'র গাড়ি বহর নিয়ে গোপালগঞ্জ পদ যাত্রা....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৭ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ১১:০৪

NCP'র গাড়ি বহর নিয়ে গোপালগঞ্জ পদ যাত্রা....

সার্বিক অর্থে NCP তাদের পূর্ব ঘোষিত জেলায় জেলায় পদযাত্রা সফর হিসেবে (NCP নেতা সার্জিসের ভাষায় রোড মার্চ টু গোপালগঞ্জ) গোপালগঞ্জে সফল হতে পারেনি স্থানীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

জঙ্গির ভুক

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৭ ই জুলাই, ২০২৫ দুপুর ২:৪৮


এই বার বুঝও রঙিন পাখির দল
জঙ্গি কারা- জঙ্গি কারা, বাঁচবে না
ঘর হারা- চিনেছে এই জলপাই
কিংবা আম কাঁঠাল পাঁকার গন্ধ-
শুনেছি ধুয়া তুলসীপাতার কথা;
তুলসী ভাষা এখন জঙ্গির আস্তানা
চলবে না আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×