somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা যা শুনেছি তারাবীহ্’তে - ১

১২ ই মে, ২০১৯ রাত ১০:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কুরআনের প্রথম সূরা ফাতিহার ফাতিহা শব্দটি মূলত এসেছে ফাতহূন শব্দ থেকে যার অর্থ হচ্ছে উন্মুক্তকরণ। এটিকে আল্লাহর তরফ থেকে বিশেষ উপহারও বলা হয়ে থাকে যেখানে পুরো সূরাহ জুড়ে আছে আল্লাহর প্রসংশা এবং আল্লাহর কাছে সরল পথের কামনার কথা। প্রশংসা এবং চাওয়া দিয়ে শুরু করা হয়েছে কুরআনের প্রথম সূরাতে। আর পুরো কুরআনেই তিনি প্রতিটি পথ বাতলে দিয়েছেন।

আলিফ লাম মীম দিয়ে শুরু করা হয়েছে সূরা আল বাকারা। আল্লাহ আল কুরআনের বিভিন্ন সূরায় এই ধরনের বিচ্ছিন্ন হরফ ব্যবহার করেছেন যার অর্থ শুধু মাত্র তিনিই জানেন। দ্বিতীয় আয়াতেই আল্লাহ বলছেন; এটি আল্লাহর কিতাব। এতে কোন সন্দেহ নেই; মুত্তাকীদের জন্য হিদায়েত। এই আয়াতে আল্লাহ ‘হূদা’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন অর্থাৎ সঠিক দিক নির্দেশনা।

আয়াত ৪-৫ এ চলে গেলে দেখবো; আল্লাহ বলছেন, এবং যারা ইমান আনে যা তোমার প্রতি নাজিল করা হয়েছে এবং যা তোমার পূর্বে নাজিল করা হয়েছে তৎপ্রতি আর আখিরাতের প্রতি ইয়াকিন রাখে। তারা তাদের রবের পক্ষ থেকে হিদায়াতের উপর রয়েছে এবং তারাই সফলকাম। এ আয়াতগুলোর সারমর্মের কথা বলতে গেলে - হিদায়াত লাভ করার ৬ টি পূর্ব শর্ত রয়েছে।

১.মুত্তাকি হতে হবে।
২.অহী কতৃক নির্দেশিত সব অদৃর্শে বিশ্বাস রাখা।
৩.সালাত কায়েম করা।
৪.আল্লাহর দেয়া রিজিক তার পথে ব্যয় করা।
৫.আসমানী কিতাবে ঈমান রাখা।
৬.আখিরাতের উপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখা।

১০ নং আয়াতে ব্যাখ্যায় আল্লাহ মুনাফিকদের জন্য যন্ত্রনাদায়ক আযাবের কথা বলেছেন। বলছেন- ‘তাদের অন্তরসমূহে রয়েছে ব্যাধি (কপটতা বা মুনাফিকীর কথা বলেছেন)। অতঃপর আল্লাহ তাদের ব্যাধি বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব। কারণ তারা মিথ্যা বলত। আল্লাহ কপটদেরকে তাৎক্ষনিক শাস্তি দেননা- এটি তার নিয়মনা। বরং তিনি তাদের সুযোগ দেন। তাদের ভন্ডামীর পাল্লা ভারি হয়- এবং রোগ বাড়তে থাকে।

আয়াত নং ৪৫ গেলে দেখবো আল্লাহ বলেছেন- ‘তোমরা ধৈর্য্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাও। আর নিশ্চয়ই এই কাজ বিনয়ী এবং খোদাভীরু ছাড়া অন্যদের জন্য কঠিন’। মানবজীবনের সবচেয়ে বড় বিষয়টি হচ্ছে দৃঢ়তা এবং অবিচল থাকা। যেখানে আমরা বরাবরের মতই নিজেদের ব্যর্থ রাখি।
তাই রাসূল সা. ধৈর্য সম্পর্কে বলছেন- ধৈর্য্য তিন ধরনের। বিপদ আপদের সময়; পাপ কাজের ব্যাপারে এবং আল্লাহর নির্দেশ এবং ইবাদাতে ধৈর্য্য।

৪৮ নং আয়াতে বলছেন- ‘সেদিনের ভয় কর; যখন কেউ কারো উপকারে আসবেনা এবং কোন সুপারিশ কবুল করা হবেনা; কারো কাছ থেকে ক্ষতিপূরণও নেয়া হবেনা এবং তারা কোনরকম সাহায্য ও পাবেনা। স্পষ্টত পরকাল সম্পর্কে বলা হয়েছে।

৫২ নং এ ক্ষমা করার কথাও বলা হয়েছে- ‘ঐই বড় অপরাধের পর ও আমি তোমাদের ক্ষমা করেছি যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।’ আল্লাহ সবাইকে সুযোগ দেন অনুশোচনা এবং তাওবা করার। তোমাদের বলতে এখানে বনি ইজরাইলের শিরকের মত বড় অপরাধ ক্ষমা করেছিলেন।

আয়াত ৪৮-৫২ এই আয়াতগুলোর ছোট্ট শিক্ষা হচ্ছে; পরকালের কথা মাথায় রাখতে হবে। আল্লাহ সবাইকে ক্ষমা করেন যদি যে অনুশোচনা করে।

৬২ নং আয়াতে আল্লাহ বলছেন; ‘যারা ঈমান এনেছে; ইহুদী; খ্রিষ্টান ও সাবেঈনদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে তাদের জন্য আছে পুরষ্কার ও তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিত হবেনা।

সীমা লংগনকারীদের ব্যাপারে আল্লাহ ৬৫-৬৬ নং আয়াতে বলছেন- তোমাদের ভিতর যারা সীমা লঙ্গন করেছিল তাদের পরিনতি তোমরা নিশ্চিতভাবে জানো। আমি তাদের বলেছিলাম- অধম বানর হয়ে যাও। আমি এটা তাদের সমসাময়িক ও পরবর্তীগণের এবং সাবধানীদের জন্য উপদেশ স্বরুপ করেছি।’

৭০-৭৪ আয়াতগুলোর অর্থগুলো দেখলেই আমরা বুঝব- আল্লাহর নির্দেশ এড়ানোর জন্য ছলচাতুরির আশ্রয়; একঘুঁয়েমি কোনভাবেই ঠিক নয়। এবং তিনি আমাদের প্রকাশ্যে এবং গোপন সব কাজের ব্যাপারে অবগত।

৮১-৮২ নং আয়াতের দিকে তাকালে দেখবো আল্লাহ স্পষ্টত বলছেন- ‘যে পাপ কাজ করে এবং পাপ তাকে পরিবেষ্টন করে ফেলেছে; তারাই আগুনের অধিবাসী; সেখানেই তারা স্থায়ী হবে। আর যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে তারা জান্নাতী এবং সেখানে চিরদিন থাকবে।’

(এই পর্বে বাকারার ১-১০০ আয়াত পর্যন্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ আয়াত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। উপরোক্ত লেখায় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আয়াত এর ছোট্ট কিছু ব্যাখ্যা আছে যেখানে আল্লাহ আমাদের মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। বিভিন্ন ইসলামিক সাইট; কুরআন এবং বই থেকে ব্যাখ্যাগুলো উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। লিখাটি ১০ পর্বের। যতটুকু পারি পুরো পর্ব শেষ করার চেষ্টা করব।)

সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০১৯ রাত ১০:২৫
১১টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×